নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ কলকাতার রবীন্দ্র সরোবর লেকের কাছেই অবস্থিত লেক কালীবাড়ি। প্রতিদিন এই কালীবাড়িতে হাজার ভক্তের ভিড় জমে। মায়ের দর্শন পেতে, মাকে পুজো দিতে দূর দূরান্ত থেকে আসেন ভক্তেরা। শোনা যায়, অতি নিষ্ঠার সঙ্গে সাধারণ মানুষের শান্তি কামনায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল এই কালীবাড়ির। এই মন্দিরে মাকে পুজো করা হয় ‘করুণাময়ী কালী’ রূপে। ইতিহাস বেশি দীর্ঘ নয়। ৭৩ বছরের পুরোনো এই মন্দির। তবে, এই কালীবাড়ির মাহাত্ম্য সম্পর্কে শোনা যায় নানান কথা।
আরও পড়ুন: ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি: জড়িয়ে রয়েছে ৫০০ বছরের পুরোনো ইতিহাস
স্থাপনের ইতিহাস
লেক কালীবাড়ি স্থাপনের একেবারে প্রধান নাম ছিল হরিপদ চক্রবর্তী। ১৯৪৯ সালে তিনি এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সময় মন্দিরের নাম ছিল ‘শ্রী শ্রী ১০৮ করুণাময়ী কালিমাতা মন্দির’। এখনও এই নাম বর্তমান, তবে লেকের পাশে অবস্থিত হওয়ায় মন্দির পরিচিতি পেয়েছে লেক কালীবাড়ি হিসেবেই। হরিপদ চক্রবর্তী ছিলেন মা কালীর একনিষ্ঠ ভক্ত। তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময়, সারা দিন তিমি মায়ের সাধনা করতেন। শোনা যায়, সাধনা করতে করতে মা কালী স্বয়ং দেখা দিয়েছিলেন হরিপদ চক্রবর্তীকে। স্বপ্নে বলেছিলেন ওই স্থানে মন্দির প্রতিষ্ঠা করার কথা। কিন্তু তিনি গরিব মানুষ। মন্দির প্রতিষ্ঠা করার টাকা তাঁর কাছে ছিলোনা। মা কালীই তাঁকে আশ্বাস দেন, বলেন মন্দিরে পুজোর ভার নেবেন তিনি নিজেই। তারপরেই হরিপদ চক্রবর্তী মায়ের আদেশানুসারে তৈরি করেন মন্দিরটি। সাধারণ মানুষের কাছেও তিনি ছিলেন গুরুদেব। মানবজাতির শান্তিকামনার স্বার্থে তিনি পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসে তন্ত্রসাধনা করতেন। আসনটি পাঁচটি নরমুণ্ড দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। এখনও কালীমূর্তির পাশে এই নরমন্ডি আসন রাখা রয়েছে। মন্দিরের পাশেই রয়েছে হরিপদ চক্রবর্তীর মূর্তি।
আরও পড়ুন: কালীঘাট মন্দির: কথিত আছে, সতীর আঙ্গুল পড়েছিল এখানেই
লেক কালীবাড়ির আরও কিছু কথা
সারা বছরই লেগে থাকে ভক্তদের ভিড়। সপ্তাহে মঙ্গল ও শনিবার ভক্তের সমাগম ঘটে বেশি। এই দুদিন প্রতি ১৫ মিনিট অন্তর ভক্তদের জন্য থাকে মায়ের পায়ে অঞ্জলি দেওয়ার সুবন্দোবস্ত। প্রতি বছর পুজোর সময় সাজ বদলানো হয় মায়ের। কখনও ফুলের সাজ, কখনও সোনার সাজে সজ্জিত হন দেবী। বর্তমানে লেক কালীবাড়ির প্রধান সেবায়েত নিতাইচন্দ্র বসু।
Leave a Reply