Qatar World Cup 2022: মেসি-নেইমার- বেনজামারা খেলবেন পাকিস্তানের বানানো বলে

দীপঙ্কর গুহ:

বিশ্বকাপ ক্রিকেট ফাইনালে উঠে আলোচনায় ছিল পাকিস্তান ক্রিকেট দল। খেতাব জেতা হয়নি। রানার্স আপ হয়েছে। ক্রিকেট খেলা শেষ , শুরু হয়ে গেছে ফুটবলের তোড়জোড় । আর সেখানেও সেই আবার আলোচনায় পাকিস্তান! নাহ্ , পাকিস্তান এই ফুটবল বিশ্বকাপে খেলছে না। তবুও সারা টুর্নামেন্টে পাকিস্তান জড়িয়ে থাকছে। অংশগ্রহণকারী ৩২ দল। কাতারের সব স্টেডিয়ামে খেলতে শুরু করবে। স্টেডিয়াম তৈরির আগেই কাতার বিশ্বকাপের জন্য ফুটবল বানানো হয়ে গিয়েছিল। ৫ মাস আগেই বিশ্বকাপ ম্যাচের জন্য বলগুলো তৈরি করে ফেলেছিল আয়োজক দেশটি।

মার্চের শেষে এই বলের উন্মোচন করেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিওনেল মেসি ও দক্ষিণ কোরিয়ার তারকা ফরোয়ার্ড সন হিউং-মিন।এ বলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আল রিহলা’। এটি আরবি ভাষার শব্দ। যার অর্থ – ভ্রমণ বা যাত্রা।যে বল নিয়েই দীর্ঘ এক মাস হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করবেন ৩২ দলের সাড়ে তিনশ’র বেশি ফুটবলার। এই ‘আল রিহলা’র জানতে তো হবে? কৌতূহলী ফুটবলপ্রেমীরা সব জানতে চায়। কেমন মনের এই বল? এর গতি হবে কেমন? বলটা বানিয়েছে কোন দেশ? কোন কোম্পানির বল নিয়ে মেতে উঠবেন মেসি-নেইমাররা?

ফিফার দাবি, বর্তমানের গতি সর্বস্ব ফুটবলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সব দিক বিবেচনা করেই বানানো হয়েছে বলটি। এর গতি আগের সব বিশ্বকাপে ব্যবহার করা বলগুলোর চেয়ে বেশি। ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে এর আগে যত বল তৈরি হয়েছে, সব গুলির চেয়ে এটি বাতাসে বেশি গতিতে ছোটে।আর নিয়ম মেনে এর প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাডিডাস। কিন্তু সংস্থাটি বলটি তৈরি করিয়েছে পাকিস্তানে। বলগুলো তৈরি হয়েছে সেই দেশের পাঞ্জাব প্রদেশের অতি পরিচিত শহর শিয়ালকোটের একটি কারখানায়। সেখানে ফরওয়ার্ড স্পোর্টস নামের কোম্পানির কারখানায় তৈরি হয়েছে বল। প্রতি মাসে এই কোম্পানি ৭ লাখ ফুটবল বানায়।জানা গেছে, রাশিয়া বিশ্বকাপের ‘টেলস্টার ১৮’ বলও তৈরির স্বত্বও পেয়েছিল পাকিস্তানের এই প্রতিষ্ঠানটি।

‘আল রিহলা’ প্রসঙ্গে ফরওয়ার্ড স্পোর্টসের অন্যতম কর্ণধার হাসান মাসুদ পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, এবারের বিশ্বকাপের বলটি খুবই বেশি প্রতিক্রিয়াশীল এবং দ্রুতগামী। এই বলে ব্যবহৃত ২৫ শতাংশ উপাদান দারুন টেকসই। এবং রি-সাইকেল করা উপাদান দিয়ে তৈরি। কাতারে বিশ্বকাপে ৩০০০ ফুটবল ব্যবহার করা হবে, যার মূল্য ৮ মিলিয়ন ডলার ( যা ভারতীয় অর্থে প্রায় ৬৫ কোটি ৩ লাখ ৬৫ হাজার টাকা)। এক একটি বলের ওজন ৪২৫-৪৪৫ গ্রাম। এটি আকারে ৬৮.৮ সেমি থেকে ৬৯.৩ সেমি পর্যন্ত।

