ডেস্ক- ভারতীয় পুরাণ মতে মোট তেত্রিশ কোটি দেবদেবীর পুজো করা হয়। (এখানে কোটি অর্থে উচ্চ মার্গের)। এ ছাড়াও, বহু দেবদেবী রয়েছেন, অবতার রয়েছেন যাঁদের পুজো করা হয়। কিন্তু এভারতেই এমন এক মন্দির রয়েছে, যেখানে পূজিত হন স্বয়ং শকুনি। হ্যাঁ সেই গান্ধার নরেশ শকুনি তথা কৌরবদের মামা। কি! চমকে উঠলেন?

ভারতের প্রাচীন পৌরাণিক গাথায়, নানা গল্পকথা, কাহিনি, কিংবদন্তী লুকিয়ে আছে। আর তার বৈচিত্র্য এতো বেশি যে সারা ভূ বিশ্বে আর কোথাও নেই। এখন প্রশ্ন, একজন খলনায়ক পুজো করার রীতি কী করে আসে?

আমরা অনেকেই জানি, এই ভারতেই কাঁকিনাড়ায় পুজিত হন, রামায়ণের খলনায়ক রাবণ। একটা অংশের মানুষ পুজো করে থাকেন। যেখানে সারা ভারত রাবণ বধ উত্সব পালন করেন, তখন সেই মন্দিরে পুজিত হন রাবণ।

ঠিক তেমনই, মহাভারতের অন্যতম খলনায়ক শকুনিও পুজিত হন কেরালার কোল্লাম জেলার পবিত্রেশ্বরমে। মন্দিরের পোশাকি নাম, মায়ামকট্টু মালাঞ্চারুভু মালানাদা।

স্থানীয় কিংবদন্তী থেকে জানা যায়, এখানে বসেই দেবাদিদেব মহাদেবের কাছে কঠোর তপস্যা করেছিলেন শকুনি। লোকগল্প আরও আছে, পাণ্ডবেরা যখন নির্বাসনে ছিল, কৌরবেরা এখানে এসেছিলেন পাণ্ডবদের খোঁজে।

এখানে একটি সম্প্রদায় রয়েছে, যাঁরা মনে করেন, তাঁরা কৌরবদেরই উত্তরসুরী। শকুনি ছল কৌশলে পাণ্ডবদের হাত থেকে তাদের বাঁচিয়ে এখানে এনেছিলেন।

মহাভারত মতে, পাঠকেরা শকুনিকে দেখেন একজন ধূর্ত ব্যক্তি হিসেবে। কিন্তু তার ছল কপটতার পিছনে যে অভিসন্ধি ছিল, তা যে অমূলক ছিল না একটা অংশের মানুষ মনে করেন। ভীষ্ম এবং কৌরব বংশের শেষ দেখতে চেয়েই শকুনি যুদ্ধের ইন্ধন জুগিয়েছিলেন। তাই স্থানীয়রা মনে করেন, শকুনি সবার কাছে ধূর্ত হলেও, তাদের কাছে তিনি ছিলেন রক্ষক।

এই মন্দিরে, আর পাঁচটা মন্দিরের মতো পুজো হয় না। নেই কোনও শকুনির জন্য আলাদা সংস্কৃত মন্ত্র বা তন্ত্র। তবে এখানে দান করা হয়, সুরা, সিল্কের কাপড় এবং নারকেল। আর স্থানীয় ভাষাতেই মঙ্গলকামনা করা হয়। এই মন্দিরের কিছু দূরে আছে দুর্যোধনের নামে উৎসর্গীকৃত আর এক মন্দির।