Deb and Kanchan Mullick

Kanchan Mullick:কল্যাণের ‘ব্রাত্য’, দেবের ‘আপন’

ইউ এন লাইভ নিউজ: কাঞ্চনের কাঁটা ঘায়ে মলম দেবের। মঙ্গলবার ঘাটালের কেশপুর বিধানসভার অন্তর্গত মোহনপুর, বড়বোরজ, ছোটবোরজ, তেঘারি, আনন্দপুর সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় রাজনৈতিক ও অভিনয় জগতের সহকর্মী কাঞ্চন মল্লিককে নিয়ে প্রচার সারেন অভিনেতা দেব। এভাবেই কাঞ্চনকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়ে দগদগে ঘা কে কিছুটা হলেও সারিয়ে তুললেন ঘাটালের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী।

সকালের চাঁদিফাটা রোদে দেবের সঙ্গে একসঙ্গে বেরিয়ে জনসংযোগ সারলেন কাঞ্চন।সকাল থেকে সন্ধ্যা পুরোটাই দেবের সঙ্গে প্রচুর জায়গায় জনসংযোগ করতে দেখা যায় তাঁদের। আর দুই অভিনেতাকে দেখতে মহিলাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। হাত মেলানো থেকে শুরু করে সেলফি তোলা, রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে যায় উপস্থিত জনতার মধ্যে। ভিড়ে সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় নিরাপত্তারক্ষীদের। দেবের প্রচারে অংশ নিয়ে এমন উষ্ণ ভালোবাসা – অভ্যর্থনা পেয়ে আপ্লুত কাঞ্চন। কাঞ্চন এদিন তাঁর ও দেবের প্রচারের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখেন, ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে সাংসদ হিসাবে দেবের হ্যাটট্রিক কামনা করি। অপরদিকে দেবও কাঞ্চনের সঙ্গে ছবি শেয়ার করেন। আর অন্যান্য ছবির ক্যাপশনের মতোই দেব তার চিরাচরিত ক্যাপশনে দেন ‘এমনি’। দেবের এই ছবি শেয়ারের মাধ্যমেই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে উচিত জবাব দিয়েছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে প্রচারে গিয়েছিলেন উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক। কিন্তু কাঞ্চন প্রচার গাড়িতে ওঠার পরেই পরিস্থিতি বদলে যায়। কাঞ্চন প্রচারে গেলে গ্রামের মহিলারা ‘রিয়্যাক্ট’ করছে, এই যুক্তি দেখিয়ে তাঁকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেন কল্যাণ। তৃণমূল প্রার্থীর সেই পদক্ষেপকে ঘিরে রীতিমতো তোলপাড় পড়ে যায় গোটা রাজ্য রাজনীতিতে। যদিও ঠিক কেন মহিলারা ‘রিয়্যাক্ট’ করছেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশায় ছিলেন কাঞ্চন নিজেও। তৃতীয়বার কাঞ্চন মল্লিকের শ্রীময়ী চট্টরাজকে বিয়ে করা নিয়ে কম চর্চা হয়নি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের ট্রোলের স্বীকার হতে হয়। তাঁদেরকে কুরুচিরকর ভাষায় আক্রমণও করা হয়। অনেকে অবশ্য তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তার এসবে মোটেই পাত্তা দেন নি। মূলত সেদিন কল্যাণের প্রচারে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় এই কারণের জন্যই বলে অনেকে মনে করছেন।

বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ কিছু না বললেও কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল, জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে কি এমন ব্যবহার আশা করা যায়? এ বিষয়ে কল্যাণ বাবুর বক্তব্য ছিল, “আমি সমষ্টিগত মানুষের জন্য। তাই সমষ্টিগত মানুষকে কষ্ট দিতে পারব না কোনও ব্যক্তি বিশেষের আনন্দ বা সুখের জন্য।”
এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে কাঞ্চন বলেন, ‘হাত বাড়ালেই বন্ধু, আমার বন্ধু, ভাই দেব, ওঁর ডাকে সাড়া দিয়ে আমি এসেছি, কে কী করল কিছু যায় আসে না।’ এখানে শেষ না করে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে কাঞ্চন বলেন, ‘কেশপুরে এসে ভালোই লাগছে, আমি বিধায়ক হয়েছিমাত্র একবার , দেব তিনবার লোকসভায় জিতেছে, দেব ভালো ছেলে, কাজের মানুষ। আপনারা জোড়াফুল চিহ্নে ভোট দিয়ে ওনাকে জয়ী করুন।”
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দীপক বলেন, ‘আমি গোটা ঘটনাটা টিভিতে দেখেছি। আমার মনে হয়েছে, পুরো বিষয়টা যেভাবে হয়েছে, ঠিক হয়নি। একজন প্রার্থীর নিশ্চয়ই অধিকার আছে তাঁর গাড়িতে কে থাকবেন আর কে থাকবে না, তা ঠিক করার। কারণ দিনের শেষে ভোটটাই আসল বিষয়। আমি মনে করি,কাঞ্চনদা আমার প্রচারে থাকলে, আমার ভোট বাড়বে।’’