হাসান মাসুদ বলেছেন, আগের ঐতিহ্য মেনেই বিশ্বকাপের ফুটবল আগে হাতে সেলাই করা হত। তবে ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে থার্মোস বাইন্ডিংয়ের বল ব্যবহার করা হয়। এরপর রাশিয়া বিশ্বকাপেও একই ধরনের বল ব্যবহার করা হয়। এবারের বিশ্বকাপ বলগুলোও একইভাবে তৈরি। আর হাতে সেলাইয়ের চল নেই। যন্ত্র এসে গেছে যে।

‘আল রিহলা’র ব্যবহার করা হয়েছে সর্বোচ্চ প্রযুক্তি দিয়ে । বলটিতে থাকছে ‘সিআরটি কোর’ এবং স্পিডশেল। যা ভিএআরকে আরও আধুনিক করে তুলবে। এতে নির্ভুল ও দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বাড়তি সুবিধা পাবেন রেফারিরা। শিয়ালকোট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এসসিসিআই)- এর সিনিয়র সহসভাপতি শেখ জোহাইব রফিক শেঠি হালে বলেছিলেন , “আল রিহলা বলের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এটি পরিবেশবান্ধব একটি বল।এই বল বানাতে ব্যবহার করা হয়েছে সব জৈব ও পুনর্ব্যবহৃত উপাদান। এতে কোনও দ্রাবক রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়নি। বরং জল জাতীয় এমন বেশ কিছু রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছে, যা পরিবেশ দূষিত করবে না।

এই বল ইতিমধ্যে বিশ্বসেরা হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। বলের সেলাই নিখুঁত করতে গত বিশ্বকাপের টেকনোলজির সাহায্য নেওয়া হয়েছে। নানান পরীক্ষা করে দেখা গেছে, অন্যান্য বারের টুর্নামেন্টের বলগুলোর তুলনায় ‘আল রিহলা’ বাতাসে সবচেয়ে বেশি গতিতে ভেসে যাবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময়ে বলটি কব্জা করতে গিয়ে নাকি বেশ বেগ পেয়েছেন গোলকিপাররা। অনেকেই জানিয়েছিলেন, আঠালো কোনও আবরণের অস্তিত্ব অনুভূতি করেছিলেন। পাকিস্তানে তৈরি হলেও বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ কাতারের সংস্কৃতি, স্থাপত্য, প্রতীকী নৌকা ও তাদের পতাকার রংয়ের মিশেলে তৈরি করা হয়েছে ‘আল রিহলা’ নামের বলটি।

এই বল বানাতে ২০টি প্যানেলের ডিজাইন ব্যবহার করেছে অ্যাডিডাস। এগুলো সব ত্রিভুজাকৃতির, যা মধ্যপ্রাচ্যের ‘ধো’ নৌকার প্রতীক। প্যানেলের দুই দিক বিভিন্ন রংয়ের। যা কাতারের পতাকা ও আরবের ঐতিহ্যশালী সাদা পোশাককে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

About Dipankar Guha

Check Also

ranji trophy

Ranji Trophy: রঞ্জি ট্রফির বাংলা – কেরল ম‍্যাচ ড্র! ইশান পোড়েলের দুরন্ত বোলিং নিল ৬ উইকেট

ইউ এন লাইভ নিউজ: প্রত‍্যাশিত ভাবেই রঞ্জি ট্রফির বাংলা – কেরল ম‍্যাচ ড্র হয়ে গেল। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *