ইউ এন লাইভ নিউজ: সুরজ পাল ওরফে নারায়ণ সাকার হরি ওরফে সাকার বিশ্ব হরির ডাকে মঙ্গলবার হাথরসে একটি ‘সৎসঙ্গে’র আয়োজন হয়েছিল। ভক্তদের কাছে তিনি ভোলে বাবা নামেও পরিচিত। ‘সৎসঙ্গ’ শেষে ভোলে বাবা ধুলো উড়িয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যান। সেই ধুলো সংগ্রহ করতেই হুড়োহুড়ি পড়ে যায় ভক্তদের মধ্যে। সেই বিশৃঙ্খলতায় পদদলিত হন নারী, শিশু-সহ বহু মানুষ। হাথরসের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১২১ জনের মৃত্যু হয়েছে , হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও অনেকে, তাদের অবস্থা শোচনীয় যার ফলে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে আরও।
ভক্তদের অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, যাঁর প্রতি এত আস্থা, বিশ্বাস, ভরসা তাঁদের, এ রকম একটা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে তিনি কেন সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসছেন না? তাঁদের কথায়, “বাবার (ভোলে বাবা) যদি সত্যিই শক্তি থাকে, তা হলে আমাদের এসে বাঁচান, সুস্থ করে তুলুন!” বাবার প্রতি ভালোবাসা আস্তে আস্তে বদলে যাচ্ছে ক্ষোভ এবং হতাশায়। পদপিষ্টের ঘটনার পর দু’দিন কেটে গিয়েছে, এখনও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা বাবাকে। তাঁর আশ্রমে গিয়েও তল্লাশি চালানো হয়েছে। তাঁর আশ্রমে তল্লাশি চালিয়ে ১২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তবে ঘটনার ২৯ ঘণ্টা বাদে ভোলে বাবার আবার আবির্ভাব ঘটে, তার দাবি তিনি নির্দোষ। সৎসঙ্গ’ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরই এই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি তাঁর। এই ঘটনার নেপথ্যে অসামাজিক কাজকর্মও রয়েছে বলে মনে করেন বাবা। দু’দিন ধরে হাথরসের মুগলাগঢ়ি গ্রামের ছবিটা খুবই ভয়াবহ, কেউ মৃতদের ভিড়ে খুঁজে বেড়াচ্ছেন তাঁদের স্বজনকে আবার কেউ মাকে হারিয়েছেন, কেউ সন্তানকে, কেউ কেউ আবার পুরো পরিবারকে হারিয়েছেন। তার মধ্যেই ধর্মীয় গুরুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়তে শুরু করেছে ভক্তদের একাংশের মধ্যে।
বুধবারেও সেই ক্ষোভের আঁচ দেখা গিয়েছে হাথরসের বেশ কিছু জায়গায়। পদপিষ্টের ঘটনায় হাথরসের বাসিন্দা বিনোদ হারিয়েছেন তার স্ত্রী, মা এবং কন্যাকে। তার পরে বাড়িতে লাগানো সেই ধর্মগুরুর ছবি ছিঁড়ে ফেলে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করে বিনোদ। বিনোদ বলেন “আমি বাড়ির বাইরে ছিলাম। পদপিষ্টের ঘটনা শুনে ছুটে আসি। বাড়িতে ফিরে শুনি মেয়েকে নিয়ে মা এবং স্ত্রী সৎসঙ্গে গিয়েছেন। তার পরই সব শেষ।” বিনোদ একা নন, তাঁর মতোই আরও অনেক ভক্ত ক্ষোভে ফুঁসছেন। তাঁদের কণ্ঠেও এ বার ভোলে বাবার বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা যাচ্ছে। অনুমতি ছিল ৮০ হাজারের, হাথরসের ‘সৎসঙ্গে’ ভিড় করেছিলেন আড়াই লক্ষ! এই ঘটনার তদন্তের জন্য মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ একটি বিশেষ কমিটি তৈরি করেছে।
Leave a Reply