নিউজ ডেস্ক : অশুভ শক্তির বিনাশ করে, শুভ শক্তির সূচনা করেন দেবী কালী। ত্রিলোকের সমস্ত শক্তির আধার ‘মহাকালী’।তন্ত্র অনুযায়ী কালী দশ-মহাবিদ্যার প্রথম দেবী। পুরাণ মতে, মহাকালের(মহাদেব) স্ত্রী,তাই তিঁনি কালী। শাস্ত্র অনুসারে, কালের বিনাশ করতে জন্ম হয় মহাকালীর। শক্তির চূড়ান্ত প্রকাশ এবং সমস্ত জীবের জননী তিনি।লোককথায় অনুসারে, দেবী পার্বতীর অপর রূপ চন্ডী, এবং চন্ডীরই আর এক রূপই হল কালিকা।এছাড়াও ঐশ্বরিক রক্ষক হিসেবেও দেখা হয় তাঁকে। যিনি মোক্ষ বা মুক্তি প্রদান করেন। তাই তো বলা হয়, কর্ম তুমি – মুক্তি তুমি, আলো তুমি – আন্ধকারও তুমি, লক্ষ্য তুমি – লক্ষ্যে পৌঁছাও তুমি, মোহ তুমি – ত্যাগও তুমি, কণা তুমি – ব্রহ্মাণ্ড তুমি , তুমি অন্ত আর আরাম্ভও তুমি, ‘তাই গৌরী তুমি আর ‘মহাকালী’ ও তুমি’।
কবে ও কী ভাবে শুরু হয়?
তখন ১৭০৩ সাল। সুতানুটি গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে ভাগীরথী, তার পাশেই জঙ্গলে ঘেরা শ্মশান। সেখানেই তান্ত্রিক উদয়নারায়ণ মাটির সিদ্ধেশ্বরী কালী মূর্তি তৈরি করে পুজো করতেন। ঘন জঙ্গলে মধ্যে ছিল মন্দির। ১৮০৩ নাগাদ শঙ্কর ঘোষ নামে এক ব্যবসায়ী মায়ের মন্দির গড়ে দেন। মনে করা হয়,মন্দিরটি ৩০০ বছরেরও পুরানো। বর্তমানে মন্দিরের এক পাথরে গায়ে ১১১০ সাল লেখা আছে। মানে এই লেখা অনুযায়, কালীমন্দির তৈরি হয়েছিল ১৭০৩ খ্রিস্টাব্দে। ১৮০৩ খ্রিস্টাব্দে নয়।
কেন ঠনঠনিয়া ?
পুজোর সময় জঙ্গলের মধ্য থেকে বেরিয়ে আসতো ঘন্টাধ্বনি।শোনা যেত ঠনঠন-ঠনঠন শব্দ। সেখান থেকেই লোকের মুখে মুখে এই মন্দিরের নাম হয়ে ওঠে ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি। এখানে মাকে গান শোনাতেন আসতেন স্বয়ং কিশোর গদাধর চট্টোপাধ্যায়। পরবর্তীকালে গদাধর, শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস হয়ে গেলেও মাকে দেখতে আসতেন ভুলতেন না তিনি।
আরও পড়ুন: এবার থেকে দীপাবলির ছুটি নিউইয়র্কেও!
এই কালীবাড়িটি অবস্থিত কলকাতার বিধান সরণি রোডে। মঙ্গল ও শনিবার মন্দিরে যাওয়ার জন্য শুভ বলে মনে করা হয়। ঠনঠনিয়া কালীবাড়িতে জ্যৈষ্ঠ মাসে ফলহারিণীর পুজো, কার্তিক অমবস্যায় আদিকালীর পুজো ও মাঘ মাসে রটন্তী কালীর পুজো হয়। বর্তমানে শঙ্কর ঘোষের বংশধররাই এখনও মন্দিরের দেখভাল করছেন। মূলত কার্তিক অমাবস্যায় এই মন্দিরে ঘটাকরে পুজো হয় দেবী সিদ্ধেশ্বরী।
আরও পড়ুন: চোখ রাঙাচ্ছে সিতরাং, বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ নবান্নের
Leave a Reply