ইউ এন লাইভ নিউজ: রাজ্য জুড়ে কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। রাজ্য সরকারের তরফে আলোচনার কোনও রকম ইঙ্গিত না মেলায় এমন সিদ্ধান্ত আলু ব্যবসায়ী সমিতির। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের বাজারগুলিতে বুধবার থেকে আলুর সঙ্কট আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
রবিবার থেকে রাজ্য জুড়ে একনাগাড়ে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। ভিন্রাজ্যে আলু রফতানির ক্ষেত্রে রাজ্যের সীমানাগুলিতে প্রশাসনিক ভাবে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদেই এই কর্মবিরতি। ফলত রাজ্যের হাতে গোনা দু’-একটি ছাড়া অধিকাংশ হিমঘর থেকে আলু বার করছেন না ব্যবসায়ীরা। যার জেরে মঙ্গলবার থেকেই বাজারে আলুর জোগানের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। রাজ্যে প্রায় ৫০০ কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে যেখানে প্রায় ৬৭ শতাংশ আলু মজুত রয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে ৯৪টি। অর্থনীতির ভাষায় চাহিদা বাড়লে মূল্য কমে এবং চাহিদা কমলে মূল্য বাড়ে কিন্তু এক্ষেত্রে চাহিদা থাকলেও জোগান শূন্যে নেমে আসায় ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে খোলা বাজারে আলুর দাম।
বিভিন্ন বাজারে আলুর দাম কিলো প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। কর্মবিরতির ৪৮ ঘণ্টা পর পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য নেতৃত্ব বাঁকুড়ার জয়পুরের একটি বেসরকারি হোটেলে বৈঠকে বসেন। বৈঠকের পর তারা স্পষ্টতই জানিয়ে দেন, রাজ্য সরকার আলোচনায় বসে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী না হওয়ায় প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির কর্মবিরতি চলতে থাকবে। ওই সমিতির রাজ্য সভাপতি জগৎবন্ধু মণ্ডল বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সমস্ত দফতরে আমাদের কর্মবিরতির দাবি সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সরকারের তরফে এখনও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কোনও আহ্বান আমরা পাইনি। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য জুড়ে শুরু হওয়া আমাদের কর্মবিরতি চলতে থাকবে।’’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘এই কর্মবিরতির জন্য শুধু সাধারণ মানুষই সমস্যায় পড়বেন এমন নয়। আমাদেরও ব্যবসারও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু, এই কর্মবিরতি করতে আমরা বাধ্য হচ্ছি।’’
ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারের অবস্থান ও কর্মবিরতি চলাকালীন রাজ্যে আলুবাজারের পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার হগলির আরামবাগে আবার পর্যালোচনা বৈঠকে বসবে সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্ব। আলু ব্যবসায়ী সমিতির শালবনি ইউনিটের সভাপতি তথা রাজ্য কমিটির সদস্য নবকুমার ভুঁইয়া বলেন, ‘‘আজ (মঙ্গলবার) বাঁকুড়া জেলার একটি গেস্ট হাউসে মিটিংয়ে বসা হয়েছিল। সেখানে প্রায় ১৩০ জন উপস্থিত ছিলেন। রাজ্য সরকার আন্দোলন তুলে নেওয়ার পর আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু সংগঠন চেয়েছে আগে আলোচনা। তার পরে আন্দোলন প্রত্যাহারের বিষয়। আজ (মঙ্গলবার) কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যায়নি। বুধবার আবার মিটিং হবে।’’ তিনি জানিয়েছেন মঙ্গলবার ধর্মঘটের কারণে আলু বের করা হয়নি স্টোর থেকে।
Leave a Reply