নিউজ ডেস্ক: দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় প্রতিদিনই নাটকীয় খুনের খবর পাওয়া যাচ্ছে। আফতাব কয়েকদিন আগে তার প্রেমিকাকে হত্যা করে, তাঁর দেহ ৩৫ টুকরো করে কেটেছিল। সেই ঘটনার রেশ রয়েছে এখনও। এরইমধ্যে আবারও নেটদুনিয়ায় প্রকাশ্যে এল আরেক চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা। মূল অভিযুক্তের নাম অভিজিৎ পতিদার। গলা কেটে খুন করেন এক যুবতীকে। তারপর কম্বলের তলা থেকে সেই গলাহীন দেহ বার করে দেখিয়ে, ভিডিও করে পোস্ট করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভিডিও দেখে নেটিজেনরা হতবাক হয়ে গিয়েছেন। ঘটনাটি মধ্যপ্রদেশের জবলপুরের। সেখানকার মেখলা রিসর্টে ঘটে গেছে এই নির্মম হত্যাকান্ড।
সূত্রের খবর, যাঁকে খুন করা হয়েছে, তিনি ছিলেন অভিজিতের প্রেমিকা। নাম শিল্পা জারিয়া। শিল্পার গলা কেটে তাঁকে খুন করেন অভিজিত। সেই ভিডিও পোস্ট করে সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘বিশ্বাসঘাতকতা বরদাস্ত নয়’। ভিডিওতে শিল্পার গলা কাটা দেহটিও কম্বলের তোলা থেকে বের করে দেখান অভিজিত। এখানেই থামেননি তিনি। এরপর আবার একটি ভিডিও তে বলেন, ‘বাবু, আমাদের আবার দেখা হবে স্বর্গে’। খুন করার পাশাপাশি নিজের বয়ানও ভিডিওর মাধ্যমেই দিয়ে যান অভিজিত। পুলিশকে দিয়ে যান ওপেন চ্যালেঞ্জ, ‘ক্ষমতা থাকলে আমাকে গ্রেপ্তার করুন’।
আরও পড়ুন: ঠান্ডা মাথার খুনি আফতাব, নারকো টেস্ট ও লাই ডিটেক্টর টেস্ট চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ দিল্লি পুলিশ
অপর একটি ভিডিওতে ফের নিজের পরিচয়ও দেন অভিজিত। তিনি বলেন, পাটনায় ব্যবসা করেন অভিজিত। তাঁর ব্যবসার সঙ্গী জিতেন্দ্র কুমার। জিতেন্দ্রর সঙ্গে শিল্পা প্রেম করতেন। অভিজিতের দাবি, শিল্পা ওই প্রেমের সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে জিতেন্দ্রর থেকে ১২ লক্ষ টাকা চুরি করে পালিয়ে এসেছিলেন জবলপুরে। এই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে, জিতেন্দ্র কুমারের নির্দেশেই, অভিজিত গলা কেটে জবলপুরের মেখলা রিসোর্টে খুন করেন শিল্পা জারিয়াকে।
প্রথমে নির্মম ভাবে খুন, তারপর খুনির ভিডিও পোস্ট করা, যাঁকে খুন করেছে, তাঁকেই সঙ্গে নিয়ে। এই অবাক করা ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই, স্থানীয় পুলিশ তৎপর হয়েছে পুরো ঘটনা তদন্তের জন্য। ইতিমধ্যেই সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, গত ৬ই নভেম্বর অভিজিত জবলপুরের মেখলা রিসর্টে একটি ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন। তার আগে অভিজিতের টানা এক মাসের স্থায়ী ঠিকানা ছিল জিতেন্দ্র কুমারের বাড়ি। হোটেলে ঘর ভাড়া নেওয়ার দিন রাতে সেখানে একাই ছিলেন অভিজিত। পরদিন বিকেলে এক মহিলা সেখানে আসেন। ওই মহিলা এবং অভিজিত, দুজনেই খাবারও অর্ডার দেন। ওইদিনই এক ঘন্টা পর, হোটেলের দরজা বন্ধ করে অভিজিত বেরিয়ে যান। ৮ই নভেম্বর ওই ঘরের দরজা ভেঙে শিল্পার গলাকাটা নিথর দেহ উদ্ধার করে জবলপুর পুলিশ।
আরও পড়ুন: রাজ্যের ইউনিভার্সিটিতে সরাসরি ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে গেস্ট টিচার নিয়োগ
ইতিমধ্যে পুলিশ জিতেন্দ্র কুমার এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ সুমিত প্যাটেলকে গ্রেফতার করেছে। মূল অভিযুক্তের খোঁজে গঠন করা হয়েছে চারটি দল। সেই দল ছড়িয়ে পড়েছে মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, এবং বিহারে। এরকম নারকীয় খুন সোশ্যাল মিডিয়ায় সচক্ষে দেখে থমকে গেছেন নেটিজেনরা। আফতাব- শ্রদ্ধার খবরের শিরোনাম এখনও রয়েছে। চলছে নানা তদন্ত। তারই মধ্যে সামনে এল আবার এক খুনের অবাক করা ঘটনা। এখনও অবধি এই ঘটনায় শিল্পার বাড়ির লোকের কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
Leave a Reply