ইউ এন লাইভ নিউজ: যত দিন যাচ্ছে ক্রমশ জোড়ালো হচ্ছে আর জি কর কান্ডের প্রতিবাদ। দফায় দফায় রাস্তায় নামছে সাধারণ মানুষ শুধুমাত্র ন্যায়বিচারের জন্য। আর ঠিক তখনই দলের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্কীর্ণতা ছেড়ে মাঠ বড় করার বার্তা দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। শুক্রবার সিপিএমের রাজ্য দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে আরজি কর আন্দোলনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে গিয়েই অপর্ণা সেন, অঞ্জন দত্ত, অরিজিৎ সিংহ, সৃজিত মুখোপাধ্যায়েদের নাম উল্লেখ করে সেলিম বার্তা দেন, কোনও ভাবেই এঁদের কটাক্ষ করা যাবে না। বরং, তাঁরা যা বলছেন, তাকে স্বাগত এবং কুর্নিশ জানাতে হবে।
সেলিম বলেছেন, ‘‘বামপন্থী কর্মী-সমর্থকদের কাছে অনুরোধ করব, কে আগে কিছু কেন বলেননি, কেন এখন বলছেন, এই সব প্রশ্ন না তোলাই উচিত। অপর্ণা সেন, অঞ্জন দত্ত, সৃজিত প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। অরিজিৎ সিংহ গান বাঁধছেন। এই সব কিছুকে শুধু স্বাগত জানানো নয়, কুর্নিশ জানাতে হবে।’’
নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময়ে অপর্ণা ছিলেন সিপিএম তথা তৎকালীন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সরকারের তীব্র বিরোধী। উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারে আসার পর থেকে অপর্ণা সে ভাবে যে তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ অবস্থান নিয়ে চলেছেন তেমনটাও নয়। বরং অনেক সময়ে মমতা সরকারের বিভিন্ন কাজ নিয়ে প্রকাশ্যে তিনি সমালোচনাও করেছেন। সিপিএমের রাজ্য কমিটির এক সদস্যের মতে, ‘‘এই পরিস্থিতিতে পুরনো কাসুন্দি ঘেঁটে যদি আমরা অপর্ণাদের দূরে সরিয়ে রাখি, তা হলে ইতিহাস ক্ষমা করবে না।’’
সিপিএম সূত্রে খবর, গত ২৩ অগস্ট দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকেও অপর্ণাদের উদ্দেশে ‘চটিচাটা’ স্লোগান নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। সিপিএমের এক তরুণ নেতার কথায়, ‘‘পার্টির বোঝাপড়া পরিষ্কার। আরজি কর-কাণ্ডে সার্বিক ভাবে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, সেই পরিসরকে ছোট না করে আরও কী ভাবে বড় করা যায় সেই দিকে অগ্রসর হতে হবে। কিন্তু আমাদের অতি উৎসাহী কেউ কেউ বৃহত্তর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট না বুঝে আলটপকা কথা বলে ফেলছেন। তা এই সময়ে অনভিপ্রেত।’’
যদিও এর পাল্টা যুক্তি দিয়ে দলের এক যুবনেতা বলেছেন, ‘‘নন্দীগ্রামে আমাদের নেতার শহিদবেদির সামনে দাঁড়িয়ে অপর্ণারা কী বলেছিলেন সব মনে আছে। এত সহজে তো ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়।’’ যদিও সেলিম স্পষ্টতই বার্তা দিতে চেয়েছেন, সে সব ভাবার সময় এখন নয়। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য ঘরোয়া আলোচনায় বলেন, ‘‘নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময়ে বহু বামমনস্ক মানুষ এবং বামফ্রন্টের বাইরের বহু বাম দলকে তৃণমূল আপন করে নিয়েছিল। মানুষের ক্ষোভকে এক জায়গায় করেছিল। রাজনীতিতে কৌশল একটা বড় বিষয়। সেই সঙ্গে আরও বড় বিষয় হল সময় এবং পরিপার্শ্ব।’’
Leave a Reply