নিউজ ডেস্ক- রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকেই ধীরে ধীরে বিশ্বের কূটনৈতিক সম্পর্কের সমাকরণ বদলাতে শুরু করেছে। ভারতও ধীরে ধীরে কখনও নরম, কখনও গরম সুরে বার্তা দিচ্ছে। আমেরিকা, চিন, রাশিয়া এই ত্রি শিবিরের কূটনৈতিক মহলে চাপা উত্তেজনা রয়ে গিয়েছে।
হালের কয়েকটি ঘটনা, বিশ্ব নজরে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলে ধরেছে, যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সম্প্রতি যে ঘটনাটি ঘটেছে তা হল, রাশিয়া থেকে তেল যাতে ভারত না কেনে, তার জন্য এক অদ্ভুত প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে আমেরিকার তরফে। বলা হয়েছে, ভারত যদি রাশিয়ার পরিবর্তে ইরান এবং ভেনেজুয়েলা থেকে তেল কিনলে আমেরিকার কোনও আপত্তি থাকবে না।
জি -৭ দেশগুলির পরিকল্পনা হচ্ছে, রাশিয়া যাতে কোনও ভাবেই উপার্জন না করতে পারে। উপার্জন বন্ধ হলেই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ থামাতে বাধ্য হবে। তাই জি -৭ দেশগুলি বিশ্বের সমস্ত দেশের কাছে বার্তা দিতে চাইছে, যারা রাশিয়ার থেকে তেল বা গ্যাস কেনে, তারা যেন ‘অয়েল প্রাইস ক্যাপ’ শর্ত রাখে রাশিয়ার কাছে।
অন্যদিকে রাশিয়াও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের ক্রেতা যেন ছেড়ে না যায়। আবার যে দেশগুলি রাশিয়াকে বয়কট করার চেষ্টা করছে, রাশিয়া তাদের ট্রোলও করতে শুরু করেছে। রাশিয়ার একটি সরকারি সংস্থা গ্যাসপ্রোম ভিডিও জারি করে বার্তা দিয়েছে, খুব তাড়াতাড়ি শীত আসছে। আর তোমরা শীত সহ্য করতে পারবে না। ইতিমধ্যে এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরালও হয়েছে।
অর্থাৎ রাশিয়ান গ্যাসের সোর্স ছাড়া, পশ্চিমী বহু দেশ বাড়িঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে না। যদিও জি ৭ দেশগুলি নিজেদের জায়গায় অনড়। তাই রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘অয়েল প্রাইস ক্যাপ’ লাগানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।
‘অয়েল প্রাইস ক্যাপ’ কি ?
জি-৭ দেশগুলির দাবি, বিশ্বের সমস্ত দেশ, একত্রিত হয়ে রাশিয়ার কাছে চাপ সৃষ্টি করুক, যে একটি ফিক্সড মূল্যে তারা তেল নিতে চায়। আর সেই ফিক্সড রেট নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঠিক করবে ক্রেতা দেশগুলি। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়লেও, রাশিয়ার ক্ষেত্রে সেই তেলের মূল্য কার্যকর হবে না। চুক্তি অনুসারে ফ্রিক্সড প্রাইসে দিতে হবে।
এদিকে রাশিয়ার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যে দেশ, ‘অয়েল প্রাইস ক্যাপ’ শর্তে তেল কিনতে চাইছে, তাদের তেল বিক্রি করবে না রাশিয়া। রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সেরগেই লেভরভ আত্মবিশ্বাসী সুরে জানিয়ে দিয়েছিলেন, জি ৭ দেশগুলি যা চাইছে, তাতে বহু দেশ সমর্থন করবে না।
যদিও ভারতের তরফে কোনও পক্ষকেই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি, বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি বিচার করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
Leave a Reply