নিউজ ডেস্ক : “চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির,জ্ঞান যেথা মুক্ত,যেথা গৃহের প্রাচীর”-এই কথাকেই আরও একবার প্রমান করে দিল ইরানের নাগরিকরা। প্রতিবাদের রাজ পথ এবার পৌঁছেছে খেলার মাঠে। খেলা যে শুধুই বিনোদনের জন্য নয়,তা বারবারই বিভিন্ন ভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর হাত থেকে বাঁচবার চেষ্টাও চলেছে অনেকবার। এরই পাশাশাশি এও সত্যি যে,খেলার মাঠে প্রতিবাদ এর আগেও হয়েছে। যতবারই প্রতিবাদ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, ততবারই শাসকের পায়ের তলার মাটি নড়ে উঠেছে। এরই আর এক নজির দেখা গেল ২০২২-এর বিশ্বকাপের মাঠে।
যেমন একদিকে কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে মেতে রয়েছেন সারা দুনিয়া। তারই মধ্যে বিশ্বকাপের মঞ্চে মধ্যমণি হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াল ইরানের সম্মিলিত প্রতিবাদ। অবাক চোখে গোটা বিশ্ব দেখলো, প্রতিবাদের নয়া দৃষ্টান্ত। হ্যাঁ,এভাবেও হয়…
ইরানের ফুটবলাররা গলা মেলাচ্ছেন না জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে। বজায় রেখেছেন মৌনতা,তারই সঙ্গে ইরানের সমর্থকেরাও কুলুপ এঁটেছেন। এদেশের কঠোর মৌলবাদী ইসলামিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই এই পদক্ষেপ ফুটবলারদের। দুনিয়ার দরবারে এই নজর কারা প্রতিবাদের উদ্যোগ দেখে সত্যি লোম খাড়া হয়ে গেল সবার। প্রতিবাদটা এখন আলাদা করে নারী বা পুরুষের নয়। সমস্যাটা এখন ‘জাতীয়’।
কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয় হল, প্রতিবাদকারীরা জানেন কাতারে দাঁড়িয়ে ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর পর তাঁদের ফিরতে হবে স্বদেশে। তাঁদের ভীত মন জানে,তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছে মারাত্মক কিছু, তারপরেও তাঁরা পিছু সরেননি।
আরও পড়ুন : কোভিডের বিপদ কি পুরোপুরি কেটেছে? চিন্তা বাড়াচ্ছে বুস্টারে অনাগ্রহ
ইরানে মাস দুয়েক আগে হিজাব না পরার অপরাধে মাহশা নামক এক তরুণীকে নীতিপুলিশ আটক করেছিল এবং পুলিশ হেফাজতেই মৃত্যু ঘটে তরুণীর। তারপর থেকেই প্রতিবাদের আগুন ছড়িয়েছে ইরান জুড়ে। প্রতিবাদ শুধু ইরানেই আটকিয়ে নেই,এর আঁচ পড়েছে গোটা বিশ্বে। বিশ্বকাপের মাঠেও দেখা গিয়েছে দুঃসাহসী সব পদক্ষেপ। কারোর গায়ে মাহশার নামের জার্সি, আবার বহু ইরানি নারী চুল খুলে বসে রয়েছে স্টেডিয়ামে। এটাই তাঁদের প্রতিবাদের ভাষা !
আরও পড়ুন : বিশ্বকাপে লজ্জার হার, মুহূর্তের মধ্যে মাঠের ক্ষোভ নেমে এল বেলজিয়ামের রাস্তায়