ইউ এন লাইভ নিউজ: আমিও নামব রাস্তায়। আমার ঘরেও মেয়ে আছে নাতনি আছে। তৃণমূল সাংসদের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ঘিরে শোরগোল। অনেকেই বলছেন আইওয়াশ আবার অনেকেই বলছেন পিঠ বাঁচানোর চেষ্টা। আরজি কর ঘটনার পর মেয়েদের সম্মান রক্ষার লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত মেয়েদেরই যে রাস্তায় নামতে হচ্ছে সেটা এক প্রকার মেনে নিল শাসক দলও। আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে নির্মম ভাবে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়। তাতে পুলিশের তদন্তে একাধিক গলদের অভিযোগ তলে হাইকোর্ট, সেই তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে সিবিআইকে। কিন্তু এখনও আসল অপরাধী অধরা বলেই মনে করছেন অনেক চিকিৎসক। গতকাল চেস্ট মেডিসিন বিভাগের প্রধান সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এখনও প্রধান অপরাধী কি ধরা পড়েছে। তারপরেই পুলিশের তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ আরও গাঢ় হতে শুরু করে।
পুলিশ কেবল অস্বাভাবিক মত্যুর অভিযোগ দায়ের করে প্রথমে তদন্ত শুরু করেছিল। তাঁদের চিকিৎসকের দেহ দেখে কি একবারের জন্যও মনে হয়নি ধর্ষণ হয়েছে। প্রশ্ন তুলেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। যে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে পুলিশ গ্রেফতার করেছে সে যে একা এই কর্মকাণ্ড করেনি তা ফরেন্সিক রিপোর্টেই স্পষ্ট। এমনকী ময়নাতদন্তের রিপোর্টে যেসব আঘাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং মৃত চিকিৎসকের গোপনাঙ্কে যে পরিমাণ ফ্লুইড পাওয়া গিয়েছে তা একজনের হতে পারে না। পুরোটাই সংগঠিত অপরাধ। এবং সেটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন হাসপাতালের অধ্যক্ষ ও পুলিশ যৌথভাবে। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তভার নিয়েছে। ইতিমধ্যেই কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন সিবিআইয়ের বিশেষ ফরেন্সিক দল। তাঁরা ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের কাছ থেকে সব নথি সংগ্রহ করেছে। ধৃত সঞ্জয় রায়কেও বুধবার হেফাজতে নেবে তারা। সেকারণে সঞ্জয় রায়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে এসএসকেএম হাসপাতালে। বুধবার অর্থাৎ ১৪ আগস্ট রাজ্যজুড়ে ৮ ঘণ্টার কর্মবিরতীর ডাক দিয়েছেন চিকিৎসকরা। সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালে বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত আউটডোর পরিষেবা বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
কিন্তু কেবল কিএই প্রতিবাদে কাজ হচ্ছে। কামদুনি থেকে শুরু করে আরজি কর সব জায়গায় বারবার মেয়েদের উপর এই নির্মম অত্যাচার নারকীয় প্রবৃত্তি কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই বুধবার রাত ১১টা থেকে সারা শহরের রাস্তার দখল নেবে মেয়েরা। এই রাতের শহর, রাতের পাড়া, রাতের গ্রামে চলার অধিকার মেয়েদেরও আছে। কারণ মেয়েরাও এই সমাজের, এই দেশের এবং এই প্রকৃতির একটি অংশ। এই আন্দোলনে সামিল হতে চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। তিনি বলেছেন, ‘আমারও মেয়ে আছে নাতনি আছে। এই প্রতিবাদের সমর্থন করি আমি। আমার মেয়ে-নাতনির মতো বাংলার অসংখ্য মেয়েদের পাশে দাঁড়াতে চাই। তাঁদের আন্দোলনে সামিল হতে চাই।’ কলকাতা শহরের যাদবপুর, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে আরজিক হাসপাতাল চত্ত্বর এমন কি পাড়ায় পাড়ায় পর্যন্ত মহিলাদের জমায়েতের বার্তা দেওয়া হয়েছে। কোনও রকম রাজনৈতিক পতাকা নয়। মেয়েদের নিরাপত্তার স্বার্থে মেয়েরাই নামবে রাস্তায়। মাঝ রাতে শহর থেকে গ্রামের দখল নেবে মেয়েরাই।
Leave a Reply