রাজ্যের নিম্নবর্গের মানুষ বিশেষ করে কৃষক সমাজ ও অন্যান্য গরিব ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষজন দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে কাজকর্ম করে দেশের অর্থনৈতিক হাল টিকিয়ে রাখে। আর সেই কারণেই তাদের এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিয়ে তাদের আর্থিক অবস্থার একটু হলেও উন্নতি ঘটানোর লক্ষ্যে আমাদের কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই নতুন নতুন প্রকল্প চালু করেছেন এবং সেই অনুযায়ী রাজ্য সরকার ও একের পর এক নতুন নতুন জনকল্যাণমুখী প্রকল্প শুরু করেছেন তারই মধ্যে আজকের এই নতুন প্রকল্পটি হল এক অভিনব প্রকল্প।
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকার বাংলার দরিদ্র কৃষক ও অন্যান্য নিম্ন ও দরিদ্র মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের সুবিধার জন্য ২০১৯ সাল থেকে নতুন এক প্রকল্প চালু করেছেন যার নাম হল “কৃষক বন্ধু”। এবার থেকে সকলেই এই প্রকল্পের সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, এই জনমুখী প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের প্রতিটি দরিদ্র কৃষককে রাজ্য সরকার প্রতি বছর ১০,০০০ টাকা করে অনুদান প্রদান করে। এই প্রকল্পের সঙ্গে হয়তো আমাদের রাজ্যের অনেক দরিদ্র শ্রেণীর কৃষকেরাই পরিচিত। তবে যারা এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পের বিষয়ে অবগত নন বা জানলেও সেভাবে বিশদে কিছু জানেন না তাদের জন্য আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনটি খুবই উপকারী হতে চলেছে। তাহলে চলুন এই “কৃষক বন্ধু” প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক।
• প্রকল্পের সুবিধা :-
এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলার দরিদ্র শ্রেণীর কৃষকদের যে যে সুবিধা গুলি দেওয়া হয় সেগুলি হল-
১) “কৃষক বন্ধু” প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের প্রতিটি ব্যক্তিকে প্রতি বছর ১০,০০০ টাকা করে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে অনুদান হিসেবে দেওয়া হয়।
২) এই প্রকল্পে আবেদন করার পরই আবেদনকারীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২,০০০ টাকা রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জমা করা হয়। যাতে আবেদনকারী এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেন যে তার করা আবেদন পত্রটি রাজ্য সরকার দ্বারা গৃহীত হয়েছে।
৩) এই প্রকল্পের আওতায় থাকা কোনো কৃষকের যদি মৃত্যু হয় তাহলে তার মৃত্যুর পর তার পরিবারকে এককালীন ২ লক্ষ টাকার বীমা প্রদান করা হয় রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।
৪) পশ্চিমবঙ্গের যে কোনো জায়গার দরিদ্র শ্রেণীর কৃষকরা এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
• শিক্ষাগত যোগ্যতা :-
“কৃষক বন্ধু” প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হলে যে যে যোগ্যতা গুলি থাকলে তবেই আবেদন করা যাবে সেগুলি হল –
১) আবেদনকারীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
২) এক্ষেত্রে আবেদনকারী বয়স ১৮-৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে
৩) আবেদনকারী নিজের নামে অবশ্যই একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
• আবেদন পদ্ধতি :-
প্রথমত আপনারা এই প্রকল্পের ফর্ম তুলে সেটি নির্ভুলভাবে ফিলাপ করে দুয়ারে সরকার প্রকল্পে জমা দেবেন। কোন পত্রের সঙ্গে প্রয়োজনীয় যে সমস্ত ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন সেগুলো জেরক্স করে সংযুক্ত করে দেবেন। পরে প্রকল্পে জমা দিলেই আপনার আবেদন পত্রটি সাবমিট হয়ে যাবে এবং আপনি টাকা পেয়ে যাবেন।
এছাড়াও আপনি যদি অন্যভাবে আবেদন করতে চান তার পদ্ধতিও নিচে দেওয়া হল –
এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য কৃষক বন্ধু প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://krishakbandhu.net অথবা অফিসিয়াল ই-মেইল আইডি krishak. bandhu@ingreens.com এর মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। তার জন্য যা যা করতে হবে সেগুলি হল-
১) প্রথমে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
২) তারপর সেখানে প্রয়োজন মতো তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
৩) রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে যাবতীয় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস স্ক্যান করে আপলোড করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই অ্যাপ্লিকেশান হয়ে যাবে।
অন্যদিকে ই-মেইল এর মাধ্যমে আবেদন করতে হলে-
১) প্রথমে অনলাইন থেকে এই প্রকল্পের আবেদন পত্রের PDF এর একটি প্রিন্ট আউট বের করে নিয়ে সেখানে প্রয়োজন মতো তথ্য দিয়ে পূরন করে ফেলতে হবে।
২) এরপর সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সহ এই পূরণ করা আবেদন পত্র একসঙ্গে করে একটি ফাইল তৈরি করে উপরিউক্ত ই-মেইল আইডির মাধ্যমে পাঠিয়ে দিতে পারলেই আবেদন প্রক্রিয়া শেষ।
• প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস :-
আবেদন করার সময় যে সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলি স্ক্যান করে বা ফাইল তৈরি করে জমা দিতে হবে সেগুলি হল –
১) আধার কার্ড।
২) ভোটার কার্ড।
৩) ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের প্রথম পাতা।
৪) জমির দলিল।
৫) রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ফটো।
• যোগ্য প্রার্থী বাছাই পদ্ধতি :-
আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর সমস্ত কিছু প্রমান পত্র খতিয়ে দেখে যারা যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন তাদেরকে এই প্রকল্পের অন্তর্গত যাবতীয় সুবিধা গুলি প্রদান করা হবে।
• আবেদনের সময়সীমা :-
ইতিমধ্যেই দুয়ারে সরকার প্রকল্প শুরু হয়েছে। তবে কোনো রকম শেষ সময় সীমা ধার্য্য করা হয়নি। অর্থাৎ আপনারা আপনাদের সুবিধা অনুযায়ী যেদিন খুশি আবেদন করতে পারবেন।
Leave a Reply