বিশেষ রাজনৈতিক সংবাদদাতা : পঞ্চায়েতে নির্বাচনকে সামনে রেখে আন্দোলনে ঝাঁঝ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল সিপিএম। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। নেতৃত্বের আরষ্ঠতা কাটিয়ে মাঠে পুরো শক্তিতে নামতে হবে। সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকের প্রথমদিনে এমনই বার্তা দিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
বুধবার থেকে শুরু হয়েছে সিপিএমের দুদিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক। সেলিম বলেছেন, “নেতাদের ছেলে মেয়েরা মাঠে নামছে। নেতৃত্বের আরষ্ঠতা কমাতে হবে।” সেলিম আরও বলেছেন, তৃণমূল বৰ্তমানে কিছুটা ব্যাকফুটে হলেও, আমরা যে বিরাট এগিয়ে গিয়েছি এরকম ভাবার দরকার নেই। এদিন বৈঠকে জেলা সম্পাদকরা দাবি করেন, বসে যাওয়া নেতা-কর্মীরা আবার সক্রিয় হচ্ছে।
তবে জেলা সম্পাদকরা এই দাবি করলেও, এটা স্পষ্ট যে, ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে গ্রাম পঞ্চায়েতের সব আসনে প্রার্থী দেওয়া সম্ভব নয়। জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতিতে প্রার্থী দেওয়া গেলেও গ্রাম পঞ্চায়েতের সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার মতো সাংগঠনিক শক্তি নেই সিপিএমের। জেলাভিত্তিক রিপোর্টে এই আশঙ্কার বিষয়টিও উঠে এসেছে বলে খবর। কারণ, নিচুতলায় পার্টির সংগঠনের জোর অনেকটাই কমে গিয়েছে।
গত একুশের বিধানসভা নির্বাচনেও সিপিএমের প্রাপ্ত আসন শূণ্য। তারপর অবশ্য পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে। একাধিক উপনির্বাচন ও কলকাতা পুরসভার ভোটে কিছুটা হলেও ফলাফলে আশার আলো দেখছেন সিপিএম নেতৃত্ব। বিভিন্ন ইসু্যতে আন্দোলনের ঝঁাঝও বাড়িয়েছে আলিমুদ্দিন। তাই আগামী বছরের গোড়ার দিকে পঞ্চায়েত ভোট হতে পারে তা ধরে নিয়েই বুথভিত্তিক রিপোর্ট তৈরি করার কাজও শুরু করে দিয়েছে সিপিএম।
বিরোধী আন্দোলনের পরিসরে বিজেপিকে টেক্কা দেওয়া ও পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সংগঠনকে চাঙ্গা করাই পার্টির লক্ষ্য। বুধবার সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকের প্রথমদিনে জেলাভিত্তিক সংগঠন সংক্রান্ত রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা হয়। পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে পার্টি কতটা প্রস্তুত তা নিয়েও নেতৃত্ব আলোচনা করেন। জেলা সম্পাদকরা রিপোর্ট দেন।
স্থানীয় ইস্যুগুলি নিয়ে আন্দোলন বাড়াতে বলা হয়েছে জেলা কমিটিগুলিকে। বুথ কমিটি গড়ার কাজ দ্রুত শেষ করে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করে নিতে বলা হয়েছে। প্রার্থী ঝাড়াই—বাছথাইয়ের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। তবে গ্রাম পঞ্চায়েতস্তরে সিংহভাগ আসনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আশঙ্কা যে রয়েছে তা রিপোর্টেই উঠে এসেছে বলে পার্টি সূত্রে খবর। এক্ষেত্রে অবশ্য শীর্ষ নেতৃত্ব শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের তত্ত্ব খাড়া করলেও, সংগঠনের দুর্বলতাও যে অন্যতম বড় কারণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
Leave a Reply