ওয়ার্ক প্লেসের স্ট্রেস কাটাতে এবার ‘রোবট’ মাউস

অহনা ঘোষ: জেট গতিতে ছুটছে জগত। সেইসঙ্গে ছুটছি আমরাও। কর্পোরেট অফিস, তথ্যপ্রযুক্তি, সংবাদ মাধ্যম সর্বত্রই রীতিমতো সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করার চাপ। শিডিউল মিস হলেই বসের বকুনি, ফসকে যাওয়া টার্গেট আর ইনসেনটিভ। পরিবার, প্রিয়জনের জন্য সময়ই নেই। কাজ চুরি করে নিচ্ছে সময়। কিন্তু কেমন হত, যদি আপনার রোজকার কাজের সময় শেষ হলেই কম্পিউটরের মাউসটাই আপনার হাত ফসকে নিজে নিজেই পালাত? কি, বিশ্বাস হচ্ছে নাতো?

স্যামসাং কোম্পানি নিয়ে আসছে এই রোবোটিক মাউস। কাজের জায়গার অতিরিক্ত চাপ কমাতে বাজারে আসছে এক অভিনব প্রযুক্তির রোবট মাউস। কি কাজ এই রোবোটিক মাউসের? এক কথায় এই মাউসটি আপনাকে করতে দেবে না অতিরিক্ত কাজ। সহজ করে বলা যাক এই মাউস তৈরির নেপথ্য কারণ।

আজকের কর্পোরেট দুনিয়ায় সবাই ছুটছে ডেডলাইনের পিছনে। নির্দিষ্ট থাকছে না ওয়ার্কিং আওয়ারস। কোনও দিন ৮ ঘন্টার জায়গায় ৯-১০ ঘন্টাও ডিউটি করতে হচ্ছে ওই ডেডলাইনের চাপেই। বিশেষ করে অফিস থেকে বেরোনোর সময় এই সমস্যায় ভোগেন বেশিরভাগ মানুষ। হাতের কাজ যেন শেষই হতে চায় না। অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে গিয়ে হারিয়ে যায় সময় জ্ঞান। এই অতিরিক্ত কাজের চাপে শরীরে দেখা যায় নানারকম সমস্যা। স্ট্রেস, ডিপ্রেশন তো আছেই, সঙ্গে মাথা ধরা, কাঁধে ব্যথাও জাঁকিয়ে বসে এসব কারণেই। স্যামসাংয়ের তৈরি এই ব্যালেন্সড মাউস বানানোর পিছনে মূল মন্ত্রই হল কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার উপায় খোঁজা।

আরও পড়ুন: সমুদ্র কি গ্রাস করে নেবে পৃথিবীকে, উদ্বিগ্ন বিজ্ঞানীরা

স্যামসাংয়ের প্রকাশ করা এই ব্যালেন্সড রোবোটিক মাউসের একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর এই মাউস ধরতে গেলেই মাউসটি হাত থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। সন্তর্পণে মাউসটি ধরে ফেললেও একেবারে টম অ্যান্ড জেরি কার্টুনের মত সেটি চোখ-কান খুলে খোলস ছেড়ে দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ, আজ আর কাজ নয়। আসলে এই মাউসের ভূমিকা অনেকটা একটি অ্যালার্মের মত। কাজের নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেই মাউসটি বন্ধ করে দেবে কাজ করা।আপনি চাইলেও আর পারবেন না কাজ চালিয়ে যেতে।

রোবোটিক মাউস সত্যি সত্যিই বাজারে এলে তা একটি যুগান্তকারী ব্যাপার হবে, সন্দেহ নেই। এতদিন মানুষ নিয়ন্ত্রণ করেছে মেশিনকে। এখন মেশিন নিয়ন্ত্রণ করবে মানুষকে। রোবোটিক মাউস কর্পোরেট কর্মীদের জন্য একটি সুসংবাদ হলেও, বাজারে তা আসার পর কতটা দেখা মিলবে এই মাউসের ব্যবহার? কর্মীরা অতিরিক্ত কাজ করলে আখেরে লাভবান হয় কোম্পানি। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে, কোম্পানি কর্তারা কতটা অনুমতি দেবে এই মাউস ব্যবহারের- এই প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়।

আরও পড়ুন: জালে নয়, আইনি জটে আটকে বাংলাদেশের ইলিশ, হতাশ বঙ্গবাসী