নিউজ ডেস্ক: ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর দেশের অর্থনীতির ইতিহাসে একটি বিশেষ দিন। এই দিনে রাত আটটায় আচমকাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের ঘোষণা করেন। নগদ, কালো টাকায় রাশ টানতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানান তিনি। এছাড়াও জঙ্গি সংগঠনের আর্থিক সহযোগিতার গোড়ায় আঘাত করতেও এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মধ্যরাত থেকে তা কার্যকর করা হয়। নোট বাতিলের ঘোষণার ফলে দীর্ঘদিন ধরে বিশৃঙ্খলার পরিবেশ দেখা যায় দেশজুড়ে। মৃত্যু হয় প্রায় ১৫০ জনের। সেই ঘটনার পর পার হয়েছে ৬ বছর। বর্তমানে প্রশ্ন উঠেছে, এই নোটবন্দি কতটা সফল? কতটা উন্নতি হয়েছে অর্থব্যবস্থার?
কালো টাকা নির্মূল করা, জাল নোট নির্মূল করা এবং একটি ‘কম নগদ’ অর্থনীতি তৈরি করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৫০ দিন সময় চেয়েছিলেন দেশবাসীর কাছে। ৫০ দিনে পরিস্থিতির উন্নতি তো হয়নি, উল্টে দেশজুড়ে অরাজকতা দেখা গেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, ৩ টি মাপকাঠির ৩ টিতেই সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে মোদির বিজেপি। আরবিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, ৯৯ শতাংশ নোটই ব্যাঙ্কিং সিস্টেমে ফিরে এসেছে। ফলে কালো টাকা ও জাল নোট নির্মূলের পরিকল্পনা সফল হয়নি।
আরও পড়ুন : Total Lunar Eclipse: ২০২২ সালের শেষ চন্দ্রগ্রহণ, কখন দেখা যাবে ? জেনে নিন
অন্যদিকে, নোট বাতিলের পর থেকে এখনও পর্যন্ত দেশে নগদ প্রচলন ৭১.৮৪ শতাংশ বেড়েছে। ফলে ‘কম নগদ’ অর্থনীতি তৈরি করার লক্ষ্যও পূরণ হয়নি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ২১ অক্টোবর পর্যন্ত ৩০.৮৮ লক্ষ কোটি নগদ টাকার প্রচলন রয়েছে দেশে। ২০১৬ সালের ৪ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে এই নগদ টাকার পরিমাণ ছিল ১৭.৭ লক্ষ কোটি টাকা। অর্থাৎ, ডিজিটাল পেমেন্টের থেকেও এখনও নগদ টাকাই বেশি ব্যবহার করছে সাধারণ মানুষ।
নোটবন্দির সিদ্ধান্ত বাস্তবে কতটা অর্থব্যবস্থার উন্নতি করেছে তা নিয়ে বিতর্ক হলেও, এটা স্পষ্ট যে এই সিদ্ধান্ত আরও বেশি খরচের বোঝা চাপিয়েছে দেশের অর্থনীতির ওপর। পুরোনো নোট বাতিলের পর নতুন নোট ছাপানোর খরচ হয় প্রায় ২১০০০ কোটি টাকা। অর্থনীতিবিদ নির্মাল্য মুখোপাধ্যায় UNLive-কে জানিয়েছেন, ভোটের আগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে যে উদ্দেশ্য পূরণ করা হয়েছিল, তা একেবারেই সফল নয়। আর সাধারণ মানুষের উপকার কোনোভাবেই হয়নি। যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল সেখানেই রয়েছে বা বলা যায় বর্তমানে আরও খারাপের দিকে এগিয়েছে পরিস্থিতি। মুদ্রা ভান্ডার ক্রমশ কমছে। এই সিদ্ধান্তের ভালো দিক হিসেবে বলা যায়, ডিজিটাল ইন্ডিয়ার পথে একধাপ এগিয়েছে দেশ।
আরও পড়ুন : লালকৃষ্ণ আদবানির জন্মদিন, শুভেচ্ছা জানাতে প্রবীণ নেতার বাড়িতে উপস্থিত মোদি