C.V.ANAND BOSE

C. V. Ananda Bose: রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীতহানির অভিযোগ: রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজ চাইল লালবাজার

ইউ এন লাইভ নিউজ : রাজ্যপাল সি. ভি. আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন রাজভবনেরই এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী। লোকসভা ভোটের মাঝে এহেন ঘটনা রাজ্য-রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দিয়েছে। লিখিত অভিযোগ দায়ের না হলেও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ওঠা শ্লীলতাহানির প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করে দিল কলকাতা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল। রাজভবনের ওসির কাছে রাজবভনের সিসিটিভি ফুটেজ তলব করল আট সদস্যের তদন্তকারী দল। কলকাতা পুলিশের ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছে এই দল।

ওই মহিলা কর্মী বোসের বিরুদ্ধে একবার নয় দুবার তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি বৃহস্পতিবার হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ করেন বলে খবর। সাংবিধানিক প্রধানের বিরুদ্ধে এহেন অভিযোগে রাজ্য-রাজনীতি তোলপাড়। এবিষয়ে কড়া সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা। এ নিয়ে রাজ্যপালকে নির্বাচনী সভা থেকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী,”ওই মেয়েটি রাজভবনে চাকরি করত ,তার প্রতি এ কেমন ব্যবহার করলেন রাজ্যপাল?” তৃণমূল নেত্রী আরো বলেন ,”আমার কাছে আরও অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে। কালকের মেয়েটির কান্নায় আমার বুক ফেটে গিয়েছে”। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর রাজভবনে থাকা নিয়ে কথা শোনাতেও ছাড়েন নি। তিনি বলেন,”উনি যে কাল রাতে এখানে থাকলেন সেই ব্যাপারে তো কিছু বললেন না ?”

পাল্টা মন্তব্য করেছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। শনিবার নিউ টাউনের ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে জবাব দিয়েছেন দিলীপ। পূর্ব বর্ধমানের বিজেপি প্রার্থীর কথায়, ‘‘পুরো স্ক্রিপ্ট তৈরি ছিল। ওরা একাই চেঁচাচ্ছে। সবাই জানে এর পিছনে কে আছে। তৃণমূল মহিলাদের সম্মান করে না। তাঁদের ব্যবহার করে। এখানেও এক জন মহিলাকে ব্যবহার করা হয়েছে। একজন সম্মানীয় ব্যক্তিকে কিভাবে অপমান করতে হয়, এরকম একটা অভিযোগ আনতে হয় তা তৃণমূল আরও একবার দেখিয়ে দিয়েছে। এই নিকৃষ্ট রাজনীতিই একদিন তাদের পতন করবে”।

বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছে কলকাতা পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যাতেও অনুসন্ধানকারী দলের সদস্যরা রাজভবনে যান। প্রয়োজনীয় প্রমাণ খোঁজা হয়েছে। বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে ঘটনা জানার চেষ্টা করা হয়েছে বলেও খবর। আর এরপরেই রাজভবনের সিসিটিভির ফুটেজ চেয়ে পাঠানো হয়েছে বলে খবর। রাজভবনের ওসি-কে এই বিষয়ে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেখানেই ফুটেজ জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। বেশ কিছু তথ্য খুঁটিয়ে দেখতেই সিসিটিভি-র ফুটেজ চাওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে রাজভবনে পুলিশের ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এমন দাবি করা হয়। লালবাজার সূত্রে খবর, সেই সংক্রান্ত কোনও নির্দেশিকা এখনও আসেনি বলেই খবর এবং তা আসলে কীভাবে তার মোকাবিলা করা হবে সেই বিষয়ে আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে বলে সূত্র মারফত খবর।

সংবিধান অনুযায়ী, কোনও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ফৌজদারি মামলা দায়ের করা যায় না। যখন তিনি রাজ্যপালের পদ থেকে অপসারিত হবেন তারপরই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের যাবতীয় তদন্ত করা যায়। সি.ভি. আনন্দ বোস একটি অডিও বার্তায় এ বিষয়ে মুখ খোলেন। চেন্নাই যাওয়ার আগে সেই অডিওবার্তায় তিনি জানান, তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে বা ষড়যন্ত্র হয়েছে তিনি তা মোকাবিলা করতে তৈরী। এছাড়াও তিনি বলেন,”আমি লড়তে জানি,পালতে নয়”।