দীপঙ্কর গুহ: বয়স তাঁর ৩৬ বছর। খুব বেশি বিতর্কে থাকেন না। ফুটবল আর তাঁর পরিবার নিয়েই খুশি থাকতে চান। লিয়নেল মেসি অতি গুরুত্বপূর্ণ গ্রুপ ম্যাচেও ম্যাচের সেরা হচ্ছেন। গোল করেছেন। করাচ্ছেন। খবরের শিরোনামে সবসময়। এবারের বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ হেরেছিল তাঁর দল। দ্বিতীয় ম্যাচে নায়কের মতো মাঠে রাজ করেছেন। দল জিতে আবার এক স্বপ্ন ছোঁয়ার দৌড় শুরু করেছে।
সামনে আসছে মেসি ম্যাজিক নিয়ে নানান রহস্যময় তথ্য। আর্জেন্টিনা দলের অনুশীলনে কোচকে নিজের বুট জোড়া দেখাচ্ছিলেন মেসি – এই ছবি ভাইরাল হয়েছিল।
এবার কাতারে মেসির পায়ে দেখা যাচ্ছে সোনালি রঙের বুট। এবারের আসরে মেসির পারফরম্যান্স ছাড়াও মেসি ফ্যানদের তাই নজর তাঁর সেই একজোড়া বুটে।
এই বিশেষ বুট নিয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে তাঁর গিয়ার স্পনসর অ্যাডিডাস কোম্পানির ওয়েব সাইটে দেখতে হল। সেখানে তো বিশাল প্রচার এই বুটের!
বুট দুটি নাকি বিশেষভাবে শুধু মেসির জন্যই বানানো হয়েছে। যার নাম রাখা হয়েছে ‘অ্যাডিডাস এক্স মেসি ২০২২ ওয়ার্ল্ড কাপ স্পিডপোর্টাল বুটস’। এই বুটের বেশ কিছু বিশেষত্ব রয়েছে। ডান পায়ের বুটটিতে লেখা রয়েছে ‘থিয়াগো ০২-১১-১২ ও মাতেয়ো ১১-০৯-১৫‘। এটা নাকি ছিল মেসির আবদার। কারণ কী? এই দুটি লেখা মানে, দুটি দিন। মেসির দুই ছেলের জন্মদিন।
আর বাম পায়ের বুটে লেখা রয়েছে, মেসির ছোট ছেলে সিরোর জন্মতারিখ। ১০ মার্চ ২০১৮। সঙ্গে স্ত্রী আন্তোনেল্লার নামে। যার সংক্ষিপ্ত নাম ‘আন্তো’।
মেসি যে পরিবার অন্ত প্রাণ, সে প্রমাণ বারবার পাওয়া গেছে। বার্সেলোনার বিবাদ পর্বেও পরিবারের দিকে চেয়ে অনেক পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন মেসি। তারপর কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর , ট্রফি জিতে – মাঠে বসেই তিন ছেলে আর স্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কোলে আনন্দ ভাগ করে নেওয়া। এসব বিরল দৃশ্য।
মেসির বড় ছেলে থিয়াগোর জন্ম ২০১২ সালের ২ নভেম্বর। মেজো ছেলে মাতেয়োর জন্ম ২০১৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। সকলেই জানেন, মেসি নিজেও বলে ফেলেছেন – এটাই হয়তো তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। তাই গোটা পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে খেলতে নামছেন মেসি।
আরও আছে। দুটি বুটেই লেখা আছে মেসির জার্সি নম্বর। নম্বর টেন (১০)। রয়েছে আর্জেন্টিনার জাতীয় পতাকার নীল-সাদা রংয়ের স্ট্রাইপ। প্রস্তুতকারী সংস্থার লোগো তো আছে। আছে মেসির নিজস্ব ব্র্যান্ডের লোগো।
নানান পরীক্ষা নিরীক্ষার পর পুরোপুরি সোনালি রঙের এই দুটি বুটেতে নাকি ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিও। এই বুটে ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ ধরনের স্টাড , যাতে মেসি স্বাভাবিকের থেকে আরও দ্রুত গতিতে দৌড়াতে পারেন ব্যালান্স ঠিক রেখে।
মেসি দ্রুত গতিতে দৌড়ানোর সময় কোনো সমস্যা হবে না। পা নাকি আটকে যাবে না মাটি বা ঘাসের মধ্যে! তাছাড়া বল নিয়ন্ত্রণ নিতে নিমেষের মধ্যে এক পাশ থেকে অন্য পাশে ঘুরতে গেলেও শরীরের ব্যালান্স ধরে রাখতে সাহায্য করবে বুটের স্টাডগুলো।
মেসির এই বিশেষ বুটের কথা জানানো হয়েছে অ্যাডিডাসের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটেও। সেখানে লেখা হয়েছে, মেসি তার চূড়ান্ত জয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছেন। এক্স স্পিডপোর্টাল বুটগুলোও মেসির সব সাফল্যের সঙ্গে যুক্ত।
ছবি: সৌ-টুইটার।