রাহুল কেন ‘গান্ধী’ পদবী ব্যবহার করেন

কংগ্রেস নেতা রাহুলের ‘গান্ধী’ পদবী নিয়ে কটাক্ষ করে ছিলেন দেসের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সেই কটাক্ষেরই জবাব দিয়েছেন রাহুল। রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণের প্রেক্ষিতে ধন্যবাদ প্রস্তাবের জবাবে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছিলেন, ‘আমরা যদি কোথাও নেহরুকে উল্লেখ করতে না পারি, তারা বিরক্ত হয়। নেহেরু এত মহান ব্যক্তি ছিলেন, তাহলে তাঁদের কেউ নেহেরু উপাধি ব্যবহার করেন না কেন? নেহেরুর নাম ব্যবহার করতে লজ্জা কীসের?’

জওহরলাল নেহেরুকে টেনে গান্ধি পরিবার ও রাহুলকে কটাক্ষের পাল্টা জবাব দিয়েছেন রাহুল। তিনি বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে কিছু প্রশ্ন করেছি। আমি তাঁকে মিস্টার আদানির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি। আমি জিজ্ঞাসা করেছি, মিস্টার আদানি কীভাবে এত দ্রুত বেড়ে উঠলেন? প্রধানমন্ত্রী একটিও প্রশ্নের উত্তর দেননি। আমার প্রশ্নের জবাবে তাঁর উত্তর ছিল, আপনাকে কেন নেহেরু বলা হয় না, কেন গান্ধী বলা হয়? কারণ, ভারতে সাধারণত হয়তো মিস্টার মোদি এটা বোঝেন না। কিন্তু ভারতে সাধারণত আমাদের উপাধি আমাদের বাবার উপাধি। রাহুল গান্ধীর নামে ‘গান্ধী’ এসেছে ফিরোজ গান্ধী, তাঁর পিতামহ, স্বাধীনতা সংগ্রামী, সাংবাদিক এবং রায়বরেলির সাংসদ সদস্যর থেকে। ১৯৬০ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর ৪৮ বছর পূর্ণ হওয়ার কয়েক দিন আগে।’

ফিরোজ গান্ধী বা ফিরোজ জাহাঙ্গির গান্ধীর জন্ম ১২ সেপ্টেম্বর, ১৯১২ সালে বম্বেতে। তাঁর মা-বাবা, রতিমাই এবং জাহাঙ্গির ফরিদুন গান্ধী ছিলেন পার্সি। জাহাঙ্গির একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেছেন। ফিরোজ তাঁর বাবা মারা যাওয়ার পর এলাহাবাদে চলে আসেন। তখন থেকে লেডি ডাফরিন হাসপাতালের সার্জেন তাঁর আত্মীয় শিরিন কমিসারিয়েটের সাথে থাকতেন। ফিরোজ ছিলেন ইউইং ক্রিশ্চিয়ান কলেজের ছাত্র।

জওহরলাল নেহরুর স্ত্রী কমলা নেহেরু ছিলেন ফিরোজের শাশুড়ি। ইউইং ক্রিশ্চিয়ান কলেজের বাইরে পিকেটিং করা সত্যাগ্রহীদের মধ্যে তিনি ছিলেন। গরমে ও ভিড়ের মধ্যে কমলা অজ্ঞান হয়ে গেলে, ফিরোজ তাঁকে সাহায্যে করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তার জেরে, ফিরোজ ব্রিটিশ-স্টাফ কলেজ থেকে বাদ পড়েন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে জড়িয়ে পড়েন। নেহেরু পরিবারের বাড়ি এবং গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কেন্দ্র আনন্দ ভবনে তিনি দীর্ঘসময় কাটান।

ফিরোজ প্রথমে জওহরলাল নেহরুর কন্যা পাঁচ বছরের ছোট ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনির সংস্পর্শে এসেছিলেন। তখন ইন্দিরার বয়স ১৬ বছর। ইন্দিরা ছোট বলে কমলা নেহেরু আপত্তি জানিয়েছিলেন।