বিশেষ প্রতিনিধি : এই বিশ্বের পিতৃতান্ত্রিক সমাজের মাঝে আজও রয়েছে এক মাতৃতান্ত্রিক সমাজ। তা রয়েছে দক্ষিণ পশ্চিম চিনে হিমালয়ের কোল ঘেঁষা ইউনান প্রদেশে। সেই সম্প্রদায়ের নাম মসুও। সেই সমাজ আজও নারীশাসিত। সন্তান উৎপাদন ছাড়া সেই সমাজে পুরুষদের কোনও ভূমিকা নেই।
এই সমাজে মহিলাদের ক্ষমতা ও আত্মবিশ্বাস অপরিসীম। তবে তাঁরা সবাই যে উচ্চশিক্ষিত তা নয়। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগজনই কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। লুগু লেক নামে পাহাড়ঘেরা এক হ্রদের চারপাশে ঝাউবনের মাঝে এই সম্প্রদায়ের বাস। পাহাড়ের ওপর তিন হাজার মিটার উচ্চতায় তাঁরা নিশ্চিন্তে বাস করেন। কৃষিকাজই তাঁদের জীবিকা। কয়েকবছর আগে পর্যন্ত সেই জায়গা পর্যটকদের নাগালের বাইরে ছিল। বাইরের জগতের প্রভাব পড়েনি সেই সমাজে।
মসুও সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। তাঁরা যেমন কর্মঠ, আত্মবিশ্বাসী, তেমনই ধর্মবিশ্বাসী আর সংস্কৃতিনির্ভর। সেখানকার নারীদের সাজপোশাকেও তাঁদের দুর্দমনীয়, আত্মবিশ্বাসী মনোভাব প্রকাশ পায়। তাঁরা পর্বতের দেবীকে পুজো করেন নিজেদের মঙ্গল কামনা করে। উৎসব পালন করেন নাচ-গান আর খাওয়াদাওয়ার মধ্যে দিয়ে। পর্বতের দেবীর মতই হৈহুল্লোড়, মদ্যপান, বহুগামিতা তাঁদের পছন্দ। তাঁরা জীবনে একাধিক বার সঙ্গী পাল্টায়।
ছবি সৌজন্যে:- “Tribes Inspiring Workplaces”-এর ফেসবুক পেজ
মসুওদের বংশ পরম্পরা হয় মায়ের দিক থেকে। বাড়িতে মাতামহী বা প্রমাতামহী থাকলে তাঁর কথাই হয় শেষ কথা। সম্পত্তির উত্তরাধিকারীও হয় মেয়েরাই। মেয়েরাই ছেলে, ভাইদের ভরণপোষণ করেন। ছেলেরা বোনের বাড়িতেই থাকেন।
আরও পড়ুন : কালীপুজোর সকাল থেকেই আকাশের মুখভার, সিত্রাং আসার আগেই বৃষ্টি শুরু
পরিবারের কর্ত্রী নির্ধারণের রীতিতেও মসুও সম্প্রদায় গোটা বিশ্বের চেয়ে আলাদা। এখানে অগ্রজ কন্যাসন্তানই যে পরিবারের কর্ত্রী হবেন তা নয়। তা নির্ধারিত হবে বুদ্ধিমত্তা আর কর্মক্ষমতা দেখে। যিনি বর্তমানে গৃহকর্ত্রী বা পরিবারের প্রধান, তিনিই ঠিক করে দেবেন পরের প্রজন্মে কে প্রধান হবে।
ছবি সৌজন্যে:- “Tribes Inspiring Workplaces”-এর ফেসবুক পেজ
এমনকি এই সমাজে সন্তানের ওপর বাবার কোনও অধিকারও নেই। ছেলে হোক বা মেয়ে, বাবার চেয়ে বেশি তাঁরা মায়ের পরিবারের অন্য পুরুষদের বা মামাকে চেনেন। তাঁরাই শিশুদের সবকিছু শেখান, আর ভরণপোষণ করেন মায়েরা।
আরও পড়ুন : শত্রুদের হুঙ্কার দিয়ে কার্গিলে জওয়ানদের সঙ্গে দীপাবলি উদযাপন মোদির
Leave a Reply