রাজ্য সরকারের তরফ থেকে দরিদ্র মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের জন্য চালু করা স্কলারশিপ গুলির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য স্কলারশিপটি হল “স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ”। যদিও এই স্কলারশিপ এই বছরই যে নতুন চালু হচ্ছে এমনটা নয়।
বেশ কয়েক বছর আগেই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই বিশেষ স্কলারশিপটি চালু করা হয়েছিল। সেই সময় থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত প্রতি বছরই মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর বহু দরিদ্র মেধাবী ছাত্র ছাত্রীরা এই স্কলারশিপের সুবিধা পেয়ে থাকে।
এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদন করলে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী মিলিয়ে দু’বছরে মোট ২৪,০০০ টাকা অনুদান দেওয়া হয়। তবে আমাদের রাজ্যে এখনও পর্যন্ত এমন অনেক দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্র ছাত্রীরা আছে যারা এই স্কলারশিপের আবেদন পদ্ধতির বিষয়ে সঠিকভাবে না জানার কারণে এই সুবিধা লাভ করতে পারে না।
আর সেই কারণেই আজ আমরা এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে “স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ” স্কিমের আবেদন পদ্ধতির বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করতে চলেছি।
আর ঠিকঠাক নিয়ম মেনে আবেদন পত্র জমা করলেই আবেদন করার কিছুদিনের মধ্যেই এই স্কলারশিপ স্কিমের মাধ্যমে দেওয়া টাকা প্রত্যেক আবেদনকারী পড়ুয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সরাসরি জমা করে দেওয়া হবে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে এই স্কলারশিপ স্কিমের বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ জেনে নেওয়া যাক।
“স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ” এর জন্য আবেদন করার নিয়মাবলী :-
এই স্কলারশিপের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ২৪,০০০ টাকা অনুদান পাওয়ার জন্য যেভাবে আবেদন করতে হবে তা হল –
১) এক্ষেত্রে প্রথমেই স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://svmcm.wbhed.gov.in এ প্রবেশ করতে হবে।
২) সেখানে যে হোম পেজ থাকবে সেখানে থাকা অপশন গুলির মধ্যে How To Apply বাটনে ক্লিক করতে হবে।
৩) এরপর যে নতুন পেজ খুলবে সেখানে নীচের দিকে একটি চেক বক্স দেখতে পাবেন সেখানে ক্লিক করে Proceed for Registration বাটনে ক্লিক করতে হবে।
৪) এরপর যে নতুন পেজটি খুলবে সেখানে একসাথে অনেকগুলি অপশন দেখতে পাবেন। সেখান থেকে DIRECTORATE OF SCHOOL EDUCATION (DSE) (Studying in Higher Secondary Schools) এই অপশনের অধীনে থাকা Apply for Fresh Application লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে।
৫) রেজিস্ট্রেশনের জন্য একটি ফর্ম আসবে। সেখানে অনেকগুলো অপশন দেখতে পাবেন। সেখান থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষার অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপর আপনি কত সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন, কোন বোর্ডের অধীনে পরীক্ষা দিয়েছেন, মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ডের রোল নম্বর, কত শতাংশ নম্বর পেয়েছেন সেগুলিকে সিলেক্ট করতে হবে।
৬) এরপর আপনি মাধ্যমিক পরীক্ষার পর বর্তমানে যে ধরনের লেখাপড়ার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন সেই বিষয়ে যাবতীয় তথ্য, আপনার নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, জেন্ডার, বয়স, একটি বৈধ ইমেল আইডি ও ফোন নাম্বার ইত্যাদি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন ফর্মটিকে ফিলাপ করে আপনার পছন্দ মত একটি পাসওয়ার্ড নির্বাচন করে কনফার্ম করে Registar বাটনে ক্লিক করতে হবে।
৭) এরপর আপনি যে মোবাইল নাম্বার টি দেবেন তাতে একটি OTP আসবে সেটিকে ভেরিফাই করতে হবে। OTP ভেরিফাই হয়ে গেলে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এবং আপনাকে একটি রেজিস্ট্রেশন আইডি দেওয়া হবে। এই রেজিস্ট্রেশন আইডি টি পরে প্রয়োজন হতে পারে তাই এটি মনে রাখবেন।
৮) এরপর হোম পেজে থাকা Applicant Login অপশনে ক্লিক করতে হবে। এবং Applicant ID, Password এবং Security Code দিয়ে Login করতে হবে।
৯) এরপর একটি নতুন পেজ খুলবে সেখানে বামদিকে থাকা Dashboard এর Edit Application লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে। এরপর যে পেজটি আসবে সেখানে নীচের দিকে যে সব প্রয়োজনীয় তথ্য গুলি আপলোড করতে বলা হবে সেগুলি আপলোড করে Save and Continue button এ ক্লিক করতে হবে।
১০) এরপর একটি অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনের ফর্ম আসবে সেখানে নির্দিষ্ট স্থান অনুযায়ী প্রয়োজন মতো তথ্য দিয়ে ফর্মটিকে ফিলাপ করে Save and Continue button এ ক্লিক করতে হবে।
১১) সবশেষে সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলি স্ক্যান করে আপলোড করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই অ্যাপ্লিকেশান হয়ে যাবে।
• শিক্ষাগত যোগ্যতা :-
এই স্কলারশিপের জন্য আবেদনকারী পড়ুয়ার যে সব যোগ্যতা গুলি থাকতে হবে সেগুলি হল –
১) আবেদনকারী পড়ুয়াকে অবশ্যই মাধ্যমিকে অন্তত পক্ষে ৬০ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে থাকতে হবে।
২) আবেদনকারীর পড়ুয়ার পরিবারের বার্ষিক আয় কম হতে হবে।
৩) আবেদনকারী পড়ুয়াকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
৪) আবেদনকারী পড়ুয়ার নিজের আধার কার্ড থাকতে হবে।
৫) আবেদনকারী পড়ুয়ার নিজের নামে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
• প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস :-
অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার সময় যে সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলি স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে সেগুলি হল –
১) মাধ্যমিকের মার্কসীট ও সার্টিফিকেট।
২) আধার কার্ড।
৩) ইনকাম সার্টিফিকেট।
৪) বর্তমানে আবেদনকারী যে ধরনের লেখাপড়ার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে তার ভর্তির রসিদ।
৫) ব্যাঙ্কের পাস বুকের প্রথম পাতা।
৬) এক কপি রঙ্গিন পাসপোর্ট সাইজের ফটো।
৭) আবেদনকারীর নিজের সিগনেচার।
• আবেদনের সময়সীমা :-
স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপের জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন পত্র জমা নেওয়া প্রতিবছর মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর শুরু হয়। সুতরাং এই বছরেও তাই হবে।
Leave a Reply