ইউ এন লাইভ নিউজ: এখনও কাটেনি আর জি করের রেশ। জুনিয়র ডাক্তাররা আংশিক কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে ইমার্জেন্সি ডিউটিতে ফিরেছে। আর এই আবহেই শুক্রবার রাতে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয় সাগর দত্ত হাসপাতাল। অভিযোগ, রোগীর পরিবারের সদস্যেরা হাসপাতালের চার তলায় উঠে গিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলা চালান। ভাঙচুর করা হয় মহিলাদের ওয়ার্ডেও। এমনকি, মহিলা চিকিৎসকদের ঘর থেকে টেনে বার করে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। যার কারণে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। শুক্রবার রাতের ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চার জনকে গ্রেফতার করেছে কামারহাটি থানার পুলিশ। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সদর্থক পদক্ষেপ না পাওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। হাসপাতালে নিরাপত্তার দাবিতে শনিবার সকাল থেকে সরব হয়েছেন চিকিৎসক সহ নার্সরাও। সাগর দত্তের এমএসভিপির ঘরের সামনে স্লোগান তুলে বিক্ষোভ দেখান নার্সেরা। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক থাকলে রোগীর এত পরিজন এক সঙ্গে কী ভাবে হাসপাতালের উপরের তলে উঠলেন, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিক্ষোভরত নার্সেরা। হাসপাতালের এমএসভিপি সুজয় মিস্ত্রির কাছে নিজেদের দাবিদাওয়াগুলি তুলে ধরেন তাঁরা।
সংবাদমাধ্যমের সামনে ক্ষোভ উগরে নিয়ে সাগরদত্তের এক নার্সের প্রশ্ন, “কর্তৃপক্ষ বলছেন নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা দেওয়া হলে এত জন লোক উপরে উঠলেন কী করে?” পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। ঘটনার সময় পুলিশ কার্যত দর্শকের ভূমিকায় ছিল বলে দাবি ওই নার্সের। তিনি বলেন, “আমাদের যখন মারছিলেন (রোগীর পরিজনেরা), পুলিশকর্মীরা দূরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন।” শুক্রবার রাতের ঘটনার পর জুনিয়র ডাক্তারদের মতো নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন সাগর দত্তের নার্সেরাও। তাঁরা বলছেন, “আমরা চাকরি করতে এসেছি মানে এই নয় আমরা সাধারণ মানুষের হাতে মার খেতে এসেছি। আমরা মানুষকে পরিষেবা দিতে এসেছি। কিন্তু আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?” হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা বিষয়ক যে উদ্বেগ তার সঙ্গে সহমত সাগর দত্ত হাসপাতালের এমএসভিপি চিকিৎসক সুজয় মিস্ত্রিও। শুক্রবার রাতে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, “সব রোগী অমর হবেন, এটা ভাবা খুব অন্যায়। কোনও রোগী যদি ৫-৭ দিন ধরে অসুখে ভোগেন এবং মৃতপ্রায় অবস্থায় হাসপাতালে আসেন, তাঁকেও সুস্থ করে বাড়ি পাঠাতে হবে এমন ভগবান এখানে নেই। এখানে যাঁরা আছেন, তাঁরা ডাক্তার এবং নার্সিং স্টাফ। তাঁরাও মানুষ।”
পাশাপাশি নিরাপত্তা বিষয়ক দিকগুলিও দেখা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন এমএসভিপি। তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই নিরাপত্তার দিকটি দেখা হবে। সেই জন্যই চেষ্টা চলছে। এখানে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। চেঞ্জিং রুম অপর্যাপ্ত রয়েছে, এ কথা বলতে পারেন। তবে আরজি করের ঘটনার পর আমরা স্বাস্থ্য ভবন থেকে অনুমোদন পেয়েছি। কিন্তু নির্মাণকাজ তো রাতারাতি হয়ে যায় না। সেই কাজগুলো শুরু হবে।” শনিবার তাঁদের কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক রয়েছে। ওই বৈঠকের পরই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
Leave a Reply