নিউজ ডেস্ক: করনার পর এই বছর প্রথম আবারও মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি পেল দর্শনার্থীরা। সারা রাত মন্দিরে বসেই আরতি দেখবেন ভক্তরা। সোমবার ভোর ৫টা থেকেই দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে মন্দিরের দরজা। সারা রাত ধরে চলবে পুজো। পরম্পরা মেনেই পরান হবে সোনার গয়না, সাজবেন কালী মাতা।
দক্ষিণেশ্বর মন্দির:
দক্ষিণেশ্বরে ১৬৮তম পুজোর সূচনা হয়েছে সোমবার। ভোর ৫টা থেকেই খুলে দেওয়া হয়েছে দুয়ার। সারা রাত চলবে পুজো। গত ২ বছর মন্দিরের প্রবেশ ছিল নিষিদ্ধ। কিন্তু এবছর নিশেধাজ্ঞা না থাকায়, পরম শান্তিতে পুজো দেখবেন ভক্তরা। এবছর মন্দির এলাকায় লাগানো বড় পর্দায় ও নাটমন্দির বসে দেখা যাবে ভবতারিণীর আরতি। এই বিষয় দক্ষিণেশ্বর অছি পরিষদের কুশল চৌধুরী জানান, ‘‘কালীপুজোর সারা রাত ভবতারিণীর পুজো-অর্চনা দেখার জন্য ভক্ত ও দর্শনার্থীরা অপেক্ষা করে থাকেন। আবার সেই সুযোগ করে দিতে পেরে আমরাও আনন্দিত।’’
পরনে বেনারসি শাড়ি, সাবেক গয়নাতেই সেজে উঠবেন মা। পুজো শুরু রাত সাড়ে ১০টা থেকে। রাতেরবেলা চাঁদনি ঘাটে পুজোর ঘটে জল ভরতে যাওয়া হবে। তারপর সন্ধ্যায় অলক্ষ্মী পুজো করে অলক্ষ্মী বিদায় করা হবে। পাট কাঠি জ্বালিয়ে মন্দির প্রদক্ষিণ করাও হবে।সেই আগুনই বাড়িতে নিয়ে যান প্রত্যেকে। অন্যভোগে থাকবে পাঁচ রকম মাছ,অন্ন,পাঁচ রকম সবজি ভাজা, ঘি-ভাত, পাঁচ রকম মিষ্টি ও দই ইত্যাদি। এছাড়া বাকি দিনগুলির মতোই আজও সকালে নিত্য পুজো ও দুপুরে ভোগ নিবেদন করা হয়েছে।
থাকছে বিশেষ আলোর ব্যবস্থা। সেজে উঠেছে মূল মন্দিরের সঙ্গে নাট মন্দিরও। এই প্রক্রিয়ার সময় পাহারায় থাকবে পুলিশ।নজরদারি চলবে প্রায় ৩০-৩৫টি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমেও। অন্যদিকে, দর্শনার্থীদের খাবার ও থাকার সুবিধার দিকেও নজর রেখেছেন মন্দিরের সদ্যসরা। কিন্তু দুঃখের বিষয় এ বছরও প্রসাদ বিতরণ বন্ধ থাকবে।
কালীঘাট মন্দির:
কথায় বলে, ‘জয় কালী-কালকাত্তা বালি’। কালীঘাটের নাম উঠলেই উঠে আসে কলকাতার নাম। ধরে নেওয়াই যায় যে ,কালীঘাটের মা কলকাতাবাসীর অভিভাবক। সতীর ৫১ পীঠের অন্যতম এক পীঠ কালীঘাট। এখানে বিরাজমান দেবী দক্ষিণাকালী। এই মা মহালক্ষ্মী রূপেও পূজিত হয়। পৌরাণিক কাহিনি মতে, সতীর দেহ খন্ডের ডান পায়ের আঙুল পড়েছিল এই কালীঘাটে। মানুষের বিশ্বাস কালীঘাট দর্শন না করলে নাকি তীর্থ যাত্রা সম্পূর্ণই হয় না।
প্রায় সারা বছরই শনিবার ও মঙ্গলবার মন্দিরে বেশ ভিড় থাকে। কালীঘাটের মূল পুজো আটটি – রক্ষাকালী, স্নানযাত্রা, জন্মাষ্টমী, মনসাপুজো, চড়ক, গাজন, রামনবমী এবং দীপাবলি। তবে এবারে পুজো একটু বেশি আনন্দদায়ক কারন, ২ বছর পর আবার আবারও মায়ের একদম কাছে ও সামনে থেকেই পুজো ও আরতি দেখতে পারবে দর্শনার্থীরা।
আরও পড়ুন : মসুওদের চেনেন? এদের কথা জানলে অবাক হবেন
সোমবার সকাল থেকেই কালীঘাটে ভিড় জমেছে ভক্তদের। সোমবার সারা রাত মন্দির খোলা থাকবে। রোজের মতোই আজও নিত্য পুজো এবং দুপুরে ভোগ নিবেদন করা হয়েছে মাকে। এর পর শুরু হবে সন্ধ্যায় অলক্ষ্মী পুজো করে অলক্ষ্মী বিদায়। অলক্ষ্মী বিদায়ের পর পুরো মন্দির ধুয়ে ফেলা হয় এবং শুরু হয় লক্ষ্মীপুজো। পাট কাঠি জ্বালিয়ে মন্দিরের সেবায়েতরা মন্দির প্রদক্ষিণ করবেন। তারপর ওই আগুন বাড়িতে নিয়ে যান প্রত্যেকে। মাকে ভোগ দেওয়ায় হয় ২ বার। প্রথমে থাকে খই, মুড়কি, নাড়ু, ফল, মিষ্টি, লুচি, তরকারি ইত্যাদি। রাতের ভোগে থাকে খিচুড়ি, পোলাও, মাছ ও পরমান্ন।
আরও পড়ুন : ভয়াবহ আগুন বানতলার চর্মনগরীতে, ভেতরে আটকে পড়লেন ১০ জন
Leave a Reply