ইউ এন লাইভ নিউজ: প্রাক্তন বিচারপতি তথা তমলুক বিজেপি প্রার্থী, বিচার বিভাগ থেকে নির্বাচনী রাজনীতিতে রূপান্তরিত অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এখন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেই বিচার চাইতেই এবার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। বুধবার বিকেলে, তিনি সরাসরি কলকাতা হাইকোর্টে ভারতের নির্বাচন কমিশনের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেন। তিনি আরও বলেছেন যে তার মানহানি ও কলঙ্কিত করার অভিযোগে কমিশনের বিরুদ্ধে পৃথক ব্যবস্থা নেবেন। নির্বাচন কমিশন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিজিতের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছিল, তার প্রচার কার্যক্রমের উপর ২৪ ঘন্টা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কমিশন লিখেছিল, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে যেখানে মহিলাদের সম্মান করার স্বতন্ত্র ঐতিহ্য রয়েছে, সেখানে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ব্যবহৃত শব্দ বাংলার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করেছে, ভাবমূর্তিরও ক্ষতি করেছে।’’ এর পাশাপাশিই অভিজিতের শিক্ষা প্রসঙ্গকে টেনে কমিশন লিখেছিল, ‘‘তাঁর মতো শিক্ষিত মানুষের কাছ থেকে এই ধরনের ন্যক্কারজনক শব্দ কাম্য নয়। তিনি ভারতীয় মহিলাদের তো বটেই সাংবিধানিক পদমর্যাদায় থাকা রাজনীতিকেরও সম্মান ক্ষুণ্ণ করেছেন।’’
অভিজিৎ এই আদেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, এবং এই বিষয় সম্পর্কিত হলফনামায় স্বাক্ষর করার পরে, তিনি কলকাতা হাইকোর্ট প্রাঙ্গণের সামনে বলেছিলেন, ‘‘ভারতের নির্বাচন কমিশন কালকে একটা অর্ডার পাস করেছে। সেটাতে আমার মতে অনেক অবাঞ্ছিত মন্তব্য আছে। আমাকে কলঙ্কিত করা হয়েছে এবং আমার মানহানিও করা হয়েছে। এই কলঙ্ক এবং মানহানির বিরুদ্ধে আমি আলাদা পদক্ষেপ করব। সেই অধিকার আমি সংরক্ষণ করেছি। তা ছাড়া ওই নোটিসটাকে চ্যালেঞ্জ করেছি। অর্থাৎ অর্ডারটাকে চ্যালেঞ্জ করেছি।’’
তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল, তমলুকের জনসভা থেকে অভিজিৎ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর ওপর নজিরবিহীন আক্রমণ করেছেন। একটি ভিডিওতে অভিজিৎকে বলতে শোনা যায়, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুমি কত দামে বিক্রি হও?’ এমনকি, মমতার উদ্দেশে, ‘‘তোমার দাম ১০ লক্ষ টাকা কেন?’’, ‘‘উনি আদৌ মহিলা কি না, সেব্যাপারে সন্দেহ আছে।’’ এবং অন্যান্য অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। ইউ এন লাইভ নিউজ এই ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেনি। তৃণমূল কংগ্রেস কমিশনে অভিযোগ দায়ের করার পরে, তারা প্রথমে অভিজিৎকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করে এবং তারপরে তার প্রচার কার্যক্রমে ২৪ ঘন্টার নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
বুধবার কলকাতা হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে অভিজিৎ বলেন, ‘‘আমি পাঁচটা অবধি নিষেধাজ্ঞা মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু সেই নির্দেশেরই একটি অংশে যেখানে ওইসব মানহানিকর মন্তব্য গুলো আছে, সেটাকে আমি চ্যালেঞ্জ করেছি। সেটাই ফাইল হল।’’
কমিশন মঙ্গলবার অভিজিতের প্রচার নিষিদ্ধ করার আদেশ জারি করে, যার জন্য তাকে বুধবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রচারণা বন্ধ করতে হবে। বর্তমানে তিনি তার নির্বাচনী এলাকা তমলুকেই বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছেন। বুধবার সেই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্ট যান তিনি এবং সেখান থেকে সোজা তমলুক ফিরে আসেন।