DURGA PUJA : ভৌমিক বাড়ির দুর্গাপুজো এবার পায়ে পায়ে ৫৫১ বছরে

নিউজ ডেস্ক: দুর্গাপূজা। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। বলা হয়, নদিয়ার ভবানন্দের পুজো দিয়ে বাংলায় মহিষাসুরমর্দিনীর আগমন। আনুমানিক প্রায় ৬০০ বছর আগে। ত্রিনয়না-মহামায়া থেকে মহিষাসুরমর্দিনী রূপে উমার আগমন মেনকার দুয়ারে। নীল আকাশে সাদা তুলোর মতো মেঘ, শিউলি ফুলের গন্ধ, আলপনায় মোড়া উঠোন। বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় গন্ধ, ‘পুজো-পুজো’ গন্ধ। আলতা পায়ে দুব্বা ঘাস মাড়িয়ে, কাশফুলের দোলায়, ঢাকের বাদ্যে মাতৃরূপেণ-শক্তিরূপেণর আগমন।

মধ্যযুগে মুকুন্দ চক্রবর্তীর অভয়ামঙ্গল থেকে সুবর্ণ রায়চৌধুরীর বাড়ির পুজো, ইতিহাসের একাধিক অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে নানা সময়ের দুর্গাপুজোর কাহিনী। যার মধ্যে অন্যতম দক্ষিন দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর বিধানসভার অন্তর্গত নন্দনপুর ভৌমিক বাড়ির দুর্গাপূজা।

এই নন্দনপুরের বাসিন্দা স্বর্গীয় সত্য ভৌমিক, ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ বাংলাদেশ ছেড়ে চলে আসেন ভারতে। কিন্তু জানা যায় তাঁর পরবর্তী কুলের আত্মীয়রা সেখানে থেকে যায়। এখনও বাংলাদেশে বসবাস করেন ভৌমিক পরিবারের আত্মীয়রা।

বাংলাদেশে হয়ে আসা পারিবারিক দুর্গাপুজো ভারতে আসার পর নতুন করে শুরু করেননি ভৌমিক বাড়ির সদস্যরা। কিন্তু হঠাৎ স্বপ্নাদেশ পাওয়ার কারণে আবারও শুরু হয় ঠেঙ্গাপাড়া নন্দনপুর এলাকায় ভৌমিক বাড়ির দুর্গাপুজো। সেই পুজো বাংলাদেশের মতো কলেবরে বৃহৎ না হলেও নিয়মনিষ্ঠা, আচার অনুষ্ঠানে যেকোনো বনেদি বাড়ির পুজো কে হার মানায়। এখানে দেবী দুর্গা ‘মা’ বৈষ্ণব মতেই পুজিত হন। ফলমূল সহযোগে মাকে ভোগ নিবেদনও করা হয়।

আরও পড়ুন: সেই জৌলুস নেই, তবু আড়ম্বরহীন ভাবে দুর্গার পুজো হয় জনাই রাজবাড়িতে

পরিবারের সদস্য সমীরণ ভৌমিক, তাঁর পিতৃপুরুষের দুর্গাপূজার ইতিহাস নিয়ে জানান, “আমাদের এই পুজো ৫৫১ বছরের পুরনো। আমার বাবা বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে আসার পর যেহেতু বাংলাদেশে বরংগাইলে এখনও অন্যান্য আত্মীয়রা পুজো করেন সেই কারণে এপারে নতুন করে পুজো শুরু করা হয়নি। কিন্তু কয়েক বছর আগে মা দুর্গার স্বপ্নাদেশে আমরা পুনরায় পুজো শুরু করি। আমাদের এই পুজোকে কেন্দ্র করে গ্রামে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। পুজোর ওই পাঁচটি দিন গ্রামের সব মানুষ, জাতি ধর্ম নির্বিশেষে আমাদের পুজো প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন। মাকে দর্শন করেন।”

আরও পড়ুন: বীরভূমের সুরুল সরকারবাড়ির দুর্গাপুজোয় এখনও রয়েছে সেই বনেদিয়ানা