রেকর্ড সমাবেশ করতে প্রস্তুত তৃণমূল ছাত্র পরিষদ 

সোমনাথপাঁজা : তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস ২৮ অগস্ট। ২১ জুলাইয়ের পর ২৮ অগস্ট সেই দিন, যা নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে চলে সাজ সাজ রব। ২১ জুলাইয়ের অনুষ্ঠান মিটতেই শুরু হয়ে যায় প্রস্তুতিপর্ব। কংগ্রেস ভেঙে নতুন দল গড়লেও মমতা এই দিনটিকেই ফি বছর তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস হিসাবে পালন করেন। প্রত্যেক বছর ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির কাছে ছাত্র সমাবেশ হলেও গত দু-বছর করোনার সংক্রমণের জন্য তা সম্ভব হয়নি। ভার্চুয়াল ভাষণ দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। তবে এবার ছাত্র সমাবেশ হচ্ছে গান্ধীমূর্তির পাদদেশেই। ফলে বাড়তি উন্মাদনা চোখে পড়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সদস্যেদের মধ্যে। সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসের পরদিন অর্থাৎ আগামী ২৯ অগস্ট সেই সমাবেশে লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রীর সমাবেশের লক্ষ‌্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।

শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে তোলপাড় গোটা রাজ্য। গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। এই আবহেই হতে চলেছে শাসক দলের ছাত্র সমাবেশ। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতারা দাবি করছেন, নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর গ্রেফিতারি ছাত্র সমাজের উপরে কোনও প্রভাবে ফেলেনি। বস্তুত আগামী ২৯ তারিখের সমাবেশে তার প্রমাণ মিলবে বলে দাবি জোড়াফুল শিবিরের ছাত্র নেতাদের। ইতিমধ্যে সেই সমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এবারের এই সমাবেশের ব্যবস্থাপনায় নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ২৯ তারিখে ছাত্র সমাবেশকে কেন্দ্র করে কর্পোরেট ধাঁচে রাখা হবে স্বেচ্ছাসেবক পোস্টিং। পাশাপাশি ব্যবস্থা থাকবে কার পার্কিং এর। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সমন্বয়ের জন‌্য ছাত্র নেতারা রাখছেন বিশেষ টিমও। ২১ জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশের মতো এই সমাবেশেও যোগ দিতে আগেভাগেই উত্তরবঙ্গের ছাত্রছাত্রীরা কলকাতায় এসে পৌঁছচ্ছেন।

সচরাচর ২৮ অগস্টের ভাষণে ছাত্র ও যুব সমাজকে রাজনীতি, সমাজ বোধ, নেতৃত্বের পাঠ দেন তৃণমূল নেত্রী। তবে রাজ্য এবং জাতীয় রাজনীতির নানা দিক ছুঁয়েও যান বক্তব্যে। এ বছর দলনেত্রী তাঁর ভাষণে দলের নবীন প্রজন্মের নেতা কর্মীদের অগ্রাধিকার দিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।

এ ছাড়াও ২০২৪-এর লক্ষ্যে এ রাজ্যের একেবারে তরুণ ভোটারদের জন্যও কোনও বার্তা থাকতে পারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণে। দেশের বর্তমান সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের পড়ুয়াদের ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে পারেন তৃণমূল নেত্রী। বিজেপি যেভাবে সারা দেশে দল ও সরকার ভাঙানোর খেলায় নেমেছে, সেই ‘অপারেশন লোটাস’-এর বিরোধিতার সুর বেঁধে দিতে পারেন তিনি। একই সঙ্গে বাংলার প্রতি বিজেপি সরকারের ‘বঞ্চনা’র বিষয়টি আরও বেশি করে মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য ছাত্র-সমাজকে বার্তা দিতে পারেন মমতা। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় এজেন্সির ‘নিরপেক্ষতা’র নিয়ে বাংলা জুড়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে পথে নামার আহ্বান জানাতে পারেন নেত্রী।