সোমনাথ পাঁজা: বেকারত্বের পরিসংখ্যানে আবারও শিরদাঁড়া দিয়ে হিমশীতল স্রোত নামল। এক দিকে সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি বা সিএমআইই-র তথ্য বলেছে, ভারতের বেকারত্বের হার অগস্টে এক বছরের সর্বোচ্চ ৮.৩ শতাংশে পৌঁছেছে৷ অন্যদিকে কর্মসংস্থান ২ মিলিয়ন কমে ৩৯৪.৬ মিলিয়নে এসে দাঁড়িয়েছে। জুলাই মাসে, বেকারত্বের হার ছিল ৬.৮শতাংশ এবং কর্মসংস্থান ছিল ৩৯৭ মিলিয়ন।
সিএমআইই-এর এমডি মহেশ ব্যাস এই বিষয়ে জানান, শহরে বেকারত্বের হার সাধারণত গ্রামের বেকারত্বের থেকে কিছুটা বেশি৷ অগস্ট মাসে শহরে বেকারত্বের হার ৯.৬ শতাংশে পৌঁছয় এবং গ্রামীণ বেকারত্বের হারও ৭.৭ শতাংশে পৌঁছেছে। তিনি এই প্রসঙ্গে আরও বলেন, গ্রামীণ ভারতে বেকারত্বের হার জুলাই মাসে ৬.১ শতাংশ থেকে অগস্ট মাসে ৭.৭ শতাংশে পৌঁছেছে। আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এই যে কর্মসংস্থানের হার ৩৭.৬ শতাংশ থেকে ৩৭.৩ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে গ্রামীণ বেকারত্বের হার আগামি দিনে কমতে পারে৷ তথ্য থেকে আরও স্পষ্ট, অগস্ট মাসে হরিয়ানায় বেকারত্ব সর্বাধিক ছিল ৩৭.৩ শতাংশ। জম্মু ও কাশ্মীরে ৩২.৮ শতাংশ। রাজস্থানে ৩১.৪ শতাংশ। ঝাড়খণ্ডে ১৭.৩ শতাংশ এবং ত্রিপুরায় ১৬.৩ শতাংশ ছিল৷ যদিও ছত্তিশগড়ে বেকারত্বের হার সর্বনিম্ন ছিল ০.৪ শতাংশ। মেঘালয়ে ২ শতাংশ। মহারাষ্ট্রে ২.২ শতাংশ এবং গুজরাট ও ওড়িশায় ২.৬ শতাংশ। পশ্চিমবাংলায় ৭.৪ শতাংশ।
বিভিন্ন সংস্থার একাধিক সমীক্ষায় বার বার উঠে এসেছে যে, কাজ খুঁজতে গিয়ে সব থেকে বেশি ধাক্কা খেয়েছেন শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা। মোদী সরকারের আমলে গালভরা কথা অনেক হয়েছে। কাজের কাজ সেই তুলনায় যৎসামান্য। দেশে বিনিয়োগ প্রায় হচ্ছে না, কৃষি গভীর সঙ্কটে, সরকারি চাকরি প্রায় নেই। এই অবস্থায় নোট বাতিল এবং জিএসটি, অসংগঠিত শিল্পের বিপুল ক্ষতি করেছে। অসংগঠিত ক্ষেত্রে যেহেতু নগদনির্ভর লেনদেন হয়, নোট বাতিলের পরে বহু সংস্থা বন্ধ হয়ে যায়, বহু মানুষের চাকরি চলে যায়, পরিযায়ী শ্রমিকরা গ্রামে ফিরে আসতে বাধ্য হন। অন্য দিকে, জিএসটি ছোট ব্যবসায়ীদের কোমর ভেঙে দেয়। তার ওপর আবার করোনার ভয়াবহ অভিঘাত। ক্ষমতায় আসার আগে মোদী দেশের যুবসমাজকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন যে তিনি ক্ষমতায় এলেই কর্মসংস্থানের সমস্যা দূর হবে, বছরে এক কোটি চাকরি হবে। দেখা যাচ্ছে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সঙ্কুচিত হয়ে চলেছে। বিরোধীরা কি কোনও বিকল্প নীতির সন্ধান দিতে পারবেন?
Leave a Reply