গরমের ছুটিতে সিকিম গেলে ঘুরে আসতে পারেন অফবিট জায়গা গুলি

যাঁরা বেড়াতে যেতে ভালোবাসেন তাঁদের কাছে সিকিম একটি বেশ পছন্দের একটি জায়গা। তবে সিকিম ভ্রমণ মানে বেশিরভাগ পর্যটকের কাছেই উত্তর সিকিম ভ্রমণ। কিন্তু হিমালয়ের কোলে অবস্থিত এই ছোট্টো পাহাড়ি রাজ্যেও যে বেশ কয়েকটি অফবিট স্থান রয়েছে তার খোঁজ অনেকেই রাখেন না। চলুন আজ আলোচনা করি সিকিমের সেই অফবিট‌ জায়গাগুলো নিয়ে

ইয়ুমথাং: সিকিমের ইয়ুমথাং উপত্যকাটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩,৫৬৪ মিটার উপরে অবস্থিত। রাজধানী গ্যাংটক শহর থেকে প্রায় ১৪০ কিলেমিটার দূরে অবস্থিত ইয়ুমথাং ভ্যালি প্রকৃতিদেবীর আশীর্বাদ ধন্য একটি স্থান। তাছাড়া সিংপা রোডোডেনড্রনের অভয়ারণ্যের কোনও জবাব নেই। উপত্যকা জুড়ে শুধুই ফুল আর ফুল। পাউহুনরি এবং শুন্ডু সেংপা চূড়োয় ওঠার সময় রাস্তার ধারে রং বেরঙের ফুলের সারি মন ভালো করে দেয়। ইয়ুংথাঙের খুব কাছেই অবস্থিত সিকিমের জনপ্রিয় পর্যটনস্থল লাচুং।

রাওয়াংলা: মিয়ানাম এবং টেন্ডং পাহাড়ের মাঝখানে অবস্থিত সিকিমের ছোট্টো শহর রাওয়াংলা। এখানে অবস্থিত সিকিমের একমাত্র চা বাগান টেমি। টেমি গ্রামে অবস্থিত এই চা বাগানের চা স্বাদে গন্ধে অসাধারণ। এক চুমুকেই শরীর ও মন সতেজ হয়ে যায়। সিকিমের অন্যতম উল্লেখযোগ্য মঠগুলির মধ্যে রালং মনাস্ট্রি এই রাওয়াংলায় অবস্থিত। রাওয়াংলার অপূর্ব সুন্দর স্বর্ণ বুদ্ধের মূর্তি দেখলে তাক লেগে যায়। এই মূর্তি দর্শনের পর মনে প্রশান্তি জাগে।

ছাঙ্গু লেক: গ্যাংটক থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সোংমো বা ছাঙ্গু লেক। প্রায় সাড়ে ১২ হাজার ফিট উপরের এই লেকটি একবার চোখের দেখা না দেখলে মিস করবেন। এর সৌন্দর্য্য ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এখানে চমরীগাই বা ইয়াকের পিঠে চড়ে ঘুরতে পারবেন। সম্প্রতি সিকিমকে ভারতের সেরা শ্যুটিং স্পট বলে ঘোষণা করেছে কেন্দ্র সরকার। ছাঙ্গু লেকে গেলে তার কারণটা বুঝতে পারবেন। ছাঙ্গুল লেক যেন সিকিমের পবিত্রতার প্রতীক। কিংবদন্তি, অতীতে নাকি বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা ছাঙ্গু লেকের জলের রং দেখে ভবিষ্যৎবাণী করতেন।

বার্সে: পশ্চিম সিকিমের বার্সে স্থানটি ঝলমলে ও রঙিন রোডোডেনড্রন অভয়ারণ্যের জন্য বিখ্যাত। অভয়ারণ্যের ভিতর দিয়ে ট্রেক করতে করতে গুরাস কুঞ্জ ট্রেকার হাটে পর্যন্ত যেতে পারেন জঙ্গলের শোভা দেখতে দেখতে। ভাগ্য ভালো থাকলে অরণ্যের ভিতরে বিরল প্রজাতির রেড পান্ডার দেখা পেয়ে যেতে পারেন। সূর্যের আলো গায়ে মেখে দাঁড়িয়ে থাকা হাঁটের দৃশ্য যেন হাতে আঁকা ছবি। সেখান থেকে সিঙ্গলিলা পর্বতমালা দেখতে অসাধারণ সুন্দর।

গ্যালশিং: শব্দের অর্থ রাজার বাগান। সিকিমে গ্যালশিং অতীতে রবদেন্তসে রাজপ্রাসাদ সংলগ্ন বাগান ছিল বলে অনেকের বিশ্বার। উনবিংশ শতক পর্যন্ত রবদন্তসে ছিল সিকিমের রাজধানী। বর্তমানে এটি একটি শতাব্দী প্রাচীন বাজার। এখানেই আছে সিকিমের প্রাচীন বৌদ্ধ মঠ পেমায়াংসে। গ্যালশিং বাজারের ডান হাতের উল্টো দিকে অবস্থান করছে সিকিমের পবিত্র প্রাচীর মেনদং। এই প্রাচীর নির্মাণ করেছিলেন রাজা চোগ্যাল চাদোর নামগ্যাল। এছাড়াও ঘুরে আসতে পারেন সংলগ্ন খেচেপলারি হ্রদ।

কালুক: পশ্চিম সিকিমের কালুক হিমালয় পর্বতের কোলে অবস্থিত এক শান্ত এবং সুন্দর গ্রাম। পায়ে হেঁটে গ্রাম ঘোরা যায়। সংলগ্ন রিংচেনপোং-তে হেঁটে গেলে সাদা মেঘের দল আপনার শরীর ছুঁয়ে যাবে। অরণ্যের ভিতর দিয়ে মেঘের দলকে ভেসে বেড়াতে দেখবেন। গ্রামের এই অনন্য প্রাকৃতিক দৃশ্য মুগ্ধ করে প্রকৃতিপ্রেমীদের।