ঘাটশিলা থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার, এই কালী কখনো কালি হাতে ফেরায় না ভক্তদের

জামশেদপুরের কাছেই জাদুগোড়ায় পাহাড়ের উপর অবস্থিত রঙ্কিনী মন্দির! শোনা যায়,  এখান থেকে কেউ কখনও খালি হাতে ফেরেনি। জামসেদপুর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ঘাটশিলা থেকে মন্দিরের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার।

শোনা যায় মা রঙ্কিণী এই অঞ্চলের বন-জঙ্গলে বাস করতেন। একবার এক স্থানীয় আদিবাসী একটি মেয়েকে দেখ ছিলেন রাক্ষস হত্যা করতে। সেই দৃশ্য দেখে তিনি মেয়েটির কাছে গেলে, মেয়েটি জঙ্গলে অদৃশ্য হয়ে যায়। সেই রাতেই দেবী রঙ্কিণী ওই ব্যক্তিকে স্বপ্নাদেশ দিয়ে দেবীর মন্দির তৈরি করতে বলেন। ঠিক কোন সময়ে মূল মন্দিরটি তৈরি হয়েছে জানা যায়নি। তবে মন্দিরের বর্তমান যে রূপ আমরা দেখতে পাই, তা তৈরি হয়েছে ১৯৫০ সালে।

কালীর এক অবতার মা রঙ্কিনী। প্রধানত পূর্ব ভারতের বিভিন্ন উপজাতি দ্বারা পূজিতা হন তিনি। শুধুমাত্র ভূমীজ উপজাতির মানুষই এই মন্দিরের পূজারী হতে পারেন। এখানকার সমস্ত মানুষ নিয়মিত এই মন্দিরে পূজা দিতে আসেন। সারা বছর ধরেই মন্দিরে ভক্তদের ভিড় লেগে থাকে। তবে বিভিন্ন উৎসব যেমন দুর্গাপূজো, কালীপূজোর সময়ে ভিড় প্রচণ্ড বেড়ে যায়।

মূল রাস্তার ওপর অবস্থিত এই মন্দির দক্ষিণ ভারতীয় রীতিতে তৈরি করা হয়েছে। রাস্তার একদিকে মন্দির এবং অন্যদিকে ভক্তদের মনস্কামনা জানানোর জন্য গাছ রয়েছে। সেই গাছে লাল কাপড়ে নারকেল বেঁধে ভক্তেরা মনস্কামনা জানিয়ে যায়। দক্ষিণ ভারতের মন্দিরগুলোর মতো এই মন্দিরেও লম্বা গোপুরম রয়েছে। গোপুরমে দেবী রঙ্কিণীর বিভিন্ন রূপ খোদাই করা আছে। মূল মন্দিরের প্রবেশদ্বারের ঠিক ওপরে দেবী দুর্গার মহিষাসুর বধের দৃশ্য খোদাই করা রয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য দেবতার মূর্তিও খোদাই করা রয়েছে।

মন্দিরের গায়ে খোদাই করা এই দৃশ্যগুলো ভালো লাগবে। প্রবেশদ্বারের কাছে রাস্তার ওপরে রয়েছে লোহার রেলিং, যার মধ্যে দিয়ে ভক্তেরা মূল মন্দিরে পূজার জন্য লাইন দেয়। মন্দিরের গর্ভগৃহে কোনো মূর্তি নেই। একটি পাথরকে দেবীরূপে পূজা করা হয়। হঠাৎ করেই গর্ভগৃহ থেকে পায়রাদের আচমকা আনাগোনা বেশ উপভোগ্য। মূল মন্দিরের দুই পাশে রয়েছে আরও দুটো মন্দির। ডানদিকে রয়েছে শিবমন্দির। এখানে শিবলিঙ্গ এবং নন্দীর মূর্তি রয়েছে। মূল মন্দিরের বাদিকের মন্দিরে রয়েছে গণেশের মূর্তি।