ইউ এন লাইভ নিউজ: বৌবাজারের হস্টেলে বেলগাছিয়ার বাসিন্দা ইরশাদ আলম নামের ৩৭ বছরের যুবককে মোবাইল চুরির সন্দেহে পিটিয়ে খুন করা হয়। ওই যুবক চাঁদনি চকের একটি দোকানে কাজ করতেন। অভিযোগ, ঘটনার আগের দিন ওই হস্টেলের এক জনের মোবাইল হারিয়ে গিয়েছিল। পরের দিন সকাল থেকে যুবককে হস্টেলের সামনে ঘুরঘুর করতে দেখে সন্দেহ হয় আবাসিকদের। তার পরেই তাঁকে ফুটপাথ থেকে টেনে হিঁচড়ে হস্টেলের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ। হোস্টেলের ভিতরে নিয়ে গিয়ে মারধরও করা হয় তাঁকে। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও দরজা খোলা হয়নি।
আইনজীবী জানিয়েছেন, যুবক যাতে পুলিশের সামনে মুখ না খুলতে পারেন, সেই বন্দোবস্ত করেছিলেন অভিযুক্তেরা। যতক্ষণ না তিনি কথা বলার ক্ষমতা হারাচ্ছেন, তত ক্ষণ মারধর চালিয়ে যাওয়া হয়। তিনি কথা বলতে পারবেন না, এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর খুলে দেওয়া হয় হস্টেলের দরজা। তার পর পুলিশ ভিতরে ঢোকে। হাসপাতালে ওই যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনায় মোট ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে মুচিপাড়া থানার পুলিশ। বৌবাজারের সেই হস্টেলে গিয়েছিল ফরেন্সিক দলও। আদালতে বৃহস্পতিবার পুলিশ জানিয়েছে, হস্টেলের মেঝে থেকে রক্তের দাগ পাওয়া গিয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজও। ধৃতেরা সকলে হস্টেলের আবাসিক।
পুলিশের বক্তব্য, যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁরাই যুবককে মারধর করেছিলেন। সঙ্গে আরও কয়েক জন ছিলেন, যাঁরা এখনও পলাতক। সকলেই অপরাধের সঙ্গে জড়িত। পুলিশের আইনজীবী আদালতে বলেন, ‘‘সে দিন কী ঘটেছিল, তার ডিজিটাল প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এঁরা না করলে কে করেছে এই কাজ? এটা তো কোনও ভুতুড়ে ঘটনা নয়!’’ ১২ জুলাই পর্যন্ত তাঁদের হেফাজতে চেয়েছে পুলিশ। যুবককে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় ধৃতদের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হল। ১০ জুলাই পর্যন্ত তাঁদের পুলিশি হেফাজতে থাকতে হবে। তবে ধৃতদের মধ্যে যাঁদের পরীক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন, তাঁরা পরীক্ষা দিতে পারবেন বলেও জানিয়েছে আদালত। এক অভিযুক্ত জানান, ঘটনার দিন তিনি ঘুমোচ্ছিলেন। কী হয়েছে, কিছুই জানতেন না। ঘুম ভেঙে যাওয়ায় খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন। তিনি এই ঘটনায় যুক্ত নন বলে দাবি করেছেন। সব পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত ধৃতদের সকলকে ১০ জুলাই পর্যন্ত পুলিশের হেফাজতে থাকতে বলেছে।
Leave a Reply