ইউ এন লাইভ নিউজ: বারবার পিছিয়ে যাওয়ার পর অবশেষে মিলল সাফল্য। আইআইটি মাদ্রাসের পড়ুয়াদের স্টার্টআপ ‘অগ্নিকূল কসমস’-র তৈরি ‘অগ্নিবাণ’ রকেটটি উড়ে গেল মহাকাশে। এরই সঙ্গে এক অনন্য কীর্তি করে দেখাল ভারত। বিশ্বে এই প্রথম কোনও সিঙ্গল পিস থ্রিডি প্রিন্টেড ইঞ্জিনের সাহায্যে উড়ে গেল একটি আস্ত রকেট।
অগ্নিবাণ রকেটের সফল উৎক্ষেপণে নয়া ইতিহাস গড়ল ভারতবর্ষ। চেন্নাই ভিত্তিক স্টার্টআপ অগ্নিকূল কসমসের তৈরি অগ্নিবাণ প্রথমবার উড়ল আকাশে। এরই সঙ্গে মহাকাশ বিজ্ঞানে ভারত এক বিস্ময় স্থাপন করল। অগ্নিকূল স্টার্টআপের প্রতিষ্ঠাতা সিইও শ্রীনাথ রবিচন্দ্রন এই সাফল্যের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ইসরো প্রধান এস সোমনাথ-ও অগ্নিকূল টিমের প্রশংসা করেন। নিজের ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে ট্যুইট করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘অগ্নিকূল কসমস’ টিমকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি লেখেন, ”একটি অসাধারণ কীর্তি যা সমগ্র জাতিকে গর্বিত করবে! বিশ্বের প্রথম একক-পিস থ্রিডি প্রিন্টেড সেমি-ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন দ্বারা চালিত অগ্নিবাণ রকেটের সফল উৎক্ষেপণ ভারতের মহাকাশ সেক্টরের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ এবং আমাদের যুবশক্তির অসাধারণ দক্ষতার প্রমাণ।”
প্রাথমিকভাবে ২২ মার্চ মহাকাশে যাত্রা শুরুর কথা ছিল অগ্নিবাণের। তবে ২১ মার্চ অগ্নিকূল জানায়, সামান্য কিছু গোলযোগ দেখা দেওয়ায় সেই রকেটটি সময়মতো লঞ্চ করা যাবে না। এরপরে এপ্রিলেও দু বার এই রকেটের লঞ্চের দিনক্ষণ নির্ধারণ করে তা বাতিল করে দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত গত ২৮ মে সেই রকেট লঞ্চের জন্য নির্ধারণ করা হয়। সেদিন ভোরের সময় থেকে পিছিয়ে সকালের সময়ে লঞ্চ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে সেই নির্ধারিত সময়েরও মাত্র ৫ সেকেন্ড আগে লঞ্চ বাতিল করা হয়।
এই অগ্নিবাণ রকেটটিতে থ্রিডি প্রিন্ট করা ইঞ্জিন রয়েছে। সেই ইঞ্জিনের নাম রাখা হয়েছে ‘অগ্নিলেট’। পুরোপুরি দেশীয় প্রযুক্তিতে সেই থ্রিডি প্রিন্ট ইঞ্জিন তৈরি করা হয়েছে। এই ইঞ্জিনের নকশাও ভারতীয় ইঞ্জিনিয়াররা তৈরি করেছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, ‘অগ্নিবাণ’ ভারতের প্রথম সেমি-ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন পাওয়ার রকেট। এদিকে ক্রায়োজেনিকের তুলনায় সেমি-ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিনের অনেক সুবিধা থাকে বলা দাবি করা হয়। এটা অনেক বেশি জ্বালানি সঞ্চয় করে। এর ফলে প্রোজেক্টের মোট খরচ কমে। এদিকে এই ধরণের ইঞ্জিন অনেক বেশি সুরক্ষিত। পাশাপাশি এই ইঞ্জিনের ফলে মিশনে প্রয়োজনমতো দ্রুত পরিবর্তন করা যেতে পারে।
এদিকে অগ্নিকূলের কমার্শিয়াল লঞ্চের দক্ষতা পরীক্ষা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল এই ‘অগ্নিবাণ লঞ্চ’। এই অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকেই অগ্নিকূল বাণিজ্যিকভাবে রকেট পাঠাতে পারে মহাকাশে। অগ্নিকূলে ২০০ জন ইঞ্জিনিয়ার কাজ করেন। এই সংস্থাটিকে পরামর্শ দিচ্ছে ৪৫ জন ইসরোর প্রাক্তন বৈজ্ঞানিক। এর আগে ২০২২ সালে হায়দরাবাদ ভিত্তিক ‘স্কাইরুট অ্যারোস্পেস’ প্রথম বেসরকারি সংস্থা হিসেবে ভারত থেকে মহাকাশে রকেট পাঠিয়েছিল।
Leave a Reply