স্পোর্টস ডেস্ক: দুরারোগ্য রোগ কেড়ে নিল ফুটবল সম্রাট- `ও রেই’য়ের জীবন। রোগভোগকে আর ড্রিবল করে ফিরে আসা হল না অলটাইম ম্যাজিশিয়ানের। জেসাস ক্রাইস্ট, পেলে আর কোকা কোলা- এই তিন শব্দই হয়তো জনপ্রিয়তার নিরিখে সবচেয়ে এগিয়ে। জীবনে কত ম্যাচ জিতেছেন, কত হেরে যাওয়ার ম্যাচে শেষ সময়ে গোল করে ম্যাচের মোড় পাল্টে দিয়েছেন। কিন্তু ক্যানসারের সঙ্গে এই ‘ম্যাচে’ লড়াই করেও শেষ পর্যন্ত হার মানলেন ব্রাজিলের সর্বোচ্চ গোলদাতা, তিনবার বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলার, দ্য গ্রেটেস্ট অব অল টাইম, ব্ল্যাক ডায়মন্ড অব ফুটবল- অ্যাডসন আরান্টেস দো নাসিমেন্টো পেলে।
গত একমাস হাসপাতালেই ছিলেন তিনি। চলতি বছরের ২৯ নভেম্বর কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত পেলেকে ব্রাজিলের সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ব্রাজিলের স্থানীয় সময় বিকেল ৩.২৭ নাগাদ কিংবদন্তি ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারের মৃত্যুর খবর সরকারি ভাবে ঘোষণা করে দেওয়া হল।
১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর ব্রাজিলের মিনাস গ্যারিয়াস শহরে জন্ম পেলের। ফুটবলকে আঁকড়ে ধরে পথাচলা শুরু হয়েছিল ১১ বছরের একটি ছেলের। সেই তিনিই ১৫ বছর বয়সে সই করেছিলেন ব্রাজিলের বিখ্যাত স্যান্টোস এফসিতে। ১৬ বছর বয়সে ব্রাজিলের জাতীয় টিমে অভিষেক। বাকিটা ইতিহাস।পুরো বিশ্বের কাছে তিনি পেলে নামেই বেশি পরিচিত। ব্রাজিলের হয়ে জিতেছেন তিনটি বিশ্বকাপ । ১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৭০ সালের ফুটবল ইতিহাসটা তাঁর পায়ে আঁকা। ক্যারিয়ারে ১ হাজার ৩৬৬ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ১ হাজার ২৮৩টি। আর ব্রাজিলের হয়ে ৯২ ম্যাচে ৭৭টি গোলের রেকর্ড তাঁর। সারা শরীরে বিপক্ষ দলের ডিফেন্ডারদের দেওয়া অসংখ্য চোট-আঘাত যাঁকে দমাতে পারেনি, কিন্তু ক্যান্সারের কাছে তাঁর কৃষ্ণাঙ্গ, সুঠাম শরীরও মানল বশ।
পেলের প্রয়াণের পর তাঁর ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে বার্তাও ছুঁয়েছে বিশ্বের সকল ফুটবল বাসীদের। তাতে লেখা হয়েছে, `অনুপ্রেরণা আর ভালোবাসায় মোড়া ফুটবলযাত্রা ছিল সম্রাট পেলের। শান্তিতে যিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। নিজের যাত্রাপথে নিজের পায়ে ভরিয়ে দিয়েছিলেন ফুটবলকে। থামিয়ে দিয়েছিলেন যুদ্ধ। সামাজিক কাজ করে গিয়েছেন বিশ্ব জুড়ে। আর যে মন্ত্রে বিশ্বাস করতেন তিনি, সেই ভালোবাসাই ছড়িয়ে গিয়েছেন সারাবিশ্ব, জীবনভর। পরের প্রজন্মের কাছে ঐতিহ্য হয়ে থেকে যাবেন তিনি। ভালোবাসা, ভালোবাসা ও ভালোবাসা, নিয়েই সকলের মনে বেঁচে থাকবেন চিরকালের জন্য।’
Leave a Reply