তারা মায়ের আবির্ভাব দিবস: খিচুড়ি থেকে মাছ-মাংস নিবেদন মহাভোগে

নিউজ ডেস্ক: আশ্বিনের শুক্ল চতুর্দশী। তারা মায়ের আবির্ভাব দিবস। এই দিনে মহাসমারোহে শক্তির আরাধনা করা হয় তারাপীঠে। মূল মন্দির থেকে বিরাম মঞ্চে বের করে এনে করা হয় মায়ের পুজো। তারা মায়ের আবির্ভাব দিবস উপলক্ষ্যে দূর-দূরান্ত থেকে মন্দিরে জড়ো হন ভক্তরা। উপচে পড়া ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে তৎপর থাকে পুলিশ-প্রশাসনও।

করোনার ধাক্কায় গত দু’বছর জাঁকজমকপূর্ণভাবে হয়নি তারা মায়ের আবির্ভাব দিবসের বিশেষ পুজো। তবে চলতি বছরে পুরোনো জৌলুস ফিরেছে তারাপীঠে। শুক্রবার থেকেই ভিড় জমিয়েছেন দর্শনার্থীরা। ভোর তিনটে নাগাদ মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে মায়ের মূর্তি বিরাম মঞ্চে আনা হয়েছে। স্নানপর্বের পর রাজ-রাজেশ্বরী সাজে সাজানো হয়েছে তারা মাকে।

তারা মায়ের মঙ্গল আরতির পর লুচি, মিষ্টি,ফল দিয়ে শীতল ভোগ নিবেদন করা হয়। রীতি অনুযায়ী আবির্ভাব দিবসে মায়ের মধ্যাহ্নভোগ নিবেদিত হয় না। দিনভর ফল-মিষ্টিই খেয়ে থাকেন মা। রাতে হয় মহাভোগ নিবেদন।খিচুড়ি থেকে মাছ-মাংস কিছুই বাকি থাকেনা মায়ের নৈশভোজে।

তবে মহাভোগের আগে, সন্ধ্যারতি শেষে মাকে গর্ভগৃহে নিয়ে যাওয়া হয়। ফের স্নান করিয়ে, নতুন করে সাজে সাজানো হয় মাকে। এরপরই খিচুড়ি, পোলাও, পাঁচ রকম ভাজা, মাছ, মাংস দিয়ে নিবেদন করা হয় মহাভোগ।মায়ের কাছে অন্নভোগ নিবেদন করার পরই সেবায়েতরা উপবাস ভাঙেন।

লোকমুখে প্রচলিত আছে, দ্বারকা নদী দিয়ে বাণিজ্য করতে যাওয়ার সময় বণিক জয় দত্ত একবার চন্ডীপুরে নোংর করেছিলেন। সেখানে বণিকের ছেলের সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়। এরপরই বণিকের ভৃত্যরা একটি কাটা শোল মাছ, পুকুরের জলে ধুতে গিয়ে দেখেন অলৌকিকভাবে মাছটি জীবিত হয়ে জলে চলে যায়। বিষয়টি বণিককে জানায় তাঁরা।

এরপরই মৃত ছেলেকে সেই পুকুরের জলে স্নান করান বণিক। তারপরই মৃত ছেলে ‘জয় তারা, জয় তারা’ ধ্বনি উচ্চারণ করে জীবিত হয়ে ওঠেন। এরপরই জয় দত্ত স্বপ্নাদেশ পেয়ে, আশ্বিন মাসের শুক্লা চতুর্দশীতেই শ্মশান থেকে তারা মায়ের মূর্তি এনে মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন। সারাবছর উত্তর মুখে মায়ের পুজো করা হলেও, আবির্ভাব দিবসে পশ্চিম মুখে পুজো করা হয়।

আরও পড়ুন: বিমান বাহিনী দিবসে মহিলা অগ্নিবীর নিয়োগের ঘোষণা আইএএফ প্রধানের