স্পোর্টস ডেস্ক: শেষ জিম্বাবোয়ে সফর। ভারতের ‘ বি ‘ টিমের জয় ৩-০ ম্যাচে। প্রতিপক্ষ দুর্বল। প্রথম দুটি ম্যাচ রান তাড়া করে জিতেছিল কে এল রাহুল – ভি ভি এ লক্ষ্মণের দল। প্রথমটা ১০ উইকেটে। আর পরেরটা – ৫ উইকেটে। আর শেষটিতে জয় ১৩ রানে।
এবার মিশন এশিয়া কাপ। ২৮ আগস্ট ভারত – পাকিস্তান মুখোমুখি। মঙ্গলবার আরব দেশে পাড়ি দেবেন রোহিত – কোহলিরা। কিন্তু তার আগেই ছড়িয়ে পড়লো বার্তা। সেই দলের হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড় কোভিড আক্রান্ত। দলের সঙ্গে আপাতত যাচ্ছেন না। তাঁর বদলে দলের সঙ্গে আবার এশিয়া কাপে হেড কোচ হয়ে যাবেন ভিভিএস লক্ষ্মণ। এসবই নানান সূত্রের খবর। বিসিসিআই এখনও সরকারী ঘোষণা করেনি। তাই নিশ্চিত হওয়া কাছে না, রাহুলের যাওয়া – না যাওয়া।
ভারতের ২৮৯ রান তাড়া করে ম্যাচটি প্রায় কেড়েই নিয়েছিল জিম্বাবোয়ে। সিকান্দার রাজা বোলারদের নিয়ে ১১৬ রানের সেঞ্চুরি সাজিয়েও, দলকে জেতাতে পারেননি। তাঁর ক্যাচটি দক্ষতার সঙ্গে ধরে নেন শুভমান গিল। আর এই গিলই সাবলীল ভঙ্গিতে ব্যাটিং করে ৯৭ বলে ১৩০ রানের ইনিংসটি খেলে ম্যাচের সেরা হলেন, তাঁর দল জেতায়। রাজা জেতাতে পারলে তিনিই দিনের নায়ক হতেন। এই সিরিজটি ঝাঁঝালো মেজাজে খেলে সিরিজ সেরা হলেন গিল। টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে জাতীয় নির্বাচকদের উপর চাপ বাড়িয়ে রাখলেন।
জিম্বাবোয়ে যে দাপটে ব্যাট করে, রান তাড়া করলো – তাতে ভারতীয় বোলিং নিয়ে চিন্তা বাড়িয়ে গেল। বুমরা চোটের জন্য এশিয়া কাপে নেই। এশিয়া কাপ টি টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট এবারও। তাই আর দলে নেই মহম্মদ শামি। যা
বিস্ময়কর। বাংলার বঞ্চনা চলছেই। সকলে নীরব! এই যে জিম্বাবোয়েতে নিয়ে যাওয়া হল, বাংলার অলরাউণ্ডার শাহবাজ আহমেদকে শুধু দল ভারী করতে? দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় যখন হয়ে গেছে, তখন কেন দলের বাকিদের সুযোগ একটা ম্যাচে দেওয়া হল না! যে বোলারদের বিপক্ষে জিম্বাবোয়ে ২৭৬ রান তুলে নেয়, সেখানে শাহবাজ আর কি খারাপ বল করতেন? বরঞ্চ অক্ষরের চেয়ে ভালো ব্যাট তো করেন – এটা ভারতীয় ক্রিকেট সার্কিট জানে। ভিভিএস লক্ষ্মণ এই দলের কোচ হয়ে গিয়েছিলেন। উনি তো জানেন, ব্যাট হাতে শাহবাজ কতটা দক্ষ। তিনি এতদিন বাংলা দলের ব্যাটিং পরামর্শদাতা ছিলেন। তবুও বসে বসে ঘাস ছিঁড়ে ফিরতে হচ্ছে শাহবাজকে।
নির্বাচকরা বলবেন, সামনে ইন্ডিয়া এ দলের ম্যাচ – শাহবাজ খেলবেন। আশায় রইল বাংলা। আর তাঁর মেন্টর বাংলার প্রাক্তন ক্রিকেটার ধর্মেন্দ্র সিং এমন আশা নিয়েই দিন গুনবেন।
