দীপঙ্কর গুহ:
তিন বছর আগে, ২০১৯ সালে ঘরের মাঠে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছিল ইংল্যান্ড। অল্প সময়ের ব্যবধানে কুড়ি ওভারের আরও একটি আইসিসি ট্রফি জিতল ব্রিটিশ দল। পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ বোলিং করে দলকে ট্রফি এনে দিতে বড় ভূমিকা নিলেন বাঁহাতি পেসার স্যাম কারান। ২৪ বছর বয়সী এই পেসারটি ফাইনালে ম্যাচের সেরা পুরষ্কারের পাশাপাশি পেয়েছেন টুর্নামেন্ট সেরার পুরষ্কারও।
বেন স্টোকসের ব্যাটে ভরসা করে ইংল্যান্ড জয় পেয়ে গেলেও আসল কাজটা করে দিয়েছিলেন কারান। মেলবোর্নে রবিবার পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারানোর পিছনে তাঁর পারফরম্যান্স ছিল নজর কেড়ে নেওয়ার মতো। পাকিস্তানকে মাত্র ১৩৭ রানে বেঁধে ফেলার কারিগর এই পেসার। ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে তুলে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট।
এমন বোলিংয়ের দাপটে স্টোকসকে টপকে ম্যাচ সেরার পুরষ্কারটি জিতে নিয়েছেন তিনিই। শুধু তাই নয় গোটা টুর্নামেন্টে ধারাবাহিক ভালো বল করে গেছেন তিনি। সব মিলিয়ে ৬ ম্যাচে ১৩টি উইকেট পেয়েছেন তিনি। ইংল্যান্ডকে চ্যাম্পিয়ন করার পেছনে বেশ বড় অবদান বাঁহাতি এই পেসারের। আর তাতেই টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কারও জিতেছেন তিনি।
আইসিসি প্লেয়ার অফ দ্য টুর্নামেন্ট নির্বাচন হয় ভোটের মাধ্যমে। এর জন্য ৯ জন খেলোয়াড়ের সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করেছিল আইসিসি। ক্রিকেটভক্তদের ভোট দেওয়ার সুযোগ ছিল। ইংল্যান্ডের তিনজন, ভারত ও পাকিস্তানের দুইজন করে এবং শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের একজন করে ক্রিকেটার সংক্ষিপ্ত তালিকা জায়গা পান।
ইংল্যান্ডের তিন ক্রিকেটার ছিলেন- জস বাটলার, অ্যালেক্স হেলস ও স্যাম কারান। ব্রিটিশ দলের অধিনায়ক ৬ ম্যাচে ২টি হাফ সেঞ্চুরি সমেত ২২৫ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকার চার নম্বরে ছিলেন। ভারতের বিপক্ষে দারুণ ব্যাটিং করে ম্যাচ জেতানো হেলস ২টি হাফ সেঞ্চুরি দিয়ে করেন ২১২ রান। ইংল্যান্ড পেসার স্যাম কারান ৬ ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকার দুই নম্বরে ছিলেন।
সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে যাওয়া ভারতের ব্যাটার বিরাট কোহলি টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রহ করেছেন। ৬ ম্যাচে ৪টি হাফসেঞ্চুরি নিয়ে তাঁর রান – ২৯৬। আরেক ভারতীয় ব্যাটার সূর্যকুমার যাদব ৩টি হাফসেঞ্চুরি নিয়ে করেছেন ২৩৯ রান।
পাকিস্তানের দুই বোলার শাহীন আফ্রিদি ও শাদাব খান প্রথম ৫ বোলারদের মধ্যে না থাকলেও টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার তালিকাতে ছিলেন। দুইজনই ৭ ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়েছেন। ফাইনালে আফ্রিদি ২.১ ওভার বোলিং করেই ইনজুরিতে আবার মাঠ ছাড়েন। এভাবে ছিটকে না গেলে হয়তো ম্যাচের গল্পটাই অন্য রকম হয়ে যেতে পারতো! এছাড়া শ্রীলঙ্কার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, জিম্বাবোয়ের অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজাও ছিলেন টুর্নামেন্ট সেরার তালিকাতে। ৮ ম্যাচে ১৫ উইকেট নিয়ে লঙ্কার এই স্পিনার তালিকার শীর্ষে ছিলেন। জিম্বাবোয়ের অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজাও টুর্নামেন্টে দারুণ দক্ষতা দেখিয়েছেন। ৮টি ম্যাচে ২১৯ রান করার পাশাপাশি নিয়েছিলেন ১০টি উইকেট।
বিরাট কোহলির সঙ্গে নিজের দলেরই জস বাটলারদের ছাপিয়ে ২৪ বছর বয়সী স্যাম টুর্নামেন্ট সেরার পুরষ্কারটি জিতেছেন। বছরের পর বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে বাবর আজম-মহম্মদ রিজওয়ানরা মত সিনিয়ররা যা পারেননি, তরুণ স্যাম কারান অল্প বয়সেই এমন সাফল্যে আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ পেলেন।
এতে অবশ্যই আই পি এলের মত মেগা হিট টি টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে তাঁর দর আরও বেড়ে গেলো। এখন তো টি টোয়েন্টি লিগ বিশ্বের আরও অনেক দেশে শুরু হয়ে গেছে, সেখানেও সকলের নজর থাকবে এখন স্যামের দিকে।
Leave a Reply