নিউজ ডেস্ক : অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাঁর দুটি পায়ে চারটে গুলি লেগেছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে লাহোরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের প্রধান। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরেই নতুন লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছেন ইমরান খান। এরই মধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে আততায়ীর স্বীকারোক্তির ভিডিও।
প্রধানমন্ত্রীর পদ হারানোর পরেই নির্বাচনে প্রতিতদ্বন্দ্বিতা করার অধিকারও হারিয়েছেন ইমরান খান। তা নিয়েই সরকার বিরোধী আন্দোলনে পথে নামেন তিনি। আর সেখানেই মরতে মরতে বাঁচলেন ইমরান। মিছিলে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চার চিকিৎসকের বোর্ডও গঠন করা হয়েছে তাঁর চিকিৎসার জন্য। পর্যবেক্ষণেই রয়েছেন তিনি।
এরই মধ্যে বিবৃতি প্রকাশ করে ইমরান খান জানিয়েছেন, ‘আল্লাহ আমাকে পুনর্জীবন দিলেন। নতুন উদ্যমে আরও প্রবলভাবে লড়াই চালিয়ে যাব আমি।’ এই ঘটনায় তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী সেনেটর জাভেদ খান ও দলের নেতা ফয়জল জাভেদ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এরই মধ্যে একটি স্বীকারোক্তি ভিডিওতে দেখা গেছে, এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, ‘ইমরান মানুষকে বিভ্রান্ত করছিলেন। বিপথে চালিত করছিলেন মানুষকে। তাই খুনের চেষ্টা করি। শুধু ওঁকেই মারতে চেয়েছিলাম। আর কাউকে নয়।’
ইতিমধ্যেই পুলিশের পক্ষ থেকে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সন্দেহভাজন ব্যক্তির ‘স্বীকারোক্তি’ ভিডিওতে আরও দাবি করা হয়েছে, ‘আমার বিবেক মানতে পারছিল না। লাহৌর থেকে যেদিন পদযাত্রা শুরু করেন, সেই দিনই বিষয়টি মাথায় আসে। আমার সঙ্গে আর কেউ যুক্ত নেই। সকালে একাই বাইক নিয়ে বেরিয়েছিলাম বাড়ি থেকে। মামার বাইকের দোকান রয়েছে। সেখানে বাইক রেখে আসি।’
যদিও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ দল, এই হামলাকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রেরই অংশ বলেই দাবি করছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফও এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানের উপর গুলি চলার ঘটনার তীব্র নিন্দা করি। অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রীকে গোটা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।’
আরও পড়ুন : সরকার বিরোধী মিছিলে গুলিবিদ্ধ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, মৃত ১
বৃহস্পতিবার গুজরানওয়ালায় সপ্তম দিনের পদযাত্রায় গুলিবিদ্ধ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর আরোগ্য কামনা করে তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘ওনার দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। আশাকরি বাকিরাও দ্রুত সেরে উঠবেন। এই ঘটনার তদন্তে পাঞ্জাব প্রদেশ সরকারকে সবদিক দিয়ে সাহায্য করবে কেন্দ্রীয় সরকার। নিরাপত্তার বিষয়টিতে জোর দেওয়া হবে। পাকিস্তানের রাজনীতিতে হিংসার কোনও জায়গা থাকা উচিত নয়।’
এরই মধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে সেই ব্যক্তির ভিডিও যার জন্য প্রাণে বেঁচেছেন ইমরান খান। তিনি জানিয়েছেন, আততায়ীর মাত্র ১০ ফুট দূরেই দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি, যখন সে গুলি চালাতে শুরু করে। এরপরই তাঁর হাতের ধাক্কায় আততায়ীর বন্দুক পড়ে যায় এবং পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে সেই বন্দুকবাজ। আততায়ীর পেছনে ধাওয়া করে তাঁকে ধরতেই, উপস্থিত হয় পুলিশও। এরপর পুলিশ আটক করে অভিযুক্তকে। তবে এই ঘটনা প্রথম নয়। ১৫ বছর আগেও ঠিক একইভাবে বন্দুকবাজের গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর।
Leave a Reply