ইউ এন লাইভ নিউজ: বুধবার সকালে কৃষ্ণনগরে এক তরুণীর অর্ধনগ্ন, অর্ধদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। সেখানকার স্থানীয়েরাই দেহটি রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পরিবারের অভিযোগ, দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে। আঙুল ওঠে তরুণীর প্রেমিকের দিকে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্তে নেমে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে কৃষ্ণনগরকাণ্ডে তরুণীর প্রেমিকের মা পুত্রকে নির্দোষ বলেই দাবি করলেন। শুধু তা-ই নয়, মঙ্গলবার অর্থাৎ ঘটনার দিন তাঁর পুত্র সারা দিন কোথায় ছিলেন, কখন বাড়ি ফিরেছিলেন, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণও দিলেন। যদিও ‘নির্যাতিতা’ তরুণীর মায়ের দাবি, অভিযুক্তের মা অসত্য বলছেন।
তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত যুবক এবং তাঁর বাবা-মাকে দফায় দফায় আলাদা আলাদা ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। আলাদা আলাদা ভাবে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য নিয়ে ফের তিন জনকে মুখোমুখি জেরা করা হয়। সেই তথ্য মিলিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা। এরপরে বুধবার গভীর রাতে কৃষ্ণনগরের কোতোয়ালি থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় অভিযুক্ত যুবকের মা-বাবাকে। ছেলেকে নির্দোষ দাবি করেন তাঁর দু’জনেই। যদিও এ প্রসঙ্গে পুলিশ সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্য করেনি।
পুত্রের গতিবিধি সম্পর্কে বলতে গিয়ে অভিযুক্ত যুবকের মায়ের দাবি, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ তাঁর পুত্র বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বাড়ি ফিরে আসেন। মায়ের দাবি, ছেলে তাঁকে জানিয়েছিলেন, তিনি সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন। এর পর সামান্য কিছু খেয়ে ছেলে ঘুমিয়ে পড়েন। প্রেমিকের মায়ের দাবি, রাত ৮টা নাগাদ তরুণীর মায়ের ফোন আসে তাঁর ছেলের মোবাইলে। তরুণীর মাকে পরে ফোন করার কথা বলেন তাঁর ছেলে সেইমতো রাত ১০টা নাগাদ তরুণীর মা আবার ফোন করেন। তাতে ঘুম ভাঙে তাঁর ছেলের। এর পরেই তাঁর ছেলে তরুণীর মাকে ফোন করেন। ফোনে কথা বলার পরেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। ঘণ্টাখানেক পর বাড়ি ফিরে আসেন। তার পর শুতে চলে যান। যদিও অভিযুক্ত যুবকের মায়ের এই দাবিকে নস্যাৎ করে তরুণীর মায়ের পাল্টা দাবি, তাঁর কন্যা ওই বাড়িতে রয়েছে বলে ফোনে দাবি করেছিলেন ধৃত যুবক। ওই যুবকের মায়ের কথায় অসঙ্গতি রয়েছে বলেও দাবি করেছেন তরুণীর মা।
এই ঘটনায় ‘নির্যাতিতা’র মা সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘নিরপেক্ষ তদন্ত এবং যথোপযুক্ত সাজার জন্য মেয়ের খুনের তদন্ত করুক সিবিআই। সম্ভবত বৃহস্পতিবারই আইনজীবীর মাধ্যমে কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন জানাব। প্রয়োজনে বাড়ি বিক্রি করে এই লড়াই চালাব।”
তবে পুলিশ সুপার অমরনাথ কে বলেছিলেন, ‘‘তরুণীর মৃত্যুর নেপথ্যে ধর্ষণ না কি আত্মহত্যা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Leave a Reply