ইউ এন লাইভ নিউজ: বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম হত্যার ঘটনায় বৃহস্পতিবার বনগাঁ থেকে জিহাদ হাওলাদার নামে এক কসাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে সিআইডি তাকে বারাসাত আদালতে পেশ করে। জিহাদ বারাসাত কোর্টে হাজির হলে সাংবাদিকরা তাকে ঘিরে ধরে, এবং একটাই প্রশ্ন চারিদিক থেকে উঠে আসে “কেন মারলে?” জিহাদের মুখ কাপড়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল। জিহাদ কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে পুলিশের গাড়ি থেকে নেমে সোজা আদালতে চলে যায়।
সিআইডি সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার গ্রেফতারের পর জিহাদকে ভাঙড়ের একটি স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, হত্যার পর আজিমের শরীরের বিভিন্ন অংশ সেখানে ফেলে দেওয়া হলেও রাতের আঁধারে কোনো দেহাংশ পাওয়া যায়নি। তাই শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ খুঁজে পেতে শুক্রবার জিহাদকে হেফাজতে চাইতে পারে সিআইডি। জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের উপর নির্ভর করে তদন্তকারীরা এখনও মৃত এমপির কোনো দেহাংশ খুঁজে পাননি। তাই ধৃত দের দেওয়া তথ্যের উপরেই ভিত্তি করে এগোতে হচ্ছে তদন্তকারীদের। তবে এক্ষেত্রে অভিযুক্তরা মিথ্যা তথ্য দিয়ে তদন্তে বিভ্রান্তি ঘটানোর চেষ্টা করছে কিনা তাও খতিয়ে দেখবে পুলিশ। ফলস্বরূপ, তারা সত্য উদঘাটনের জন্য জিহাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজত চাইতে পারে।
সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশি এমপি হানিট্র্যাপের শিকার হয়েছেন। শিলাস্তি রহমান নামে একজন মহিলাকে সামনে রেখে তাকে ফাঁসানোর জন্য নিউ টাউনের একটি অ্যাপার্টমেন্টে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, যেখানে তাকে পরবর্তীতে খুন করা হয়। জিহাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ, প্রমাণ নষ্ট করা, মিথ্যা তথ্য প্রদান, হত্যা এবং ষড়যন্ত্র।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশ এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। সেখানে আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে সিআইডির একটি দল বৃহস্পতিবার ঢাকায় যায়। সিআইডি জানতে পেরেছে, খুনের অন্তত দুই মাস আগে কসাই জিহাদকে মুম্বই থেকে কলকাতায় আনা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদে জিহাদ স্বীকার করে যে, আজিমকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়, পরে টুকরো টুকরো করা হয় দেহ। এরপর মাংস এবং হাড়গুলো আলাদা করা হয়, এবং চামড়া ছাড়িয়ে হলুদ মাখিয়ে রাখে অভিযুক্তেরা। কারণ বাইরের কেউ জিজ্ঞেস করলে যাতে বলা যায় রান্নার উদ্দেশ্যে মাংস নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরপর শরীরের বিভিন্ন অংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে এখনো পর্যন্ত জানা যাচ্ছে। তদন্তকারীরা এই জঘন্য অপরাধের সাথে আর কারা জড়িত ছিল এবং এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পিছনে কি উদ্দেশ্য ছিল তা খুঁজে বের করতেই জিহাদকে হেফাজতে নেওয়া হতে পারে।
Leave a Reply