ইউ এন লাইভ নিউজ ডেস্ক: প্রকৃতির রোষ থেকে বাঁচার উপায় আজও অজানা মানুষের কাছে। বিজ্ঞানের এত অগ্রগতিতেও প্রকৃতিকে কোনওভাবেই বাগে আনা গেল না। তার ধ্বংসলীলা একবার শুরু হলে সেখান থেকে পার পাওয়া মুশকিল। সিকিমেও চুংথাং গ্রাম ঠিকই এমনই এক ধ্বংসলীলার সম্মুখীন হল। গত কয়েকদিনের বিপর্যয়ে একেবারে ধুয়ে-মুছে সাফ হয়ে গেল গ্রামটি। একইসঙ্গে সিকিমের পর্যটনের মানচিত্র থেকে রাতারাতি উধাও পর্যটকদের অত্যন্ত পছন্দের এই ডেস্টিনেশন।
উত্তর সিকিমের এই গ্রামে বছরভর দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকত। মূলত এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য চুংথাংকে নিজেদের ভ্রমণ রুটের মধ্যেই রাখতেন সবাই। কিন্তু সেই পাহাড়ি গ্রামই এখন বিগত কয়েকদিনের মহা বিপর্যয়ে একেবারে শ্মশানের চেহারা নিয়েছে। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু ভেসে গিয়েছে জলে। শুধুমাত্র কয়েকটা ভাঙাচোরা বড় বহুতল এখনও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে, তাও সেগুলোর কঙ্কালসার চেহারা। চুংথাংয়ের এক বাসিন্দা বলেন, ‘বিপর্যয়ের সময় আমাদের সবাইকে গ্রাম থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল সেনা। শনিবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর যখন ফিরলাম, চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি। রাস্তা বলতে কিছু নেই আর। কোনওরকমে নদীর উপর দড়ি ফেলে, ঝুলতে ঝুলতে গ্রামে ঢুকেছি। আমি আমার নিজের গ্রামকেই চিনতে পারছি না। চুংথাং যেন একটা বিশাল ধ্বংসপুরীতে পরিণত হয়েছে। এই গ্রামে আর কোনওদিন বাইরে থেকে পর্যটকরা আসবে কিনা জানি না।’
উঁচু পাহাড়ে ঘেরা এই চুংথাং গ্রামের অন্যতম আকর্ষণ ছিল সুন্দরী ঝর্না। এছাড়াও লাচুং গ্রামের কার্পেট বুনন কেন্দ্র, লাচুং গুম্ফা—সবকিছুই ছিল এই চুংথাংয়ে। কিন্তু হ্রদ বিপর্যয়ে সমস্ত কিছু ধুয়ে মুছে গিয়েছে। সিকিম প্রশাসনও জানিয়েছে যে, এখানকার প্রায় ৮০ শতাংশই একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। এই গ্রাম আর কোনওদিন আগের রূপে ফিরবে কিনা কেউ জানেন না। আর সেই জন্যই সবার একটাই আশঙ্কা, হয়তো সিকিমের পর্যটন মানচিত্র থেকে চিরতরে হারিয়েই গেল চুংথাং!
Leave a Reply