নিউজ ডেস্ক: পঞ্চায়েত ভোট যতই এগিয়ে আসছে, ততই রাজ্য রাজনীতিতে দলীয় নেতাদের বক্তব্যে উঠে আসছে হুমকি, কুকথা। বিশেষ করে তৃণমূলের দলীয় বিধায়করা নানা কুকথার মাধ্যমে তোপ দাগছেন বিরোধী পার্টিকে। বেশ কয়েকজন বিধায়কের বেফাঁস মন্তব্যে ইতিমধ্যেই গরম রাজনৈতিক মহল। কেউ প্রকাশ্য সভা থেকে দিচ্ছেন ‘জিভ কেটে ফেলার’ হুমকি। আবার কেউ কোনও নেতার ‘বাপ’ তুলে কথা বলতেও ছাড়ছেন না।
খড়দহ বিধানসভার অন্তর্গত বিলকন্দা-২ অঞ্চলের তৃণমূলের সভাপতি সজল দাস। রবিবার এক দলীয় সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ও সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের সম্বন্ধে কেউ অশ্লীল মন্তব্য করলে তার জিভ কেটে ফেলে দেব।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের নেত্রী এবং অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে খারাপ কিছু বললে তাদের স্ট্রেচারে করে বাড়ি যেতে হবে, এ কথা পরিষ্কার বলে দিলাম।” একথা বলার পর শুনতে পাওয়া যায় সামনে বসে থাকা কয়েকশো জনতার হাততালি।
আরও পড়ুন: ২০১৬ সালের নোট বাতিলের পুরোনো মামলা ফের উঠলো সুপ্রিমকোর্টে, বিপাকে মোদি সরকার
এদিকে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক এবং বিধায়ক শওকত মোল্লাও করেন বেফাঁস মন্তব্য। সরাসরি তোপ দাগেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে। রবিবার সোনারপুরের আড়াপাঁচ এলাকায় একটি দলীয় সভায় যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে, প্রথমে নিজের বক্তব্যের সময় এবং পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময়েও শওকত মন্তব্য করেন শুভেন্দুর ‘বাপ’ তুলে। তিনি মন্তব্য করেন, “শুভেন্দুকে বলছি এই জেলায় রোজ এস। তোমার বাপের ক্ষমতা থাকলে একটা আসন জিতে দেখাও, তবে বুঝবো তুমি বাপের ব্যাটা।” এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে তখনও তিনি শুভেন্দুর ‘বাপ’ তুলে মন্তব্য করেন এবং অভিযোগ করেন, ‘ইডি- সিবিআইকে ব্যবহার করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার তৃণমূল নেতাদের ভয় দেখাতে চাইছে বিজেপি। কিন্তু এসব করে কোনও লাভ হবেনা’।
যদিও শওকতের এই মন্তব্যের পর, তাঁর রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস টেনে এনে তাঁকেও কটাক্ষ করে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, “সর্বদাই শাসক দলের সঙ্গে থাকতে ভালোবাসেন শওকত। এর আগে সিপিএমের নেতা ছিলেন, ২০১১ এর পর তৃণমূলে গিয়েছেন। একসময় তাঁরই নেতৃত্বে একসময় মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সভায় গুলি চালানো হয়েছিল। তাঁর মুখে এই কথা মানায় না।”
সবমিলিয়ে এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতিতে যে চিত্র ফুটে উঠছে, তাতে দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক চিত্রটা পশ্চিমবঙ্গে এখন বেশ সরগরম। পঞ্চায়েত ভোটে জিততে চাইছে প্রত্যেকটা দলই। নিজেদের জায়গা স্থায়ী করার জন্য, যে যেভাবে পারছে বিরোধী দলনেতাদের বিরুদ্ধে করছেন নানা মন্তব্য। যদিও অভিষেক বন্দোপাধ্যায় বারবার বলেছেন পঞ্চায়েত ভোট শান্তিপূর্ণ ভাবে করবার জন্য, কাউকে গাজোয়ারি না করবার জন্য। তবুও তৃণমূলের দলীয় নেতাদের কুকথা, বেফাঁস মন্তব্য, হিংসা, হুমকি থাকছে অব্যাহত।
Leave a Reply