ইউ এন লাইভ নিউজ: কোটা সংরক্ষণ নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সর্বোচ্চ আদালতের ফল ঘোষণা পর্যন্তও তর সইলো না। একের পর এক আন্দোলন করেই চলেছে ছাত্রছাত্রীরা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী একটি সভা থেকে জানান শীর্ষ আদালতের রায় বেরোনো পর্যন্ত যেন ছাত্র ছাত্রীরা ধৈর্য ধরেন। কিন্তু সেই কথার তোয়াক্কা না করেই ফের আন্দোলনে নেমে যায় ছাত্র ছাত্রীরা। কোটা আন্দোলনে নামার পর প্রশাসনের তরফ থেকে বার বার বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার পরেও থেমে থাকেনি পড়ুয়ারা। আর তার মধ্যেই ঘটে যায় এক ভয়াবহ মৃত্যুর ঘটনা। এক ছাত্র পুলিশের গুলিতে মারা যায় এবং সেই ভিডিও ভাইরাল হয় সারা সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছাত্রের এই মৃত্যুর পর আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পড়ুয়ারা। বুধবার অর্থাৎ ১৭ জুলাই সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে হাসিনার দেওয়া এই আশ্বাসের পরেও থামছে না আন্দোলন।
বুধবার রাতেও ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। ঢাকার যাত্রাবাড়ীর হানিফ ফ্লাইওভারে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিতে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ‘কমপ্লিট শাটডাউন’এর ডাক দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে এই শাটডাউন। এই অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঢাকা সহ সারাদেশে ২২৯ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলা আন্দোলন ইতিমধ্যেই হিংসার আকার নিয়েছে। সোমবার এবং মঙ্গলবার ঢাকা সহ সারাদেশে আন্দোলনকারী এবং ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় মারা যান ৬ জন। তারপরেই সবাইকে ধৈর্য ধরার আবেদন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। মৃত্যু ঘটনার পর কোটা বিরোধী ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং অন্যান্য দাবিতে বৃহস্পতিবার সারা দেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ পালন করার ডাক দিয়েছে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। তাদের এই কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শনির আখড়া এলাকায় পড়ুয়াদের আন্দোলনে পুলিশের ছররা গুলিতে দু’বছরের শিশুসহ অন্তত ৬জন গুলিবিদ্ধ এবং আহত হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এডিসি আলাউদ্দীন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শনির আখড়ায় অতিরিক্ত পুলিশ গেলে ‘হামলাকারী’দের সঙ্গে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে সংঘাত চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। সেই সঙ্গে যাত্রাবাড়ীর হানিফ ফ্লাইওভারে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিতে সিয়াম (১৮) নামে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। ভোলার চরফ্যাশনের বাসিন্দা সিয়াম থাকতেন ঢাকার মাতুয়াইলে। তিনি গুলিস্তানের একটি ব্যাটারির দোকানের কর্মচারী। রাতে বাড়ি ফেরার পথে হানিফ ফ্লাওয়ারে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান সিয়াম।
Leave a Reply