নিউজ ডেস্ক: কাশ্মীর ঘুরতে গিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় বরফ, বরফের চাদরে মোড়া গুলমার্গ, পাহেলগাওঁ-র রাস্তার দুপাশের আপেল বাগান, সোনমার্গের ঝর্ণা থেকে সকলের প্রিয় ডাল লেকের শিকারা। ভূস্বর্গের শেষ না হওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে এবার আপনিও দেখতে পাবেন মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা। বড় পর্দায় সিনেমা দেখা আর পপকর্ন খাওয়ার সেই উত্তেজনা এবার কাশ্মীরে উপভোগ করবেন সকল ভারতীয়।
৩০ বছরের অপেক্ষার অবসান। শ্রীনগরের খুলেছে কাশ্মীরে প্রথম মাল্টিপ্লেক্স। সন্ত্রাসের চোখ রাঙানি উড়িয়ে প্রায় তিন দশক পর আবারও দল বেঁধে হল ভরানোর সুযোগ পাবেন কাশ্মীরবাসী।
১৮ সেপ্টেম্বর, রবিবার জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা দুটি মাল্টিপ্লেক্সের উদ্বোধন করেছেন। মঙ্গলবার অর্থাৎ ২০ সেপ্টেম্বর সেই হলে দেখানো হবে প্রথম সিনেমা। রবিবার এই উদ্বোধন অনুষ্ঠান দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে জড়ো হয় মানুষের ভিড়।
রবিবার পুলওয়ামা এবং সোপিয়ানে দু’টি মাল্টিপ্লেক্সের উদ্বোধন হয়। লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা টুইট করে বলেন, “জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য এক ঐতিহাসিক দিন। পুলওয়ামা এবং সোপিয়ানে দু-দুটি সিনেমা হল উদ্বোধন করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কর্মী হিসাবে নিয়োগ করার কথাও ভাবা হচ্ছে। যাতে তারা বেকারত্বের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।’’ প্রথমদিন আমির খানের ‘লাল সিং চাড্ডা’র একটি স্পেশ্যাল স্ক্রিনিং-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে, এও জানান লেফটেন্যান্ট গভর্নর।
এই সিনেমা হলগুলি সোপিয়ান এবং পুলওয়ামার মানুষ ও যুব সম্প্রদায়কে উৎসর্গ করা হয়েছে। হলটিতে তিনটি অডিটোরিয়াম এবং সব মিলিয়ে প্রায় ৫০০ মানুষের বসার জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রজেক্ট চেয়ারম্যান বিজয় ধর বলেন,”আমরা মাল্টিপ্লেক্সটিকে আমাদের কাশ্মীরি ঐতিহ্যের আদলে সাজানোর চেষ্টা করেছি। এবং স্থানীয় এলাকার বিভিন্ন খাবার এইখানকার ফুড কোর্টে রাখার ব্যবস্থা করছি।”
একটি সরকারি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়, ডোডা, রাজৌরি, পুঞ্চ, কিশতওয়ার এবং রিয়াসির সিনেমা হলগুলিও শীঘ্রই উদ্বোধন করা হবে।
১৯৮০ দশকের শেষ পর্যন্ত উপত্যকায় প্রায় এক ডজন সিনেমা হল চালু থাকার সত্ত্বেও বন্ধ হয় বড়পর্দার বিনোদন। হল মালিকরা কিছু সন্ত্রাস গোষ্ঠীর হুমকি পেয়ে সিনেমা হল বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: ভূস্বর্গ’-এর ‘চেনাব সেতু’, মেঘের উপরে থাকা বিশ্বের উচ্চতম সেতু
১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে বেশকিছু প্রেক্ষাগৃহ পুনরায় চালু করার চেষ্টা করা হয়েছিল, তবে জঙ্গিরা ১৯৯৯ সালে সেপ্টেম্বরে লাল চকের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত রিগাল সিনেমায় ভয়ানক গ্রেনেড হামলা চালায়। ফলে বড়পর্দায় সিনেমা তখনকার মত বন্ধ করতে বাধ্য হয় প্রশাসন।
পাশাপাশি, উঠছে নিরাপত্তা জোরদার করারও দাবি। সিনেমা হলের নিরাপত্তার বিষয়টি যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে, এমনটাই জানিয়েছে শ্রীনগর পুলিশ।
Leave a Reply