ইউ এন লাইভ নিউজ: মিটে গেছে তৃতীয় দফার লোকসভা নির্বাচন। এই দফায় যে কেন্দ্রেকে ঘিরে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রশ্নে উদ্বিগ্ন ছিল রাজনৈতিক মহল সেই ‘জঙ্গিপুর’-র নির্বাচন মোটের ওপর শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হল। এই সফলতার কারণ হিসেবে মনে করাবঙ্গে হচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সক্রিয় উপস্থিতি।
বিজেপি কেন্দ্রীয় বাহিনীর আরও বেশি তৎপরতা দাবি করলেও, কেন্দ্রীয় বাহিনীর এই ভূমিকায় বেশ সন্তুষ্ট তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেস। সুতি থেকে লালগোলা, সাগরদিঘি থেকে খড়গ্রাম জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের ১৮৫১টি বুথের প্রতিটি বুথেই এ বারে ছিল পর্যাপ্ত সংখ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। তাই ভোট লুট, ছাপ্পা ভোট ইত্যাদি ঘটনা প্রায় প্রায় রুখে দিতে পেরেছিলেন তাঁরা। খুবই বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া শান্তিই বজায় থাকল সারা জঙ্গিপুর জুড়ে। জঙ্গিপুরের এই শান্ত স্বভাবে ভীষণ খুশি সেখানকার ভোটাররাও। তাঁদের মতে, গত বিধানসভাতেও কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা সত্ত্বেও দেদার ছাপ্পা পড়েছিল কিন্তু এবারের লোকসভাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী সক্রিয় অবস্থান বুথে অবাঞ্ছিত প্রবেশ আটকাতে সক্ষম হয়েছে।
বুথে বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও সাগরদিঘির নির্বাচনের দিনের মতো তাঁদের সক্রিয়তা না থাকায় বেশকিছু বুথের বাইরে নজরে আসে বিধি ভেঙে জমায়েত। তার ফলে কিছু বিচ্ছিন্ন অশান্তিরও সৃষ্টি হয়। তবে নির্বিঘ্নে ভোট সম্পন্ন করার জন্য পুরোদমে চেষ্টা চালিয়ে গেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। রাজ্য পুলিশও নির্বাচনের দিন নাকা চেকিং, কোনও গন্ডগোলের স্থলে তাড়াতাড়ি পৌঁছে যাওয়ার মাধ্যমে তৎপরতা বজায় রাখে।
ভোটের দিন সকালে বুথের ৫০ মিটারের মধ্যে মীরেরগ্রামের এক বুথে বিজেপি প্রার্থী ও তৃণমূলের ব্লক সভাপতির মধ্যে ধস্তাধস্তি ঘটে, জঙ্গিপুর পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বুথের মধ্যে ভোটদান কক্ষের পাশে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে সাহায্য করার নামে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। বহু বুথের সামনেই নির্দিষ্ট ব্যবধান মেনে শিবিরের দেখা মেলেনি সব রাজনৈতিক দলেরই। তবে জঙ্গিপুর লোকসভা নির্বাচনে কোথাও এ বারে বোমা পড়েনি, গুলিও চলেনি এবং কোনও বড় অশান্তিও ঘটেনি।
জঙ্গিপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী খলিলুর রহমানের বক্তব্য, ‘‘দু’একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণ ভাবেই ভোট হয়েছে। তাতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা ছিল।’’ এদিনের ভোটে সিপিএমের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য জ্যোতিরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও খুশি। তিনি বলেন, “সাগরদিঘি মডেলে না হলেও বুথের মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের উপস্থিতির কারণে ভোট লুঠ বন্ধ করা গিয়েছে। তবে রাজ্য পুলিশের কর্মীরা কাবিলপুরে বিরোধীদের হুমকি দিয়েছেন বলে শোনা গেছে। তবে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবেই ভোট দিতে পেরেছেন।’’