নিউজ ডেস্ক: তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে কংগ্রেস। একে একে ‘হাত’ সরিয়ে নিচ্ছেন নেতারা। বর্ষীয়ান নেতা গুলাম নবি আজাদের পর এবার তেলঙ্গনার নেতা। ‘রাহুল গান্ধী’ এবং ‘কংগ্রেস দলের বর্তমান পরিস্থিতি’- নিয়ে কটাক্ষ করে পদত্যাগ করলেন প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ এম এ খান (MA Khan)।
রাজ্যসভার প্রাক্তন এই সাংসদ কংগ্রেস ত্যাগের কারণ হিসাবে বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দিলাম। সিনিয়রদের সম্মান দিতে জানেন না রাহুল। রাহুল গান্ধী সভাপতি হিসাবে মনোনীত পর থেকেই দল ডুবতে শুরু করেছিল। তাঁর চিন্তাভাবনা আলাদা। কারও সঙ্গে তা মেলে না। তাঁর কার্যকলাপ কংগ্রেসকে আরও নীচে নামিয়ে দিয়েছে। ব্লক স্তর থেকে শুরু করে বুথ স্তর পর্যন্ত কোনও কংগ্রেস কর্মীর সঙ্গে রাহুল গান্ধীর নীতির তালমিল হয় না।’’
প্রসঙ্গত, সনিয়া গান্ধীকে লেখা পদত্যাগপত্রে আগাগোড়াই রাহুল গান্ধীর উপর ক্ষোভ উগরে ছিলেন গুলাম নবি আজাদ। ২০১৪ সালে কংগ্রেসের অধঃপতনের জন্যও রাহুলকেই দায়ী করেছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, “২০১৪ সালে কংগ্রেসের বিপর্যয়ই টার্নিং পয়েন্ট। এরপর থেকেই একের পর এক নির্বাচনে হারতে শুরু করে কংগ্রেস। এই দলটি এখন পয়েন্ট অফ নো রিটার্নে পৌঁছে গিয়েছে।”
আদাজের দল ছাড়ার সিদ্ধান্তের নিন্দা করতে গিয়ে কংগ্রেসের নেতা জয়রাম রমেশ টুইটে বলেন, ‘জিএনএ (গুলাম নবি আজাদ)-এর ডিএনএ-তে বদল ঘটে গিয়েছে। তিনি মোদীফায়েড (মোদীর অনুগত) হয়েছেন।’
কংগ্রেসের এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করে ফারুক আব্দুল্লাহ বলেন, আজাদ প্রকৃত দেশপ্রেমী, জাতীয়তাবাদী নেতা। তাঁর সংসদীয় জীবনের ভাল কাজের প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। শুধু এই কারণে তাঁকে মোদীর লোক বলাটা ঘোর অন্যায়। তিনি আরও বলেন,”রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্ঠ মহলেরই কেউ শুধুমাত্র তাঁকে ভুল পরামর্শই দিচ্ছে না, একইসঙ্গে কংগ্রেসকে ধ্বংস করে ফেলারও চেষ্টা করছে।”
আবার, মনীশ তিওয়ারি বলেন, দু’বছর আগে আমরা ২৩ জন কংগ্রেস নেতা সভাপতি সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলাম, কংগ্রেসের অবস্থা উদ্বেগজনক, যা বিবেচনা করা দরকার। বহু মানুষ ও পরিবার তাঁদের রক্ত দিয়ে লালন করেছে কংগ্রেসের বাগান। কিন্তু আজ কংগ্রেসের যা অবস্থা তাতে মনে হয় না যে এই দল দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিল।
আরও পড়ুন: পদ্ম কাঁটা এড়াতে বিধায়কদের লুকিয়ে ফেললেন হেমন্ত সোরেন
কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ নেতাদের যে গ্রুপ-২৩ তৈরি হয়েছে, মনীশ সেই গ্রূপের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা, তাই-ই শুধু নন, বাকিরা মুখ বন্ধ করে ফেললেও পাঞ্জাবের এই নেতা ধারাবাহিকভাবে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে সরব হয়ে থাকেন।
আজাদ দল ছাড়ার পর গান্ধী পরিবারের তরফে একজনও মুখ খোলেননি এখনও। সনিয়া, রাহুল, প্রিয়াঙ্কা, তিনজনই বিদেশে। সনিয়া স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিদেশে গিয়েছেন। মায়ের সঙ্গে গিয়েছেন রাহুল প্রিয়াঙ্কা।
আরও পড়ুন: “অপরিণত-অপরিপক্ক নেতা রাহুল”, কটাক্ষ করে ‘আজাদ’ হলেন গুলাম
অন্যদিকে, দলের সভাপতি নির্বাচন নিয়ে রবিবার বৈঠকে বসছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি (CWC)। বৈঠকে রাহুলকে ফের সভাপতি হওয়ার জন্য অনুরোধ করবেন গান্ধী পরিবার ঘনিষ্ঠরা। কিন্তু কংগ্রেসের এই পরিস্থিতিতে রাহুলের সভাপতি হওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে উঠছে প্রশ্ন। সেক্ষেত্রে অশোক গেহলটকেই সভাপতি পদের প্রার্থী হিসাবে বেছে নেওয়া হতে পারে। কিন্তু অপরদিকে, গেহলট (Ashok Gehlot) আবার শর্ত দিয়েছেন, তিনি দলের সভাপতি হলে শচীন পাইলটকে রাজস্থানের (sachin pilot) মুখ্যমন্ত্রী করা যাবে না।
Leave a Reply