সিট বেল্ট ছাড়াই ৯ মিনিটে ২০ কিলোমিটার ! সাইরাসের উড়ন্ত মার্সিডিজের মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কারণ কী ?

নিউজ ডেস্ক: ক্ষত-বিক্ষত মার্সিডিজ। সামনের সিটের চালক এবং আরোহী বেঁচে রয়েছেন। কিন্তু পিছনের সিটের দুই জন আরোহী ঘটনাস্থলেই মৃত। মহারাষ্ট্রের পালঘরে দুর্ঘটনা ইতিমধ্যেই সারা দেশ জুড়ে খবরের শিরোনামে। কিন্তু, কী ভাবে হল এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা? গাড়ি চালকের গাফিলতি? নাকি আরোহীদের অবহেলা ? কী উঠে এল পুলিশি তদন্তে?

মর্মান্তিক গাড়ি দুর্ঘটনায় আকস্মিক জীবনাবসান হয়েছে শিল্পপতি সাইরাস মিস্ত্রির। রবিবার বিলাসবহুল গাড়িতে আহমেদাবাদ থেকে মুম্বই যাওয়ার পথে পালঘরের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে ধাক্কা পারে তাঁর গাড়ি। এরপরই সব শেষ। প্রাণ হারান টাটা সন্সের প্রাক্তন চেয়ারম্যান।

পালঘরের চারোটি চেকপোস্ট পেরিয়ে, ২০ কিলোমিটার মাত্র ন’মিনিটে অতিক্রম করে টাটা সন্সের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সাইরাস মিস্ত্রির মার্সিডিজ গাড়ি। অর্থাৎ ঘণ্টায় প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ যে রিপোর্ট পেশ করেছে, তাতে পরিষ্কার উল্লেখ করা রয়েছে অতিরিক্ত গতির কারণেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।

সূত্র মারফত এ-ও জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় গাড়ির পিছনের সিটে বসে ছিলেন সাইরাস। গাড়ি চলার সময় সিটবেল্টও পরেননি তিনি। সিটবেল্ট না পড়ার কারণেই প্রাথমিক তদন্ত অনুসারে, দুর্ঘটনার সময় সাইরাস এবং তাঁর যে সহযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে, তাঁরা কেউই সিট বেল্ট পরে ছিলেন না বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এখনও পর্যন্ত পালঘর পুলিশের তদন্তে যা জানা গিয়েছে,

১) ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সাইরাসের এবং জাহাঙ্গীর দিনশা পাণ্ডলের। হাসপাতাল সূত্রের খবর।

২) সাইরাস মাথায় চোট পান। জাহাঙ্গীর বাম পায়ে ফ্র্যাকচার এবং মাথায় চোট পান।

৩) সাইরাস এবং জাহাঙ্গীর দুজনেই গাড়ির পিছনের সিটে ছিলেন। সিট্ বেল্ট পড়ে ছিলেন না। মোটর ভেহিকল আইন অনুযায়ী, গাড়ির পিছনের সিটে বসা আরোহীদেরও সিট্ বেল্ট পড়তে হবে।

৪) অনাহিতা পাণ্ডলে (মুম্বইয়ের সনামধন্য গাইনোকোলজিস্ট) গাড়ি চালাচ্ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য অনুযায়ী, রবিবার দুপুর সওয়া ৩টে নাগাদ নাগাদ মুম্বই থেকে ১৩৫ কিলোমিটার দূরে পালঘরের চারোটি এলাকায় একটি নদীর সেতুর উপর থাকা ডিভাইডারে ধাক্কা তখন সেটা অতিরিক্ত গতিতে ছিল এবং বামদিক থেকে একটি গাড়িকে ওভারটেক করতে গিয়েই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন অনাহিতা, জানিয়েছে পুলিশ।

৫) অনাহিতা পাণ্ডলে এবং তাঁর স্বামী গুরুতর আহত হয়েছেন এবং চিকিৎসাধীন আছেন।

৬) অনাহিতা এবং তাঁর স্বামীকে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হতে পারে।

৭) সামনের সাইট বসা আরোহীরা অর্থাৎ অনাহিতা এবং তাঁর স্বামী সিট্ বেল্ট পড়ে থাকার কারণেই তাঁরা প্রাণে বেঁচেছেন জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ ইতিমধ্যেই সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। গাড়িটিরও কোনো যান্ত্রিক গোলযোগ ছিল কিনা সেটাও দেখা হচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে যে তাঁরা গাড়িটির অভ্যন্তরীণ ‘চিপ’ উদ্ধার করেছেন তাঁরা। সেই চিপ থেকে ডেটা পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। দুর্ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন নমুনাও সংগ্রহ করেছে ফরেনসিক দল।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *