অনুমতি ছাড়াই অনুষ্ঠান শুভেন্দুর, পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু শিশুসহ ৩ জনের

নিউজ ডেস্ক : শুভেন্দুর কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে হুড়োহুড়ি। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু শিশুসহ অন্তত ৩ জনের। গুরুতর আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪ জন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলে। পুলিশের অনুমতি ছাড়াই আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা হওয়ায়, শুরু হয়েছে বিতর্ক। শুভেন্দু অধিকারীকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।

বুধবার আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির স্ত্রী তথা বিজেপি কাউন্সিলর চৈতালী তিওয়ারির উদ্যোগে আসানসোলের রামকৃষ্ণডাঙায় কম্বল বিতরণের অনুষ্ঠান হয়। সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি নিজে হাতে ৩-৪ টি কম্বল বিতরণ করে চলে যান দলের জেলা কার্যালয়ে। এরপরই চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এলাকায়।

এই সময় কম্বল নেওয়ার জন্য এলাকায় ভিড় করেন কমপক্ষে ৮ হাজার মানুষ। ভিড় বাড়তেই কম্বল আর পাওয়া যাবে না আশঙ্কা করে, হুড়োহুড়ি শুরু করে জনতা। ফলে অনুষ্ঠানস্থলে পদপিষ্ট হয়ে আহত হন অনেকেই। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসক ৩ জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতদের মধ্যে রয়েছে একটি শিশুও। আহতরা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার সুধীরকুমার নীলকান্তম জানিয়েছেন, ‘৩ জনের মৃত্যু হয়েছে দুর্ঘটনায়। চার জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। ওই অনুষ্ঠান করার কোনও লিখিত অনুমোদন চাওয়া হয়নি। মৌখিক ভাবে পুলিশকে জানানো হয়েছিল। প্রচুর লোক জমে যাওয়ার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

এই প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, দায়িত্বজ্ঞানহীন রাজনীতি করছেন শুভেন্দু অধিকারী। পাগলের হাতে দেশলাই দিয়েছেন। আপনাদের ঘরও জ্বালাবে আর চারপাশ তছনছ করছে! পুলিস তদন্ত করে দেখুক, এই মৃত্যু দায় কেন শুভেন্দু নেবে না? পুলিসের কোনও অনুমতি নেই। বেআইনি সভা। গবীর মানুষদের নিয়ে ছেলেখেলা করতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে ৩ জনের মৃত্যু।

শাসক শিবিরের কটাক্ষ, তবে কি ১২ই লালনের রহস্যমৃত্যু, ১৪ই পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর কথাই বলেছিলেন শুভেন্দু? তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, শুভেন্দুবাবু আপনার দায়িত্বজ্ঞানহীনতা দুধের শিশু-সহ তিন-তিনটি প্রাণ বলি নিল। পুলিশের অনুমতি ছাড়াই আপনার দাদাগিরি দেখানোর ফল ভুগলেন কিছু অসহায় মানুষ। এই নিরীহ মানুষগুলো কি ক্ষতি করেছিল আপনার?

তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে প্রশাসন অনুমতি দিয়ে থাকে। যে ১ শতাংশ ক্ষেত্রে তারা অনুমতি দিতে অপারগ হন, সেনিয়েও বারবার আদালতে ছুটে যান শুভেন্দুবাবুরা। দুঃখের বিষয়, আদালত তাতেও অনুমোদন দিয়ে দেয়। আজ বুঝতে পারছেন কেন ১ শতাংশ ক্ষেত্রে সভার অনুমতি দেওয়া হয়না। আজ ১৪ তারিখ, আপনার ঘোষণার দ্বিতীয় দিন। অকালে হারিয়ে গেল ৩-৩টি তাজা প্রাণ।’

আরও পড়ুন : তাওয়াংয়ের আগেই চিনের অনুপ্রবেশ ভারতে