নিউজ ডেস্ক: শাশুড়ি-বৌমার বিবাদ খুব একটা নতুন বিষয় নয়। তবে, বৌমার নির্যাতনের বিরোধিতায় শাশুড়ির `ইনসাফ’ পাওয়া, এই ঘটনা বিরল। দীর্ঘদিন ধরে বৌমার অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে কোনও অহেতুক সিদ্ধান্ত না নিয়ে বা কোনও ধরণের অপরাধমূলক কাজ না করে সন্তান হারা মা বেছে নেন আদালতের পথ। বৌমার অত্যাচারের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন ওই বৃদ্ধা। যে মামলায় এক নজিরবিহীন রায়দান করেন বিচারপতি।
এই অনন্য ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকল কলকাতা হাইকোর্ট। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মেদিনীপুরের বৃদ্ধা দুর্গা বালা মণ্ডল (শাশুড়ি)। ছেলে ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। ২০১৪ সালে অকালে মারা যান দুর্গা বালা মণ্ডলের ছেলে। ছেলের মৃত্যুর তিন বছর পরে, ২০১৭ সালে তাঁর স্ত্রী পান মৃত স্বামীর চাকরি। তবে, সেই চাকরি পেয়ে বৃদ্ধ শাশুড়িকে দেখা তো দূর, তাঁর উপর চলতে থাকে অমানবিক অত্যাচার, বৃদ্ধার অভিযোগ ঠিক এমনটাই। শুধু অত্যাচারে থেমে ছিলেন না বৌমা। প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পর করেছিলেন দ্বিতীয় বিয়েও। কিন্তু তাঁর বেতনের কোনও অংশই প্রাক্তন স্বামীর পরিবারকে দিতেন না তিনি।
মেদিনীপুরের বৃদ্ধা দুর্গা বালা মণ্ডলকে এই মারণ যন্ত্রনা থেকে মুক্তি দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি নির্দেশ দেন, আগামী ৩০দিনের মধ্যে ৩ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা শাশুড়ির ( দুর্গা বালা মণ্ডল) হাতে তুলে দিতে হবে বৌমাকে। শুধু তাই নয় পরবর্তী দু’সপ্তাহের মধ্যে আরও ২১ হাজার টাকাও দিতে হবে ওই বৌমাকে।
এই সম্পূর্ণ মামলার রায় জানানোর সময় অভিযুক্ত ওই বৌমাকেও তীব্র ভর্ৎসনা করে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন,“আপনার মানসিকতা এরকম হলে ছাত্রদের কী শিক্ষা দেবেন আপনি? আমার হাতে ক্ষমতা থাকলে আপনার চাকরি আমি কেড়ে নিতাম।” এবং আগামী ১১ই জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন হিসাবে ঘোষণাও করেন বিচারপতি।