মকর দেবের অন্তর্ধান : সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেল বাবিয়া !!

নিউজ ডেস্ক : বাবিয়া আর নেই ! কে সে? কোথা থেকে এসেছিল? কেনই বা তাকে নিয়ে হচ্ছে খবর ? অনেকের মতে বাবিয়া ছিল পৃথিবীর একমাত্র কুমির, যে অদ্ভুত ভাবে আমিষ খাবারে রুচি রাখতো না !

সোমবার সকাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার ছড়িয়ে পড়ে , এই খবর । উত্তর কেরলের কাসারগড়ের এক বিখ্যাত মন্দির অনন্তপুরায়ে থাকতো বাবিয়া। তাঁর এই আচমকা মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে মন্দির সহ গোটা এলাকাবাসী। এক ভয়ংকর, মাংসাশী প্রানীর সাথে এক আশ্চর্য মায়ার সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল এখানকার মানুষদের। এক সময় বাবিয়ার কারনেও এই মন্দিরের নাম অনেকে জানতে পেরেছিলেন। মন্দিরের পুরোহিত ও বাবিয়ার সম্পর্ক তৈরি করেছিল এক নজির। শুধু কুকুর নয় ,ভালোবাসলে পোষ মানতে পারে যে কোনও প্রানী । সবার স্মৃতিতে এবং স্থানীয়দের লোককাহিনিতে থেকে যাবে বাবিয়া ।

হিন্দু ধর্মে ‘মকর’ গঙ্গা ও বরুণের বাহন। এছাড়াও মকর হিন্দুদের প্রেম ও কামনার দেবতা কামদেবের প্রতীক। লোকেরা একে কুমিরও বলেন।
বছর দুই আগে হঠাৎ একদিন কেরলের মন্দিরের ভিতরে ঘুরতে দেখা যায় তাঁকে । আচমকা মন্দিরে কুমিরের দর্শনে ঘাবড়ে যান সবাই । তবে শোনা যায়, এই কুমির নাকি এতটাই বাধ্যছিল যে মন্দিরের প্রধান পুরোহিত আদেশানুসারে , এক কথায় পুকুরে জলে চলে গিয়েছিল সে । আবার ‘বাবিয়া বাবিয়া’ বলে ডাকলে সে নাকি জল থেকে উঠেও আসত ডাঙায়। এতেই এই কুমিরকে নিয়ে ছড়িয়ে পড়ে খবর !

আরও পড়ুন : অমিতাভ বচ্চনের ৮০ তে পা, দেশ জুড়ে যেন ‘বিগ বি’ উৎসব

কিন্তু প্রশ্ন হল এই কুমিরটি এল কোথা থেকে ? শোনা যায় মন্দিরের পুকুরে কোনও দিনই কুমির ছিল না কোনও । উত্তর কেরলের কাসারগড়ে, এক সময়ে বহু সার্কাসের দল ছিল। অনেকেই মনে করেন , তেমনই কোনও সার্কাসের দলছুট হয়ে ছানা কুমিটি এই পুকুরে আসে, এবং এখানেই বড় হতে থাকে । কিছু বাসিন্দাদের দাবি, এই নিরামিষাশী প্রাণীটি নাকি ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাস করত মন্দিরের পুকুরে।

কিন্তু আসল খবর হল, বাবিয়ার খাদ্য রুচি সমন্ধে। কুমির শুনলেই মনে আসে ভয়ঙ্কর ,দাঁতালো, মাংসাশী প্রানীর কথা। তবে ইনি ছিলেন শান্ত-শিষ্ট।অনেকের মতে বাবিয়া শাপভ্রষ্ট কুমির,তাই তাঁর মধে কুমিরের কোনও লক্ষণ নেই । আবার অনেকে মজা করে বলেন,বাবিয়া নাকি ধার্মিকও ছিল । তাইত আমিষ খাবারের প্রতি লোভ ছিল না তাঁর। মন্দিরের যে প্রসাদ হত, তাই তাকে খেতে দেওয়া হত। মন্দিরের পুরোহিতরাও মান্যিগণ্যি করত কুমিরটিকে। মন্দিরের পুরোহিতরা তাকে ভাতের দলা দিতেন। এক আশ্চর্য তান দেখা যেতত্তাদের মধ্যে। তাই জন্যই হয়ত পুরোহিতরা খাবার খাইয়ে দিত ববিয়াকে । এমনকি যে পুকুরে বাবিয়া থাকত, সেই পুকুর ভর্তি মাছে থাকত, তাও কোনও দিন মাছেদের ওপর হামলার কোনও খবর পাওয়া যায়নি। এত দিনের মায়ার বাধন কাটিয় ছলে গেল বাবিয়া, রেখে গেল শুধু স্মৃতি !

আরও পড়ুন : প্রবল বিস্ফোরণে উড়ল বাড়ির ছাদ! পাঁশকুড়ার ঘটনায় নিহত ২, আহত বহু, মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা