জিম্বাবোয়ে: ১৩০/৮
পাকিস্তান: ১২৯/৮
স্পোর্টস ডেস্ক: আবার শেষ বল। আবারও পাকিস্তান! এবং আবার হারতে হল পাক দলকে।
ভারতের কাছে তিনদিন আগেই শেষ ওভারের শেষ বলের টানটান উত্তেজনার ম্যাচে হেরেছিল পাকিস্তান। সুপার-১২’এর দ্বিতীয় ম্যাচেও সেই একই হল হল পাকিস্তানের। জিম্বাবোয়ের কাছে স্নায়ুর চাপ টপ গ্রিয়ারে তুলে ম্যাচের শেষ ওভারে হারল বাবর আজমরা । প্ৰথমে ব্যাট করে জিম্বাবোয়ে ১৩০ রান তুলেছিল। জবাবে পাকিস্তান নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১২৯ রান তুলতে পেরেছিল। এক রানে হারতে হল টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচটি।
এবারের টুর্নামেন্টে একের পর এক অঘটন ঘটে চলেছে। কোয়ালিফায়ার রাউন্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেমন আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরেছে, তেমনই আবার সুপার-১২ পর্বে আইরিশদের কাছে হার হজম করে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করতে হয়েছে ইংল্যান্ডকে। প্ৰথম ম্যাচেই নামিবিয়া হারিয়ে দিয়েছিল শ্রীলঙ্কাকে। এবার চতুর্থ অঘটন। অপটাস স্টেডিয়ামে বলা চলে – এক রুদ্ধশ্বাস থ্রিলারে জিম্বাবোয়ের কাছে হারতে হল পাকিস্তানকে।
পাকিস্তান এই দল কি বড্ড বেশি দুই ওপেনার বাবর আজম এবং মহম্মদ রিজওয়ানের ওপর নির্ভরশীল? জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে সেই অতি-নির্ভরতারই ভোগালো পাক দলকে। ১৩১ রান তাড়া করতে নেমে পাওয়ার প্লে-র মধ্যে দুই ওপেনার আউট হয়ে যেতেই চাপ বেড়ে যায় পাকিস্তানের উপর। সেই চাপ শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় পরাজয়ের স্বাদ দিল টুর্নামেন্টের অন্যতম ফ
সুনীল নারিনের বোলিং অ্যাকশন থেকে অনুপ্রাণিত সিকান্দার রাজা নিজের চার ওভারের স্পেল শেষ করলেন ২৫ রানের বিনিময়ে তিন উইকেট নিয়ে। ম্যাচের আসল নায়ক তিনিই। ম্যাচের সেরাও যথারীতি তিনিই হলেন। শেষদিকে মহম্মদ নওয়াজ এবং মহম্মদ ওয়াসিম পাকিস্তানকে প্রায় জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছিলেন। ৬ উইকেটে ৯৪ রান থেকে দুজনে ১২৮ রান পর্যন্ত টেনে নিয়ে যান।
ভারতের পর জিম্বাবোয়ে, এই পাকিস্তান দলের জোড়া হারে ট্র্যাজিক নায়ক হয়ে থাকলেন মহম্মদ নওয়াজ।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ১১ রান। প্ৰথম তিন বলেই ৮ রান তুলে নিশ্চিত জয়ের কাছাকাছি চলে গিয়েছিল পাক দল। চতুর্থ বলে রান তুলতে পারেনি পাকিস্তান। শেষ দু-বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৩ রান। সেইসময় ব্র্যাড ইভান্স মহম্মদ নওয়াজকে পঞ্চম বলে ফিরিয়ে দেওয়ায় ম্যাচ রুদ্ধশ্বাস মুহুর্ত পৌঁছে যায়। শেষ বলে তিন রান চাই। ভারত ম্যাচে ৪-৬ হাঁকিয়ে ছিলেন শাহিন আফ্রিদি। তিনি ক্রিজে। কিন্তু বিধি বাম।দৌড়ে দু-রান নেওয়ার চেষ্টায় রান আউট হয়ে যান আফ্রিদি। এক রানে হার মানতে বাধ্য হয় পাকিস্তান।
ম্যাচে নজর কেড়ে নিয়েছেন -বোলিংয়ে মহম্মদ ওয়াসিম। কেরিয়ারের সেরা বোলিং পাটফরম্যান্স দেখিয়েছেন। তিনি (৪/২৪) এবং শাদাব খান (৩/২৩) মিলে জিম্বাবোয়েকে ৮ উইকেটে ১৩০ রানে আটকে দেন। শুরুটা কিছু জিম্বাবোয়ে অবশ্য অন্যরকম ভাবে করেছিল। প্ৰথমে ব্যাট করতে নেমে দুই জিম্বাবোয়ের ওপেনার ক্রেগ আরভিন (১৯) এবং ওয়েসলি মডেভের (১৭) প্ৰথম পাঁচ ওভারেই ৪২ তুলে দিয়েছিলেন। সেই পার্টনারশিপ ভেঙে দেন হ্যারিস রউফ। শর্ট ফাইন লেগে মহম্মদ ওয়াসিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে জুটি ভাঙে।
প্ৰথম উইকেট চলে যাওয়ার দুই বল পরেই আউট হয়ে যান অপর ওপেনার মেডেভের। ওয়াসিমের বলে এলবিডব্লু আউট হন । মিল্টন শুম্বাও ব্যর্থ। শন উইলিয়ামস (৩১) এবং সিকান্দার রাজা (৯) চতুর্থ উইকেটে ৩১ রান যোগ করেন। এই জুটি ভেঙে দেন শাদাব খান। ১৪তম ওভারে শাদাব খানের দুটি ধাক্কার পর থেকেই জিম্বাবোয়ে বড় রান তোলার ছন্দ হারিয়ে ফেলে, শুরুটা ভাল করেও। পরের ওভারেই ওয়াসিম দুটি উইকেট নিয়ে জিম্বাবোয়েকে কোণঠাসা করে দেন । বোলারদের দুরন্ত পারফরমেন্স সত্ত্বেও স্রেফ ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় হার মানতে হল পাকিস্তানকে।
ছবি : সৌ টুইটার।
Leave a Reply