ইউ এন লাইভ নিউজ: ওয়াংখেড়েতে শেষমেশ কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিজয়-পতাকা উড়ল। এক যুগ পর এই মাঠে জয় পেলেন শাহরুখের ‘বাজিগর’-রা। হার্দিক পাণ্ড্যর মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে ২৪ রানে তাদেরই ঘরের মাঠ তথা দুর্গ ওয়াংখেড়েতে হারাল কেকেআর।
কেকেআর এবং এমআইয়ের মুখোমুখি ম্যাচের রেকর্ড মোটেই ভালো নয় কেকেআরের পক্ষে। ৩২টি ম্যাচের মধ্যে মুম্বাই জিতেছে ২৩টি এবং কলকাতা মোটে ৯টি। তার মধ্যে ওয়াংখেড়েতে শেষ জয় এসেছিল ২০১২ সালে। ঠিক যে বছরেই কলকাতার মালিকের সাথে মাঠের নিরাপত্তারক্ষীর বচসা ঘটে। কিন্তু সেই বছরই বিতর্কের বিষাদের সঙ্গে শেষবারের জন্য কলকাতার ফ্যানেদের জন্য এসেছিল ওয়াংখেড়ে-তে জয়ের স্বাদ। তারপর শেষমেশ তাদের ১২ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটল গতকাল।
ব্যাটিংয়ে যদিও কাল ভালো ফর্মে দেখা যায় নি নাইটদের। পুরো ২০ ওভার পর্যন্ত খেলতে পারেন নি তাঁরা। ১৯.৫ ওভারেই ১৬৯ রানে অল-আউট হয়ে যান তাঁরা। প্রথমে মনে হয়েছিল, আরও কম রানে গুটিয়ে যাবে কেকেআরের ইনিংস। কিন্তু ভেঙ্কটেশ আইয়ার এবং মনীষ পান্ডে-র পার্টনারশীপের ভিত্তিতে একটি সম্মানজনক স্কোরে পৌঁছায়।
তারপর বোলিংয়ে শুরু থেকে শেষ অবধি ম্যাচ ধরে রাখে কেকেআর। বিশেষ করে কেকেআরের দুই স্পিনার সুনীল নারিন আর বরুণ চক্রবর্তী এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। দুই স্পিনার ৮ ওভার বল করে মাত্র ২২ করে দিয়ে তুলে নেন দুটি করে উইকেট। তবে ১৫তম ওভারে বৈভব অরোরার বলে সূর্যকুমার যাদব ২০ রান তুলে নেওয়ায় ডাগ-আউটটে গম্ভীরের ভ্রুকুটি নজর করার মত ছিল। তারপর রাসেল নিজের প্রাক্তন কেকেআর সতীর্থকে আউট করার পরে ১৯তম এবং নিজের শেষ ওভারে এসে মিচেল স্টার্ক টিম ডেভিড, পিয়ুষ চাওলা এবং জেরাল্ড কোটজে-কে আউট করে কেকেআরকে জয়ের পথে বিরাজমান করেন। স্টার্ক এই ম্যাচে পেলেন ৪ উইকেট এবং সেই পুরানো ছন্দে আবার দেখা গেল তাঁকে। আইপিএলের সবচেয়ে দামী ক্রিকেটারের ফর্ম নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। ২৪ কোটির স্টার্ক এবারের আইপিএলে তেমন নজর কাড়তে প্রথম থেকেই পারেন নি। তাঁকে এত মূল্য দিয়ে দলে নেওয়ার জন্য কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্টকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় ক্রিকেট বিশ্বের কাছে। সেই স্টার্কের-ই পরপর তিনটি উইকেট ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। স্টার্কের এই পারফর্মেন্স গতকালের ম্যাচের জয়ের ভিত গড়ে দেয়। তাছাড়াও ব্যাটিংয়ের পর এবার বোলিংয়েও পরপর দুটি ম্যাচে কেকেআর মেলে ধরল নিজেদের।
ম্যাচ জেতার পর খুশিতে গৌতম গম্ভীরের অভিষেক নায়ার-কে জড়িয়ে ধরা অনেককিছু প্রমাণ করে। এই কেকেআর ২০১২-র মতো ওয়াংখেড়ে-তে এসে চোখে চোখ রেখে লড়াই করে জিততে জানে। সেই বছর কলকাতা নাইট রাইডার্স নিজের ক্যাম্পেন শেষ করেছিল ট্রফি জিতে আর সেই দলের ক্যাপ্টেন ছিলেন গম্ভীর তো সেই গম্ভীরের মেন্টরশীপে কি এবার ১০ বছর পর ট্রফির খরা মেটাতে পারবে? সেই দিকেই চোখ থাকবে সকল ভক্তের!