যাক গে , সে সব কথা। নেতা রাহুল দল নিয়ে মাঠে ফিরলেন। এই সিরিজে টস জয়ের হ্যাটট্রিক করেন কে এল। নিজের ব্যাটে রান কোথায়! এখনকি ভারতের নেতা হলেই, ব্যাট থেকে রান শুকিয়ে যায়! বিরাট, রোহিতের সঙ্গে একই হাল – রাহুলের! ভারতের ইনিংসে ৮ উইকেট চলে যায়। আর দাপুটে শুবমান গিলের ১৩০ রানের ইনিংস সরিয়ে নিলে দেখা যাবে বাকিদের ( সাত ব্যাটারের) মোট সংগ্রহ: ১৫৯ রান! ভাববার বিষয় অবশ্যই।
এই যে জিম্বাবোয়ের সিকান্দার রাজা। ওয়ানডেতে নিজের শেষ ছয় ইনিংসে এ নিয়ে তিনটি সেঞ্চুরি করে ফেললেন রাজা।
রাজাকে ঘিরে চলছিল, এই ম্যাচ জেতার লড়াই। ৪৯ তম ওভারে রাজা আউট হওয়ার পর ৮ বলে ১৫ রান দরকার ছিল জিম্বাবোয়ের। পারেনি শেষ রক্ষা করে ম্যাচটা জিতে ফিরতে।
টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে সকালের ভারী কন্ডিশনে শুরুতে একটু সমস্যা হয়েছে ওপেনিং জুটি। ভারতের অধিনায়ক ও ওপেনার লোকেশ রাহুলের। চোট থেকে ফিরে এখনো নিজের ছন্দটাই ফিরিয়ে আনতে পারেননি। ব্র্যাড ইভান্সের বলে ফেরেন ৪৬ বলে ৩০ রান করে। এত বল, আর এই রান! অন্যদিকে সঙ্গী ধাওয়ানের শুরুটা আক্রমণাত্মক হলেও রিচার্ড এনগারাভা ও ভিক্টর নিয়াউচির আঁটসাট বোলিংয়ে সুবিধা করতে পারেননি । ১৭ রানের মাথায় জীবন পেয়েও ইনিংস বেশী দূর টেনে নিয়ে যেতে পারেননি। আউট হন ৬৮ বলে ৪০ রান করে। রাহুলের মতো ধাওয়ানকেও ফেরান ইভান্স। দুই ওপেনারই বেশী বল খেললেন, আর কম রান পেলেন।
বরঞ্চ তিন নম্বরে নেমে পুরো ইনিংসের গল্পটাই বদলে দিল শুভমান গিল। ইশান কিষানের সঙ্গে ৯৭ বলে ১৩০ রানের জুটি বানিয়ে টেনে নিয়ে গেলেন দলকে। ইনিংসের শুরু থেকেই থেকেই নড়বড়ে ছিলেন কিষান। তবে ৩২ তম ওভারে রাজাকে পরপর দুই চার মেরে আত্ম বিশ্বাস কিছুটা ফিরে পান। অন্যপ্রান্ত আগলে রেখে ৮২ বলে একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের প্রথম সেঞ্চুরিটি সারলেন গিল। অন্যান্য ব্যাটসম্যানরা খোলস ছেড়ে বের হতে না পারায় গিলের ৯৭ বলে ১৩০ রানের ইনিংসটি দলকে ৮ উইকেটে ২৮৯ রানে পৌঁছে দেয়।
পাঁচ নম্বরে নামা সিকান্দার রাজা উইকেটে এসে থিতু হাওয়ার চেষ্টা করেন। এর আগে শন উইলিয়ামস (৪৫ রান ) চেস্টা করে। অধিনায়ক চাকাভাও (১৫ রান) কিছু করতে পারেননি। কিন্তু এই ম্যাচে রান তাড়ার গল্পটা রাজার।
আরও পড়ুন : Durand cup 2022: জুটে গেল পয়েন্ট, ড্র দিয়ে মরসুম শুরু ইস্টবেঙ্গলের
Durand cup 2022: জুটে গেল পয়েন্ট, ড্র দিয়ে মরসুম শুরু ইস্টবেঙ্গলের
রাজা ইভান্সের সঙ্গে নবম উইকেট জুটিতে ৭৭ বলে ১০৪ রান তুলেছেন। তখনই ১২ বছর পর ওয়ানডেতে ভারতকে হারানোর স্বপ্নও দেখেতে শুরু করেছে জিম্বাবোয়ে। কিন্তু পরপর দুটি ওভারে ইভান্স (৩৬ বলে ২৮) ও রাজা ফিরে যাওয়ার পর জিম্বাবুয়েও জয়ের ভাবনা ভারতের পেসার আবেশ খান ৬৬ রানে ৩ উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট চাহার ও যাদব ও অক্ষয় প্যাটেলের।